ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

টেকনাফে দেশের প্রথম ‘সোলার পার্ক’

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ১০ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টেকনাফে দেশের প্রথম ‘সোলার পার্ক’

কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফে চালু হলো দেশের প্রথম ‘সোলার পার্ক’।  যেখান থেকে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় সঞ্চালন গ্রিডে যোগ হয়েছে ২০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টেকনাফের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশই সরবরাহ হচ্ছে নাফ নদীরপাড়ের এই ‘সোলার পার্ক’ থেকে।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জুলস পাওয়ার লিমিটেড(জেপিএল)এর দেওয়া তথ্য মতে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি জেপিএলের সঙ্গে বিপিডিবির চুক্তি হয়। এর মাত্র ১৮ মাসের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন করা হয়েছে।

দেশের প্রথম সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে গত মাসের ১১ তারিখ থেকে এখানে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ কিনে জাতীয় সঞ্চালন গ্রিডের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করছে। ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি চালু হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী এলাকায় নাফ নদীরপাড়ে সারি সারি বসানো হয়েছে ৮৭ হাজার সৌর প্যানেল। এসব প্যানেলের মাঝখানে রয়েছে পাঁচটি সাবস্টেশন। একই সঙ্গে প্রকল্পে যাতায়াতের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে কয়েকটি সড়কও। এসব সৌর প্যানেল থেকে উৎপাদিত ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রথমে মূল স্টেশনে রাখা হয়।

সূর্যের তাপ থেকে উৎপাদন হচ্ছে বিদ্যুৎ। এর আলোয় আলোকিত হচ্ছে আশপাশের গ্রাম। এতে লোডশেডিং কমে আসায় দারুণ খুশি স্থানীয়রা।

হ্নীলার বাসিন্দা আনোয়ার ইসলাম নয়ন বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকার যন্ত্রণা আমাদের নিত্যদিনের। এ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হওয়ায় আমাদের লোডশেডিং অনেকাংশে কমে এসেছে। পাশাপাশি টেকনাফের মানুষের যে বিদ্যুৎ সঙ্কট কেটে যাচ্ছে।’

উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি বলেন, ‘টেকনাফের মানুষের বিদ্যুৎ সমস্যা দীর্ঘদিনের। এ প্রকল্প পুরোপুরি চালু হলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে টেকনাফের মানুষ। জনগণের জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উন্নয়ন কর্মকান্ড।’

সোলারটেক এনার্জির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুহের লতিফ খান বলেন, এ সোলার পার্ক থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতে দেশের টেকসই উন্নয়নে নবায়নযোগ্য জ্বালানির আরও প্রকল্পে আমরা সংযুক্ত হতে চাই। মধ্যম আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে সরকার। এর আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। আশা করছি, এরই একটি অংশ টেকনাফ সোলারপার্কে থেকে যাবে।’

জুলস পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক রায়ান মঈন বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব, তা মোকাবেলায় ক্লিন এনার্জির মাধ্যমে দেশের পাশে দাঁড়াতে পারাটা খুবই আনন্দের ও গর্বের। সোলার পার্কের প্রথম প্রকল্প হিসেবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়নে আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হয়েছে। তবে সরকারের আন্তরিকতায় প্রকল্পটি দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্য মতে, টেকনাফের এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে ১০০ একর জায়গায়। এতে খরচ হয়েছে ২৪০ কোটি টাকা।



রাইজিংবিডি/কক্সবাজার/১০ অক্টোবর ২০১৮/সুজাউদ্দিন রুবেল/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়