ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মুদ্রাদোষ বৃত্তান্ত

কে এম এ রাকিব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ২১ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মুদ্রাদোষ  বৃত্তান্ত

|| কে এম এ রাকিব ||

সকল লোকের মাঝে বসে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা?
আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
                     [বোধ, জীবনানন্দ দাশ]
 

কথাবার্তায়  মার্কিন প্রেসিডেন্ট  রিচার্ড নিক্সন ‘ওয়েল’ বলতেন খুব বেশি। বারাক ওবামা কথার মধ্যে যেমন ‘লুক’ শব্দটা বেশি ব্যবহার করেন। কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক কালিকিঙ্কর বাবুর নাকি ‘রাস্টিকেট করে দোব’ বলার অভ্যাস ছিল খুব। কাউকে সত্যিই রাস্টিকেইট করেছিলেন কিনা লেখক আমাদের না জানালেও, কল্পনা করতে ভালো লাগে শিক্ষক ক্লাসে একটু পরপর ধমক দিয়ে বলছেন, ‘রাস্টিকেট করে দোব’।
ড. আনিসুজ্জামানের ‘আপনি’/‘আপনার’ শব্দ ব্যবহারের মুদ্রাদোষ বিদ্যমান। নরেন বিশ্বাস নাকি ‘অতএব’ শব্দটা বেশি বলতেন। এমন আমাদের সবারই বাচনিক জীবনে কোনো না কোনো শব্দের প্রতি বা শব্দগুচ্ছের প্রতি পক্ষপাত রয়েছে। দৈনন্দিন কথাবার্তায় অনেকের বাগবিন্যাসে কিছু কিছু শব্দ-প্রক্ষেপের অভ্যাস থাকে। সেই নির্দিষ্ট শব্দের বা শব্দগুচ্ছ ব্যবহারের মাত্রাটা খুব বেশি হলে বক্তা আরাম পেলেও শ্রোতার তাতে শান্তি হারাম হতে পারে। এগুলোকে বাংলায় ‘মুদ্রাদোষ’ বলে।

‘মুদ্রাদোষ’ শব্দটার দিকে নজর দেয়া যাক। কয়েন অর্থে মুদ্রা নয়। নাচের যে মুদ্রা,  মুদ্রার সেই অর্থটার সঙ্গেই মুদ্রাদোষ শব্দটা সম্পর্কিত। অর্থাৎ এখানে মুদ্রা মানে একটা প্যাটার্ন, ধরন, ধাঁচ, ঢং। ভাষাবিজ্ঞানীদের মতে, এইসব শব্দ বক্তাকে কথা বলার সময় অতিরিক্ত সময় সরবরাহ করে যদিও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার প্রায়শ শ্রোতাকে বিরক্ত করে। মুদ্রাদোষেরও রকমফের আছে। সৈয়দ মুজতবা আলীর মুদ্রাদোষ ছিল তর্জনীতে মাথার চুল পেঁচানো। এবং হাতে চাবির রিং থাকলে ‘কোথাও কেউ নেই’-এর বাকের ভাইয়ের মতো বনবন করে ঘোরানো। ডান পায়ের উরুতে প্রশান্ত ভঙ্গিতে ধীরে সুস্থে ডানহাত ঘষার অভ্যাস ছিল গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের। প্রমথ চৌধুরীর মুদ্রাদোষ ছিলো ‘বৌসেন তো?’ অর্থাৎ বুঝেছেন তো?। দৈহিক বা আঙ্গিক মুদ্রাদোষের মধ্যে শীর্ষস্থানের  অন্যতম দাবিদার তত্ত্ববিশ্বের এলভিস প্রিসলি-খ্যাত স্লোভেনিয়ান দার্শনিক স্লাভয় যিযেক। লেকচারের সময় যিযেকের সশব্দে নাক টানা আর বারবার টিশার্টের বুকের কাছটা টেনে ছেড়ে দেয়ার দৃশ্য যারা দেখেছেন তারাই বুঝবেন।

কেউ কেউ  আছেন যাদের কথার মধ্যে হাত-পা ছোঁড়ার অভ্যাস। ক্লিনিকে রোগীর পাশে বসে  বলছেন, ‘তিনদিন, মাত্র তিনদিন- ওনলি থ্রি ডেজ। ইউ উইল কাম রাউন্ড।’ ওদিকে বক্তার কনুইয়ের ধাক্কায় টেবিলের গ্লাস পড়ে খান খান। ওষুধের গোসল। প্রেসক্রিপশন পানিতে হাবুডুবু। কারও আবার পা নাচানো ছাড়া চলে না। কোথাও বসলেন। অটোমেটিক পা নাচাতে শুরু করলেন। আশেপাশে থাকলে মনে হবে যেন এক মূর্তিমান ভাইব্রেশন। বর্তমান লেখা অবশ্য এদের নিয়ে নয়। এই রচনায় কেবল বাচনিক মুদ্রাদোষগুলো নিয়েই কথা হবে।

 

২.
প্রখ্যাত সাহিত্যিকদেরও কিছু শব্দ ব্যবহারের প্রতি ঝোঁক দেখা যায়। জীবনানন্দ দাশের প্রিয় শব্দগুলোর মধ্যে ‘ঢের’, ‘নক্ষত্র’, (এবং সবচেয়ে বেশি) ‘তবু’ ইত্যাদির কথা মনে আসবে। কবি শামসুর রাহমান ‘বেবাক’, ‘বুনো’, ‘উদ্দাম’, বেশি ব্যবহার করেছেন।  বাংলাসাহিত্য নয় শুধু, বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের একজন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখায় ‘আবেষ্টনী’ শব্দটা বেশি এসেছে। এগুলোকে মুদ্রাদোষ বলা যায় না। কারণ এগুলো সহনীয় মাত্রাকে কখনোই অতিক্রম করেনি। যদি কোনো সাহিত্যিকের অতিক্রম করে থাকে, তবে বলতে হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাইনারি অপজিশন ব্যবহার। যদি দেখেন আলো, নিশ্চিত থাকুন আশেপাশেই কোথাও অন্ধকার আছে। এমনভাবে দিবা-রাতি, ভালো-মন্দ, মুক্ত-বন্ধ, শুরু-শেষ/ সারা ইত্যাদির তালিকাটা বেশ বড়।

‘ভাষার মুদ্রাদোষ ও বিকার’ রচনায়, রাজশেখর বসু, মুদ্রাদোষ বলে বাঙালির ভাষাগত আড়ম্বর, অধিক উচ্ছ্বাস কিংবা অদরকারী শব্দদ্বৈত বা দ্বিরুক্ত (যেমন, মণি-মুক্তা, ক্ষয়-ক্ষতি ইত্যাদি) ব্যবহার করাকেও চিহ্নিত করেছেন। (রাজশেখর বসুর সাথে আমি দ্বিরুক্ত শব্দের ব্যাপারে একমত নই। দ্বিরুক্ত শব্দ বাংলা ভাষার অনন্য সম্পদ। বাংলায় সুক্ষ্ম ও বিচিত্র নানা ধরনের আবেগ অনুভূতি ব্যঞ্জনা প্রকাশে দ্বিরুক্ত শব্দের বিকল্প নেই।) লেখকদের এরকম প্রবণতা বিষয়ে তিনি লেখেন, অনেক লেখকের শব্দ বিশেষের উপর ঝোঁক দেখা যায়, তাঁরা তাঁদের প্রিয় শব্দ বারবার ব্যবহার করেন। একজন গল্পকারের লেখায় চার পৃষ্ঠায় পঁচিশ বার ‘রীতিমত’ পেয়েছি। অনেকে বারবার ‘বৈকি’ লিখতে ভালোবাসেন।  কেউ কেউ প্যারাগ্রাফের আরম্ভে ‘হা’ বসান। আধুনিক লেখকরা ‘যুবক-যুবতী’ বর্জন করেছেন, ‘তরুণ তরুণী’ লেখেন। বোধ হয় এঁরা মনে করেন এতে কম দেখায় এবং লালিত্য বাড়ে। অনেকে দাড়ির বদলে অকারণে বিস্ময়চিহ্ন (!) দেন। অনেকে দেদার বিন্দু (...) দিয়ে লেখা ফাঁপিয়ে তোলেন। অনাবশ্যক হস-চিহ্ন দিয়ে লেখা কণ্টকিত করা বহু লেখকের মুদ্রাদোষ। ভেজিটেবল ঘি-এর বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যে খাবার তৈরির বিধি দেওয়া থাকে তাতে দেখেছি-  ‘তিন্‌টি  ডিম্‌ ভেঙ্গে নিন্‌, তাতে এক্‌টু নুন্‌ দিন্‌

মুদ্রাদোষ সবারই কম বেশি আছে। এই কথা বলেন ভাষাবিজ্ঞানীরা। কারো বেশি দৃষ্টিগোচর হয়, কারো সেভাবে হয় না। জনসম্মুখে যাদের বলতে হয় তাদেরটা বেশি লাগে কানে। শিক্ষকদের কথা বেশি বলতে হয় পেশাগত কারণে। সেকারণে তাদেরটা আমাদের কানে বেশি লাগে। তাই মুদ্রাদোষের  কথা বলতে গিয়ে আমার মনে পড়ে যায় বিভিন্ন শিক্ষকের কথা। এইসব শিক্ষকেরা ক্লাসে জ্ঞানদানের পাশাপাশি কখনো বিনোদনেরও যোগান দিয়ে  থাকেন। হাসান আজিজুল হকের শিক্ষক কালিকিঙ্কর বাবুর কথা আগেই বলেছি। সেন্ট যোসেফের  পদার্থবিজ্ঞানের  শিক্ষক শ্রদ্ধেয়  সুদেব পালকে এই মুহূর্তে মনে পড়ছে। তিনি ‘মাল’ শব্দটা বেশি ব্যবহার করতেন। ল্যাবে ছাত্রদের উদ্দেশে বলতেন, ছেলেরা সাবধানে মাল (এপারেটাস অর্থে) ব্যবহার করো, ভেঙে গেলে জরিমানা দিতে হবে। কিংবা ইংরেজদের বিরুদ্ধে টিপু সুলতান যে লড়াই করেছেন সেজন্য বুকে মালের (সাহস অর্থে?) দরকার হয়... ।

মনে পড়ছে আমার স্কুলশিক্ষক মনিরুজ্জামানকে। রসায়ন পড়াতেন। কথা বলার সময় প্রতিটি বাক্য শেষে  মুখটা গম্ভীর করে, পুরু ঠোঁট দুটি ফুলিয়ে অন্তত ৩-৪ সেকেন্ডের বিরতি নিতেন। প্রায়ই যে কথাগুলো ক্লাসে আমরা শুনতাম: ‘সায়েন্স মানে সাধনা (৩-৪ সে. বিরতি)। স্কুলে আসতে হলে পড়াশোনা করে আসতে হবে (৩-৪ সে. বি.)। মনে মনে সন্দেশ খেলে চলবে না।’ আমরা ছাত্ররা কিন্তু মনে মনে সন্দেশ খেতে খেতেই কথাগুলো শুনতাম।

আমার এক শিক্ষক ক্লাসে হয়ত ‘আরকি’ শব্দটা অকারণে ব্যবহার করেন। আরেকজন ‘এনি কোয়েশ্চেন?’ এত ঘন ঘন বলেন যে ক্লাসে শিক্ষার্থীরা বাজি ধরে, আর সর্বনিম্ন কত মিনিটের মধ্যে তিনি পরবর্তী ‘এনি কোয়েশ্চেন?’ বলবেন। বর্তমান রচনা পড়তে পড়তে, প্রিয় পাঠক আপনাকে সুপাঠক অর্থাৎ সক্রিয় পাঠক ধরে নিচ্ছি- এই লেখায় মুদ্রাদোষ আছে কিনা দেখেন। আশ্বস্ত করতে পারি, লেখাটাকে মুদ্রাদোষমুক্ত রাখতে স্পেশাল কোনো চেষ্টা নেইনি। নির্দিষ্ট কোনো অভিব্যক্তির অতি-উপস্থিতিতে মোটেই অবাক হবেন না।

 

৩.
মুদ্রাদোষ বিষয়ে বাংলায় লেখাপত্র:
বাংলায় মুদ্রাদোষ বা ফিলার নিয়ে কোনো লেখকের বা ভাষাবিদের আগ্রহ লিখিতভাবে সেভাবে চোখে পড়েনি। কোনো ভাষা গবেষকের কাজের সন্ধান বেশ কিছুদিন খুঁজেও পাইনি। তাছাড়া বাজারচলতি বইয়ের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো বই বাংলাদেশে এমনিতেই পাওয়া দুষ্কর। অবশ্য এমনও হতে পারে এই বিষয়ে  কোনো লেখা আমার চোখ এড়িয়ে গেছে।  সেক্ষেত্রে প্রিয় পাঠক আপনার জানা থাকলে অবশ্যই আমাকে জানান। যে কোনো বিষয়ে লেখার আগে সেই বিষয়ে আগে কী লেখা হয়েছে আমি সাধারণত খোঁজার চেষ্টা করি। মুদ্রাদোষ বিষয়ে একই কাজ করলাম। ইন্টারনেটে বাংলায় মুদ্রাদোষ লিখে সার্চ দিয়ে যে সমস্ত লেখা পেলাম তার মধ্যে এই বিষয়ে বেশিরভাগ লেখাই (যা অন্তত এক দুই পৃষ্ঠা দীর্ঘ) বিনয় ঘোষের ‘কালপেঁচার নকশা’ গ্রন্থের অন্তর্গত ‘মুদ্রাদোষ হইতে সাবধান’ লেখা থেকে প্রায় কপি পেস্ট করা বলা যায়। কেউ কেউ বিনয় ঘোষ থেকে হুবহু বহু লাইন তুলে দিয়েছেন। কেউ বা কিছু কিছু নিজে এদিক-ওদিক করেছেন। মজার বিষয় একজনও বিনয়ের নামটাও উল্লেখ করেননি। অথচ জাতি হিসেবে বাঙালি কিন্তু উদ্ধৃতিপ্রিয়। বিদেশি হলে তো কথাই নেই, তোফা।  এমনকি দেশি কাল্ট যেমন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, প্রভৃতি থেকে উদ্ধৃত করাটা বেশ সম্ভ্রমের ব্যাপার, প্রাসঙ্গিক হোক বা না হোক।

একটা কারণ হতে পারে দেশি লেখক থেকে উদ্ধৃতি দিলে ক্রেডিট নাই এরকম ভাবনা, তাছাড়া উনি তো কাল্ট ফিগার কেউ না। তাই চেপে যাওয়া ভালো। নিজের মৌলিক চিন্তা জাহির হয় তাতে! খাসা চিন্তাবস্তু। বিনয় ঘোষ সম্ভবত একমাত্র না হলেও প্রধান লেখক যিনি মুদ্রাদোষ নিয়ে একটা রচনা লিখেছিলেন। তাও ‘কালপেঁচার নকশা’ নামক রম্য রচনাগুলোর একটিতে। এছাড়া বহুভাষাবিদ পণ্ডিত জ্যোতিভূষণ চাকীও হালকা চলে খুব সংক্ষিপ্ত (দেড় পৃষ্ঠার) একটা লেখা লিখেছিলেন। চলন্তিকা-খ্যাত পরশুরাম বা রাজশেখর বসুর ১৯৫০ সালে লিখিত একটা নিবন্ধের সন্ধান পাওয়া যায়, যার নাম  ‘ভাষার মুদ্রাদোষ ও বিকার’। এখন পর্যন্ত  সিরিয়াস ভঙ্গিতে এ বিষয়ে একমাত্র লেখাটি লিখেছেন পবিত্র সরকার। তার লেখাটিও শুধু বাচনিক মুদ্রাদোষ নিয়ে নয়। এছাড়া সাহিত্যিকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত হলেও সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্মে ও ডায়েরিতে এ বিষয়ে তার কিছুটা হলেও সচেতনতা চোখে পড়ে। মনোজ মিত্রের নাটকে বহু চরিত্রের কথার মুদ্রাদোষ নাট্যকার খুব স্বার্থকভাবে ব্যবহার করেন। যেমন সাজানো বাগান-এ ‘লুজ ক্যারেক্টার’ বা গল্প হেকিম সাহেব-এ ‘প্রশ্নই ওঠে না’। হুমায়ূন আহমেদ কিছু চরিত্রকে মুদ্রাদোষযুক্ত করে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি করেছেন। বিশেষত একই শব্দ বা শব্দগুচ্ছের পুনরাবৃত্তি এনে তিনি প্রায়শ হাস্যরসের সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র সরকার ‘মানে, মানে ... ইয়ে’ ইত্যাদি কথায় বাধাবিঘ্ন- নামক এক লেখায় ভাষার অন্যান্য বাধাবিঘ্নের মধ্যে মুদ্রাদোষের জন্য কিছু জায়গা রেখেছেন। এবং একমাত্র পবিত্র সরকারের লেখাটির ভঙ্গিই সিরিয়াস। বাকিরা বিনোদনধর্মীতার দিকে বেশি ঝুঁকেছেন।

 

৪.
প্রিয় পাঠক আসুন এই বিষয়ে একটুখানি ইতিহাস দেখা যাক। মানুষের  ভাষা ব্যবহারের মধ্যে ‘গোলমাল’, ‘অসংগতি’ ইত্যাদির প্রতি বিজ্ঞানীদের মনোযোগ খুব নতুন ঘটনা নয়। সেই ১৯৩০ সালে বেল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা প্রায় ১৯০০ ফোন কলের রেকর্ড বিশ্লেষণ করে দেখতে চেয়েছিলেন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের লোকজন কীভাবে যোগাযোগ করে। এবং সেটাকে আরও কীভাবে কার্যকরী বানানো  যায়। দেখা যাচ্ছে গবেষণাটা বাণিজ্যঘটিত ছিল। এখনও অধিকাংশ গবেষণা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই পরিচালিত হয়। সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। তারা অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছিল রেকর্ডের প্রায় ২৫ শতাংশই ছিল অসম্পূর্ণ বাক্য ও শব্দ। ১০ শতাংশ বিস্ময়সূচক।  সবচেয়ে যেটা বিস্ময়কর লেগেছিল বেল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীদের কাছে তা হলো, মোট শব্দের মধ্যে শুধু uh শব্দটাই ছিল ৪ শতাংশ।

আরও বছর পঁচিশ পরে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী জর্জ মাল (George Mahl)  ভাষাগত ত্রুটি বিচ্যুতি-যার মধ্যে আমাদের আলোচ্য মুদ্রাদোষও পড়ে, নিয়ে বিশদ কাজ করেন। তিনি এগুলোর নাম দিয়েছিলেন- স্পিচ ডিস্টারব্যান্স বা ভাষিক গোলযোগ। ভাষিক গোলযোগকে  তিনি আটটি শ্রেণিতে বিন্যস্ত করেন। জনাব মাল দেখেন সেই ভাষিক গোলযোগ-এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ( প্রায় ৪০ শতাংশ) পাওয়া গেছে ফিলার। ফিলার হলো সেই শব্দ বা শব্দসমূহ যেগুলো কথার মাঝখানের বেমক্কা নীরবতার পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়ে বক্তাকে চিন্তাভাবনা করতে সময় সরবরাহ করে। বাংলায় ‘ইয়ে’, ‘হচ্ছে’ ইত্যাদি শব্দকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফিলার হিসাবে কাজ করে। মাল সাহেবের গবেষণায় সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছিল uh আর um ফিলার দুটিকে।

ভাষিক গোলযোগের শুরুর দিকের গবেষণায় মাল সাহেবের গুরুত্বপূর্ণ ফাইন্ডিং ছিল- যা প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বিপরীত uh আর um বেশি উচ্চারণকারীরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বা নার্ভাসনেস থেকে ধ্বণি দুটি উচ্চারণ করেন না। অন্যকথায় uh আর um উচ্চারণের হার বক্তার দুশ্চিন্তা বা নার্ভাসনেসের সাথে কোরিলেট করে না। পরবর্তী সময়ে মনোবিজ্ঞানী জেমস পেনবেকার (Secret life of pronouns নামের চমকপ্রদ কিন্তু অসাধারণ বইয়ের  রচয়িতা) ও মেল-এর গবেষণাতেও একই ধরনের ফলাফল পাওয়া যায়। মনোবিজ্ঞানী জেমস পেনবেকার ও তার সহগবেষকেরা দাবি করেছেন, যাদের ভাষা ব্যবহার এরকম বিঘ্নসংবলিত তাদের বুদ্ধিমত্তা সাবলীলদের চেয়ে বেশি। এবং তারা প্রায়শ চিন্তাশীল হয়ে থাকে। যদিও প্রচলিত ধারণা হলো যারা খুব চটপটে, এক্সট্রোভার্ট, স্বতঃস্ফূর্ত তারাই বেশি বুদ্ধিধারী।

মাল সাহেবের গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছিল, সবচেয়ে মজাদার ভাষিক গোলযোগ অর্থাৎ স্লিপ অফ টাং-তার উপস্থিতি ‘গোলযোগ’-এর মাত্র ১ শতাংশ। অর্থাৎ স্লিপ অফ টাং বেশ বিরল প্রজাতির জিনিস দেখা যাচ্ছে। সাহিত্যে কিন্তু স্লিপ অফ টাং এর সমৃদ্ধ নজির রয়েছে। একদম সেই দনকিহোতের সাঞ্চো পানজার থেকে শুরু করে। এ বিষয়ে ফ্রয়েড ও মেরিঞ্জার অনেক সময় ব্যয় করেছেন। ফ্রয়েডিয়ান স্লিপ নামে তো একটা কথাই দাঁড়িয়ে গেছে। পাঠক আপনি স্লিপ অফ টাং নিশ্চয়ই চিনেন। না চিনলে মনে করুন আমাদের সেই নেতার কথা যিনি বলেছিলেন, এই দুর্নীতিবাজকে অবিলম্বে মন্ত্রীর পদ থেকে ‘অপারেশন’ করতে হবে (তিনি ‘অপসারণ’ বলতে চেয়েছিলেন)।  আরেক ব্যক্তির বক্তব্য ‘সবচেয়ে টেস্টি আইটেম ছিল পর্ণ সুপটা’ (ইংরেজি শব্দ prawn উচ্চারণ বিভ্রাটে porn হয়ে গেছে)। একদা এক মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাউন্টার-টেররিজমের পরিবর্তে কাউন্টারিজম বলেছিলেন। এগুলোও অন্যত্র বিস্তারিত বলা যাবে।

বিশ্বজুড়ে ফিলার হিসেবে uh এর কাছাকাছি ধ্বনি প্রায় সব ভাষাতেই পাওয়া যায়। ব্রিটেনে উচ্চারণ করা হয় uh কিন্তু বানান করা হয় er হিসেবে; যেহেতু সিলেবলের শেষে ব্রিটিশ ইংরেজিতে r উচ্চারিত হয় না, যেমন বাটার (butter) কে তারা উচ্চারণ করে বাটাহ্। ফরাসিতে euh এর মতো ধ্বনি একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। হিব্রুতে ehhh। সার্বিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার লোকজন ovay শব্দটা ব্যবহার করেন। তুর্কীরা ‘ম্মম্’ ব্যবহার করেন এক্ষেত্রে।  eh, ah, aaah, m, mm, hmm, ooh, a, আর oh ইত্যাদি সুইডিশরা ব্যবহার করেন। নরওয়ের লোকজন e, eh, m, ও hm।  জার্মান ও ডাচরা যথাক্রমে uh, um ও äh, ähm. ডাচ ভাষাবিজ্ঞানী উইলিয়াম লেভিটের মতে, uh একমাত্র বিশ্বজনীন শব্দ

এ তো গেল ইউরোপিয়ান ভাষাগুলোর ক্ষেত্রে। প্রাচীন বৈদিক ঐতিহ্যও ‘ওম’ ধ্বনিটিকে ব্রহ্মাণ্ডের আদি বা মৌল ধ্বনি হিসেবে ধরা হয়েছে। ওম-কে অবশ্য ব্রহ্মাণ্ডের দ্বিধা বা সংশয়ের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে। কোনো কোনো ভাষায় ফিলার হিসাবে নিম্নস্বরের স্বরধ্বনি ব্যবহার করে, কোনো ভাষায় প্রকৃত শব্দ/ শব্দসমূহ দেখা যায়। ইংরেজিতে যেমন well, so কিংবা you know. তুর্কীরা বলে শেই! শেই! জাপানি eto (ইতো)  আর ano (আনো), এস্পাঞল este (এসতে) বা eh এবং মান্দারিনে neige (যার অর্থ ‘যে’) একই কাজে ব্যবহৃত হয়। কথা বলতে গিয়ে মানুষ যন্ত্রের মতো কথা বলে না, তাই তাকে মাঝে মধ্যে স্টকের জন্য থামতে হয়। কথা গুছিয়েও নিতে হয়।  তখন একদম নীরব থাকার চেয়ে বক্তব্যকে ভেবে নিতে,  গুছিয়ে নিতে সাহায্য করে এই শব্দ বা শব্দগুচ্ছ। নীরবতার পরিবর্তে কিছু শব্দ বা ধ্বনি তাই বক্তা উচ্চারণ করে। ইংরেজিতে কথার মধ্যে ‘ওয়েল’ বা ‘ইউ নো’ ইত্যাদি শব্দ/শব্দগুচ্ছ সাধারণত বাক্যে নির্দিষ্টভাবে আলাদা কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। বাংলায় এই বৈশিষ্ট্য কিছুটা দেখা যায় অনেক সময় ‘তো’ শব্দের ব্যবহারে। কিংবা কখনো কখনো ‘হচ্ছে’, ‘হচ্ছে গিয়ে’, বা ‘ইয়ে’-তে। ইংরেজিতে এই ধ্বনি বা ধ্বনিসমূহকে বলে ফিলার। মধ্যবর্তী সময়কে ফিল বা পূর্ণ করে বলেই হয়ত নাম ফিলার। কথার মধ্যে এই যে বিরতি নেয়া, ফিলার ব্যবহার, অসাবলীলতা (ডিসফ্লুয়েন্সি) বেশি দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা কমে। আর বার্ধক্যের দিকে অর্থাৎ দ্বিতীয় শৈশবে  আবার বাড়তে থাকে। ফিলার নিয়ে এতো বিশদে যাচ্ছি তার কারণ হলো মুদ্রাদোষের অধিকাংশই আসলে অতি এবং অসহনীয় মাত্রার ফিলার থেকে সৃষ্টি হওয়া। ইয়ে, কথা হইল গিয়ে, মনে করেন, ধরেন যে ইত্যাদি খুব বেশি মাত্রায় ব্যবহৃত হলেই শ্রোতার কানে লাগে। আদতে এগুলো কিন্তু ফিলার।

কথার মধ্যে ফিলারের উপস্থিতিরও কিন্তু নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে। বাক্যের শব্দ্যের যেকোনো জায়গায় কিন্তু ঢুকে পড়তে পারে না ফিলার। পবিত্র সরকারের ভাষ্য:
‘কোথায় এই মুদ্রাদোষ ঢুকে পড়বে, তারও একটা ব্যাকরণের নিয়ম আছে। তা যেখানে-সেখানে ঢুকে পড়তে পারে না। যদিও আমাদের স্নাতক পড়াশোনার কলেজ-জীবনে একজন বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বাংলার অধ্যাপক সম্বন্ধে তার ছাত্ররা ঠাট্টা করে বলতো – তার মুদ্রাদোষ ছিল ‘হচ্ছে গিয়ে’ বলা –তিনি নাকি ছিন্নপত্র বইয়ের নামটাকেও ‘ছিন্ন হচ্ছে গিয়ে –পত্র’ বলতেন। কিন্তু এরকম হওয়া খুব স্বাভাবিক নয়৬। কিছু শব্দের বেশি ব্যবহার তাই খুব স্বাভাবিক। এটাকে দোষ বলার মানে নাই। কথার মধ্যে তাই ফিলার থাকাটা স্বাভাবিক। অস্বাভাবিক তখন লাগে যখন দেখা যায় মাত্রাটা খুব বেশি।

The thing is, I don’t like this man.
He is, just between you and me, a fraud, and he will be, take it from me, detected soon. He is sure to fall; I know what I mean, from public estimation!

পাঠক, আপনার জন্য কুইজ। বলুন তো ওপরের তিনটি ইংরেজি বাক্যে কতটি ফিলার আছে?

 

৫.
আমি যেসব মুদ্রাদোষ পেয়েছি তার কিছু উদাহরণ দেয়া যাক।
কথা হচ্ছে গিয়ে তা না। কথা হচ্ছে গিয়ে তিনি যে আসবেন তার কোনো গ্যারান্টি কি আছে? আমি আগেই বলছিলাম উনার ব্যাপারে সাবধান হও। কারণ, কথা হচ্ছে গিয়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে সবকিছু ক্লিয়ার কাট থাকা ভালো। আমি ওকে-চিন্তা করুন-কত বোঝালাম! আমার কথায় কান দিলো না। এখন এই ঝামেলা-চিন্তা করুন-ওকেই তো সামলাতে হবে।
এভাবে আর কিছু ‘চিন্তা’ করুন চলতে থাকলে শ্রোতাই চিন্তিত হয়ে পড়বেন।

একজনের বক্তব্য: মনে করো যে, মেয়েটাকে দেখে আসলাম গতকাল। মনে করো যে, দেখতে শুনতে ভালোই। কিন্তু মনে করো যে চলবে, একটু প্রবলেম আছে। আমি থাকি ঢাকায়– মনে করো যে, অত দূরে কি যাওয়া যায়? মনে করো যে, এভাবে তো সম্ভব না...। কথার মধ্যে যেকোনো মামুলি বিষয়েও খুব দ্রুত বিস্ময় প্রকাশে অনেককে বলতে শোনা যায়: ‘আল্লা আআআ!’ এটা সাধারণত মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই প্রজন্মের অনেক টিনেজকে বিশেষত টিনেজ গার্লদের ‘ও এম জি’ এলার্মিং মাত্রায় বলতে দেখি।
প্রাবন্ধিক বিনয় ঘোষের মতে, বাঙালি ভদ্রলোকের সবচেয়ে বিচিত্র মুদ্রাদোষ হলো, বাংলা কথাকেই ইংরেজিতে অনুবাদ করে দেওয়া। বিনয় প্রদত্ত উদাহরণ- একজন বলছেন, ‘আমি মানে একসময় খুব পড়াশোনা করতাম, আই ওয়াজ এ ভোরেশাস রিডার, বুঝতে পেরেছেন, কিন্তু পরে দেখলাম ও সব একেবারে বাজে মানে অ্যাবসলিউটিলি মিনিংলেস, বুঝতে পেরেছেন?’

উনিশ শতকের সেরা ব্যঙ্গরচনা লেখক কালীপ্রসন্ন সিংহ তার ‘হুতোম পেঁচার নকশা’য় সমাজের অসঙ্গতির প্রতি বিদ্রূপ করেছেন অনেক। ইংরেজি তখনও স্ট্যাটাস সিম্বল ছিলো। দেশী ক্রেতাদেরও ইংরেজি শোনাতে পারলেই হতো। দোকানদার বলছে: ‘কম স্যার। গুড সপ স্যার। টেক টেক নটেক নটেক একবার তো সী’। অর্থাৎ আসেন স্যার। ভালো দোকান স্যার। নেন বা না নেন একবার তো দ্যাখেন।
এই ইংরেজিপ্রীতি ও বাবুয়ানার প্রতি কটাক্ষ ডি এল রায়ের লেখাতেও পাওয়া যায়। (যদিও অনেক সময় প্রতিক্রিয়াশীলতায় দুষ্ট মনে হয় তাকে বর্তমানের প্রেক্ষাপটে) ডি এল রায় একটা গানে ইংরেজি ও বাংলা শব্দের জগাখিচুড়ি ভাষা দিয়েই এইসব বাবুদের বিদ্রূপ করেছেন। Reformed Hindoos নামক গানে লিখেছেন:

‘From the above দেখতে পাচ্ছ বেশ
যে আমরা neither fish nor flesh;
আমরা curious commodities, human oddities
                                      denominated Baboos;
আমরা বক্তৃতায় বুঝি ও কবিতায় কাঁদি কিন্তু কাজের সব
                                      ঢুঁ ঢুঁs;
আমরা beautiful muddle, a queer amalgam
                                      of শশধর, Huxley and goose.’

আমাদের দেশে ইংরেজি কি স্ট্যাটাসের চিন্তায় অহরহ চিন্তিতদের এই জিনিস চোখে পড়ে। এখন বেঁচে থাকলে, জনাব দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে আরও কয়েকটা উদাহরণ দিয়ে খুশি করা যেত। অন্তত তাকে চমকপ্রদ কিছু বাহুল্যের দৃষ্টান্ত সরবরাহ করতে পারতাম।

suppose তুমি ধরো অথবা সাপোজ মনে করো.../ ওরা দু’জন love marriage করে বিয়ে করছে।/ মেরে তোর মুখের face-cutting টা পাল্টে দেব।/ ভিসার মেয়াদ extension করে ৫ বছর বাড়িয়েছে।/ টিভিতে সরাসরি লাইভ দেখাইতেছে খেলা।/ গাড়িটা পেছনে back কর।/ Rejected মালগুলো বাতিল হয়ে গেছে।/ এ্যাজ এ ফ্রেন্ড হিসেবে সে ভালো ছেলে।/ বলটা bounce করে লাফিয়ে উঠেছিল!/ স্যার কোয়েশ্চেনটা আবার রিপিট করবেন একটু? অথবা, প্লিজ রিপিট এগেইন।/ প্রুফ সংশোধন করবার বেলায় কথাটা সংশোধনীয়, বলা ভালো ‘সংশোধনের বেলায়’

সরল সহজ তাঁতি আর চোরের গল্পটা নিশ্চয়ই অনেকেরই মনে আছে। জ্যোতিভূষণ চাকীর সৌজন্যে প্রাপ্ত গল্পটা এই প্রসঙ্গে পেশ করে ইতি টানবো।
পুলিশ আসছে দেখে চোরাই মালের পোঁটলাটা সরল সহজ তাঁতিকে গছিয়ে চোর পালালো। তাঁতি বেচারা ধরা পড়ল পুলিশের হাতে।
বিচারক: পোঁটলাটা চুরি করেছ?
তাঁতি: আজ্ঞে রামের ইচ্ছে চুরি করিনি।
বিচারক: তবে পেলে কি করে?
তাঁতি: রামের ইচ্ছে হুজুর। আমি হাত থেকে বাড়ি গেলাম। ভাত খেলাম। তারপর-রামের ইচ্ছে-মণ্ডপে বসে রামনাম জপ করতে লাগলাম। রামের ইচ্ছে ওনারা এলেন।
বিচারক: ওনারা কারা?
তাঁতি: রামের ইচ্ছে, ওই চোরেরা। বলল, মাথায় তোল পুঁটলিটা, রামের ইচ্ছে তুললাম। ওনারা পুলিশ দেখে পালালেন। রামের ইচ্ছে আমি ধরা পড়লাম। রামের ইচ্ছে এখন হজুরের এজলাসে।
বিচারকের মনে হলো লোকটা সহজ সরল রামভক্ত, চোর নয়। বিচারক, রামের ইচ্ছে তাকে খালাস দিলেন।

 

সহায়ক তথ্যসূত্র:

১ বোধ, জীবনানন্দ দাশ। প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত রচনাসমগ্র। সালমা বুক ডিপো।
২ শুবাচ, শুদ্ধ বানান চর্চা।
[http://shubach.blogspot.com/2014/07/blog-post_271.html]
৩ রাজশেখর বসু, প্রবন্ধাবলী, মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স, মার্চ ২০১৪, পৃঃ ১৩৬-৩৭
৪ Laserna, C., Seih, Y., & Pennebaker, J. (2014). Um . . . Who Like Says You Know: Filler Word Use as a Function of Age, Gender, and Personality Journal of Language and Social Psychology
৫ মাইকেল এরার্ড, আম্‌ম্‌...: স্লিপস, স্টাম্বল্‌স, অ্যান্ড ভার্বাল ব্লান্ডার্স, অ্যান্ড হোয়াট দে মিন,  এ্যাঙ্কর পাবলিশার্স, ২০০৮
৬ পবিত্র সরকার, ‘মানে, মানে ... ইয়ে’ ইত্যাদি: কথায় বাধাবিঘ্ন নামক রচনা। বই: চম্‌স্কি ব্যাকরণ ও বাংলা ব্যাকরণ। পুনশ্চ। কলকাতা, জুলাই ২০১৩, পৃঃ ১৬৯-১৭০
৭ বিনয় ঘোষ, কালপেচার রম্যরচনা সংগ্রহ। প্রকাশ ভবন ষষ্ঠ সংস্করণ, ভাদ্র ১৪২২/ সেপ্টেম্বর ২০১৫ পৃঃ ১৯৯
৮  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ভাষার খেয়াল’ নামক রচনা দ্রষ্টব্য।
৯ জ্যোতিভূষণ চাকী, বাগর্থকৌতুকী। আনন্দ পাবলিশার্স। পঞ্চম সংস্করণ অক্টোবর ২০১৪। পৃ ৩০



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ মে ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়