ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বরিশালে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শশ্মান দিপাবলী

জে.খান স্বপন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১০, ১৮ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বরিশালে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শশ্মান দিপাবলী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : বরিশালে শুরু হয়েছে ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় শশ্মান দীপাবলি উৎসব। বরিশাল মহাশশ্মানে এখন পূণ্যার্থীদের ভিড়। ক্রমেই বাড়ছে এই মহাশশ্মানমুখী জনস্রোত।

বরিশাল মহাশশ্মান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুডু জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কালি পূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূজা অর্চনা করলে প্রয়াত ব্যক্তির আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করা হয় প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরণের খাবার। সবকিছু করা হয় তিথি থাকা অবস্থায়। এছাড়া সমাধির পাশে মোমবাতি প্রজ্জলন করে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা।

তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত ১২ টা ৮ মিনিটে লগ্ন শুরু হয়েছে, শেষ হবে আজ বুধবার রাত ১২ টা ২ মিনিটে । প্রতি বছর দেশ-বিদেশের স্বজনহারা মানুষ বরিশাল মহাশশ্মানে এসে প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। শশ্মান রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দের আশা আজ লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বরিশাল মহাশশ্মানে। এ জন্য শশ্মানের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে ২০টি ক্লোজ সার্কিট  ক্যামেরা এবং নিয়োগ করা হয়েছে ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবী।

নতুন পুরনো মিলিয়ে মহাশশ্মানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় শশ্মান দীপাবলি উৎসব সার্থক করতে গত কয়েক দিন ধরে নগরী কাউনিয়ায় বরিশাল মহাশশ্মান পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ধোয়া-মোছার কাজ শেষ হয়েছে। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের রয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

মহাশশ্মান রক্ষা কমিটি সূত্র জানায়, ৫ একর ৯৬ শতাংশ জমিতে এই মহাশশ্মান। পুরনো শশ্মানের অধিকাংশ সমাধি ধংস হয়ে গেলেও এখনো সেখানে ব্রাক্ষ্মণদের ২/৩টি এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনান্দ দাসের পিতা সত্যানন্দা দাস ও পিতামহ সর্বানন্দা দাস, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালি চন্দ্র ঘোষ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমাধি রয়েছে।

এর মধ্যে ৫০ সহস্রাধিক পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ রয়েছে। ৮০০ মঠ রয়েছে এমন, যাদের স্বজন এ দেশে নেই। সেইসব মঠগুলো হলুদ রং করা হয়েছে। স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্জলন করা হবে।

১৯২৭ সাল থেকে এই স্থানে শশ্মান দীপাবলি উৎসব পালিত হয়ে আসছে। উপমহাদেশের মধ্যে এ মহাশশ্মানকে ঘিরে সবচেয়ে বড় শশ্মান দীপাবলি হয় বলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দাবি।



রাইজিংবিডি.কম/ বরিশাল/ ১৮ অক্টোবর ২০১৭/ জে. খান স্বপন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়