ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

সিরিসেনার সফর

দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করবে

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ১৮ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করবে

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার বাংলাদেশ সফরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত হতে চলেছে। সিরিসেনার তিন দিনের বাংলাদেশ সফর এবং বিভিন্ন বিষয়ে এক ডজনেরও বেশি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরকে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন মেরুকরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর দু’দেশের মধ্যে চলতি বছরে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হলে সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা যায়।

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘ দিন ধরেই সুসম্পর্ক বিরাজমান। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ হিসেবেই বিবেচিত। দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্কের সদস্য উভয় দেশ। সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক দিক থেকেও দুই দেশের রয়েছে অভিন্ন ঐতিহ্য। তবে যথাযথ উদ্যোগের অভাবে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক ও সহযোগিতা কার্যক্রম কিছুটা শ্লথ ছিল।

শ্রীলঙ্কায় যেমন বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা রয়েছে তেমনি বাংলাদেশেও চাহিদা রয়েছে সে দেশের পণ্যের। এখন দুদেশের মধ্যে মুক্তবাজার চুক্তি হলে এর মধ্য দিয়ে শুল্কসহ সব বাধা দূর হবে, যা উভয় দেশের জন্যই সুবিধাজনক হবে। এ চুক্তি সম্পন্ন হলে এটিই হবে কোন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এটিকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মন্তব্য করেছেন। এতে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যে গতি ও প্রসার আসবে। এর ফলে লাভবান হবে উভয় দেশই।

বিশ্ববাণিজ্য কিংবা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা থাকে। বর্তমানে তা আরো বেড়েছে বলা যায়। একই সঙ্গে বর্তমানে সন্ত্রাস, জঙ্গী ও উগ্রবাদ বড় ধরনের বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্য এগিয়ে নিতে পারলে তা বেশ ফলপ্রসু হবে বলে আশা করা যায়। সুতরাং বাণিজ্য ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হলে তার ফল হবে অত্যন্ত ইতিবাচক ও সুদূরপ্রসারী।

এক্ষেত্রে উভয় দেশ একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। দুদেশের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে যে, চুক্তির খুঁটিনাটি কাজ যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা হবে। আর এ কারণে দুই দেশের কূটনীতিক ও সরকারী কর্মকর্তাদের যাতায়াতে ভিসা অব্যাহতিসংক্রান্ত একটি চুক্তিও সই হয়েছে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে যে ১৪টি দলিল সই হয়েছে, তার সাতটিই হচ্ছে কৃষি, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবিষয়ক।

তবে যে কোনো ক্ষেত্রে চুক্তি বা সমঝোতা শেষ কথা নয়, এটি হচ্ছে সূচনা। চুক্তির বাস্তবায়নই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু সরকারী পর্যায়ে নয়, বেসরকারি পর্যায়েও দুই দেশের যোগাযোগ বাড়ানো জরুরি। কেননা দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়লে সম্প্রীতির সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং একে অপরের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান রেখে এ অঞ্চলের সব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী। এ বিশ্বাস বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক বিনির্মাণে অবদান রেখেছে। সিরিসেনার সফরকালে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রক্রিয়া গভীরতর করার ব্যাপারেও একমত হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস সিরিসেনার সফরে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো জোরদার হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ জুলাই ২০১৭/আলী নওশের

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়