ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শান্তি ও কল্যাণ কামনায় শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা

হাসমত আলী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২১ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শান্তি ও কল্যাণ কামনায় শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর : হঠাৎ করেই ইজতেমা স্থল ও সংলগ্ন চারদিকে নেমে আসে নিস্তদ্ধতা। পরম করুণাময়ের নৈকট্য লাভের আশায় যেন গভীর ধ্যানে মগ্ন হয়ে যায় কয়েক লাখ মানুষের সমাবেশ। তবে ক্ষণে ক্ষণে লাখ লাখ মানুষের গগণ বিদারী ‘আমিন, ‘আমিন, ‘ইয়া আল্লাহু’ ‘ইয়া আল্লাহু’ ধ্বনিতে যেন প্রকম্পিত ওঠে তুরাগতীর।

রোববার সকাল ১০টা ১৯মিনিটের দিকে ঢাকার কাকরাইল মসজিদের ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের আখেরি মোনাজাত শুরু করেন। মোনাজাত চলে ১০টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত। মোনাজাতে ১১ মিনিট আরবিতে এবং ১৫ মিনিট বাংলায় মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মোনাজাতে জীবনের সকল গুনা মাফ, কবরের আযাব, জাহান্নামের আযাব থেকে মুক্তি এবং জান্নাত নসিবের জন্য আল্লাহর নিকট আবেদন জানানো হয়। এছাড়া মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহলৌকিক ও পরলৌকিক মুক্তি এবং দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার তৌফিক কামনা করা হয়। সমবেত মুসল্লিরা ‘আমিন আমিন, ‘ইয়া আল্লাহু’ ‘ইয়া আল্লাহু’ ধ্বনিতে মোনাজাতের সমর্থন জানান এবং পরম দয়াময় আল্লাহর দরবারে অনুনয়-বিনয় করে দুনিয়ার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। দু’হাত তুলে অনেক মুসুল্লি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ইজতেমা ময়দানের পাশাপাশি ময়দান সংলগ্ন সড়ক-মহাসড়ক, ফুটপাত, রোড ডিভাইডারের ওপর, বাড়ির ছাদ, গাড়ি, ট্রেন, খোলা জায়গা, রাস্তার ধারে দোকানের সামনে খালি জায়গা কিংবা তুরাগ নদীর ওপর থেমে থাকা ট্রলার, নৌকা-যে যেখানে ছিলেন, সেখানে সে অবস্থায়  দু’হাত তুলে মোনাজাতে শরিক হন।

এর আগে রোববার সকালে মাওলানা আব্দুল মতিনের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তৃতীয় দিনের কার্যক্রম।

এদিকে, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ভোর থেকেই টঙ্গীর ইজতেমা অভিমুখে শুরু হয় মানুষের ঢল। শনিবার ১২টার পর থেকে ইজতেমা ময়দানগামী সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে মোনাজাতে অংশ নিতে ঢাকা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার লাখ লাখ মুসল্লি হেঁটে ইজতেমা স্থলে পৌঁছান। অনেকে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে আবার অনেকে ময়দানের আশে-পাশের রাস্তা, অলি-গলিতে পুরনো খবরের কাগজ, পাটি, সিমেন্টের বস্তা ও পলিথিন সিট বিছিয়ে অবস্থান নেন। এছাড়াও পাশ্ববর্তী বাসা-বাড়ি-কলকারখানা-অফিস-দোকানের ছাদে, যানবাহনের ছাদে ও তুরাগ নদীতে নৌকায় মুসল্লিরা অবস্থান নেন। ইজতেমা ময়দান ও আশপাশ এলাকার যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই ছিল শুধু টুপি-পাঞ্জাবি পড়া মানুষ আর মানুষ।

বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন মহিলারাও। কিন্তু ময়দানে মহিলাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তারা বিভিন্ন সড়কের আশ-পাশে ও বাসাবাড়ির ছাদে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে শরিক হন।

গত শুক্রবার বাদ ফজর মাওলানা ফারুক হোসেনের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয়পর্ব।

উল্লেখ্য, এর আগে একই ময়দানে গত ১২ জানুয়ারি শুরু হয়েছিল বিশ্ব ইজতেমার প্রথমপর্ব। এতে ঢাকার একাংশসহ ১৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেন। ১৪ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছিল প্রথম পর্ব। আজ আখেরি মোনাজাতের মধ্য শেষ হলো ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা।



রাইজিংবিডি/গাজীপুর/২১ জানুয়ারি ২০১৮/হাসমত আলী/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়