ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

স্বাগত মাহে রমজান

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ২৭ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বাগত মাহে রমজান

রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়া আবার এসেছে মাহে রমজান। সংযম, আত্মশুদ্ধি ও ক্ষমালাভের মাস এটি। মহান আল্লাহ তাআলার হুকুম অনুযায়ী এই মাসে ৩০ দিন রোজা পালন করতে হয়। এর মাধ্যমে রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য এবং তাকওয়া অর্জনের অপূর্ব সুযোগ এনে দেয়। রোজা ধনী-গরিব সবার মাঝে পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করে। আমরা পুণ্যময় রমজানের এই আগমনকে স্বাগত জানাই।

ইসলাম ধর্মের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হল মাহে রমজানের রোজা। আরবি ‘রমাদান’ শব্দটি ‘রামদ’ শব্দমূল হইতে উদ্ভুত। এর আভিধানিক অর্থ হলো দহন, প্রজ্বলন, জ্বালানো তথা ভষ্ম করে ফেলা। রমজানের রোজা মানুষের কুপ্রবৃত্তি ও নফসের দাসত্ব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় এ কারণে এ মাসের নাম হয়েছে রমজান।

সিয়াম সাধনা বা রোজা পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য হইল তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন। সূরা বাক্বারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের জন্য রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন করতে পার।’ তাকওয়ার মূল আবেদন হচ্ছে আল্লাহকে রাজি-খুশি রাখতে যে সব কাজ করা দরকার তা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে করা, আর যে সব কাজ করতে আল্লাহ ও তাঁর রসূল নিষেধ করেছেন তা না করা।

সিয়াম সাধনার মাধ্যমে ইমানদারগণ আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন পরিপূর্ণভাবে। মহান আল্লাহতায়ালা রমজান মাসের রোজা ফরজ করার পাশাপাশি বিশ্বাসীদের জন্য তা সহজ করেও দিয়েছেন। সৃষ্টিকর্তা সাধ্যের অতিরিক্ত কোনো কিছু চাপান না মানুষের ওপর। পবিত্র কোরআনে সূরা বাকারায় আল্লাহপাক এরশাদ করেন, ‘তোমরা পানাহার করতে পারো যতক্ষণ না রাতের কৃষ্ণরেখা মুছে ভোরের শুভ্ররেখা বের হয়ে হয়ে আসে।’

মুসলমানদের জীবনে রমজান মাস আল্লাহ তায়ালার দয়া, ক্ষমা ও পাপমুক্তির এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে। এ মাসের মর্যাদা ও তাত্পর্য অপরিসীম। পবিত্র এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে কোরআনুলকারীম। মানবজীবনের পরিপূর্ণ জীবনবিধান হলো এই কোরআন। আর এ মাসের মধ্যেই রয়েছে মহিমান্বিত লাইলাতুল ক্বদর। রমজান মাসে বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় দোজখের দরজাসমূহ এবং শয়তানকে বন্দি করে রাখা হয়। -(তিরমিযি, নাসাঈ ও ইবনে মাজা)। এই মাসের নেক আমল অন্য মাসের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়।

হাদীস শরীফে আছে রোজাদারের জন্য দুটো সময় খুবই আনন্দের। একটি হচ্ছে ইফতারের সময় আর অন্যটি হচ্ছে আখিরাতে যখন সে আল্লাহর দীদার লাভ করবে। রোজা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাখা হয়। লোক দেখানোর কোনো অবকাশ নেই এখানে। রোজাদারকে আল্লাহ তাআলা স্বয়ং নিজ হাতে পুরস্কার দিবেন এবং মাফ করে দেবেন তার অতীতের সব গুনাহ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঠিকভাবে রমজানের রোজা পালন করিবার তাওফিক দিন। -আমিন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ মে ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়