ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও ব্যাংক ম্যানেজার

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ২৩ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও ব্যাংক ম্যানেজার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ প্রধান শাখায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেই চলছে। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সুড়ঙ্গ পথে ব্যাংকের ভোল্ট থেকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা লুটে নেওয়ার ঘটনা আজো ভুলেনি কিশোরগঞ্জবাসী।

তিন বছর পর এবার ওই ব্যাংকে ঘটল আরেক আর্থিক জালিয়াতির ঘটনা। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক (এজিএম) সাইফুদ্দিন সবুজের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসএমই লোনের অসংখ্য গ্রাহকের টাকা হিসাব থেকে তুলে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন ওই শাখার ম্যানেজার।

এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) বাদী হয়ে অভিযুক্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের (এজিএম) বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খোন্দকার শওকত জাহান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ময়মনসিংহ অঞ্চলের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে ঘটনাটি প্রকাশ হবার পর ভীতি সৃষ্টি হয়েছে ব্যাংকের গ্রাহকদের মাঝে। প্রতিদিনই নিজেদের সঞ্চিত অর্থের খোঁজ খবর নিতে ভিড় জমাচ্ছেন ব্যাংকে।

অভিযোগকারীরা জানান, শহরের বিভিন্ন এলাকার আমানতকারী ঠিকাদার, ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, সরকারি কর্মচারী, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের এসএমই গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে জালিয়াতির মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।

এমনকি টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে সিল স্বাক্ষর সম্বলিত রশিদ প্রদানের পর টাকা জমা না দিয়ে আমানতকারীদের চেক রেখে টাকা উঠিয়ে ঋণ গ্রহীতাদের এসব টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন ম্যানেজার সাইফুদ্দিন সবুজ।

এ ঘটনার পর অভিযোগকারীরা বিষয়টি সুরাহার জন্য অডিট টিম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে লিখিত আবেদন করেন। ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়ায় প্রাথমিকভাবে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। কিন্তু আদেশ মতো ময়মনসিংহ জিএম অফিসে যোগদান না করে পালিয়ে যান তিনি।

ব্যাংকের বর্তমান ম্যানেজার মাহবুবুল ইসলাম খান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দুদিনে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য গ্রাহকদের অভিযোগ পাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কত টাকা খোয়া গেছে বলা যাচ্ছে না। তবে অডিট এবং তদন্তের পর জানা যাবে গ্রাহকদের কি পরিমাণ টাকা খোয়া গেছে।

এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) নূর মোহাম্মদ জানান, তিনি নিজে বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় প্রাথমিকভাবে দুটি ঘটনায় ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া পরবর্তীতে আরো যে সব অভিযোগ আসবে বা পাওয়া যাবে সেসবও এ মামলার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

এদিকে সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ইসমাইল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি অডিট টিম ঘটনা তদন্ত করছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকার পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান চাচ্ছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।



রাইজিংবিডি/কিশোরগঞ্জ/২৩ অক্টোবর ২০১৭/রুমন চক্রবর্তী/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়