ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বৈশাখ রাঙিয়ে দেয় সবুজ ক্যাম্পাস

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১২, ১৪ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বৈশাখ রাঙিয়ে দেয় সবুজ ক্যাম্পাস

ছবি : শামীম পাটোয়ারী

আবু বকর ইয়ামিন : বৈশাখ এলেই সবুজ ক্যাম্পাস উৎসবে  রাঙিয়ে যায়। হ্যাঁ, আজকের সকালের সূর্যটা যেন কষ্টগুলোকে দূরে ঠেলে অন্যরকম হাসিতে উজ্জ্বল করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় বর্ণিল সব আয়োজনে।

‘এসো হে বৈশাখ’ আহ্বানে সাড়া দিয়ে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। নতুন বছরের প্রথম এ দিনটিকে স্বাগত জানাতে ক্যাম্পাসজুড়ে রয়েছে নানা আয়োজন। তপ্ত দিনে প্রশান্তির সাদা আর উৎসবের লাল এ দুয়ে মিলে লাল-সাদা বৈশাখী রঙে একেবারে রঙিন হয়ে উঠেছে গোটা ক্যাম্পাস। দেশের সব উৎসব যেন এক হয়ে গেছে এ উৎসবের সঙ্গে।

সূর্যোদয়ের আগে থেকেই লাল-সাদা পোশাকের সমাহার। বাজছে ঢোল, ডুগডুগি আরো কত কি। গ্রামীণ সংস্কৃতিকে ধারণ করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ভাসছে বিপুল উচ্ছ্বাসে। শিকড়ের টানে ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি-পেশা, বয়স নির্বিশেষে সব মানুষ শামিল হয়েছে বৈশাখী উৎসবে। তাইতো সব ভেদাভেদ ভুলে উৎসবের রঙে-১৪২৫ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ।

অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় আজকের ক্যাম্পাসের চিত্র ভিন্ন রকম। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, টিএসসি, কলাভবন, কার্জন হলসহ পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় উৎসবমুখর মানুষের ঢল। তরুণদের গায়ে লাল-সাদা পাঞ্জাবি, তরুণীদের লাল-সাদা শাড়ি; মাথায় বাহারি ফুল। চিরচেনা ক্যাম্পাসটিকে আজকে যেন চিনতে হচ্ছে অন্যরূপে।

৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইয়ানা ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রবিন চারুকলা থেকে এসে টিএসসিতে স্বোপার্জিত স্বাধীনতার সামনে বসলেন। কথা হয় তাদের সঙ্গে। ইয়ানা বলেন, আমাদের জন্য আজকের দিনটি একটু বেশি স্পেশাল। কারণ বাংলা নববর্ষের এদিনেই আমাদের দুজনের প্রথম পরিচয়। তারপর থেকে তিনটি বছর একসাথে পথচলা। আজকে দুজনে সারা দিন রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা ঘুরবো-ফিরবো। খুব মজা করবো।

নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার স্লোগানে রয়েছে সোনার মানুষ হওয়ার আহ্বান। এটিকে বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত যুগোপযোগী বলে মনে করে ক্যাম্পাসের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিজীবী হানিফ মজুমদার। সঙ্গে এসেছেন স্ত্রী ও সন্তান।

তিনি বলেন, আমাদের দুজনেরই সাবেক ক্যাম্পাস এটি। পুরনো ক্যাম্পাসে বারবার ফিরে ফিরে আসতে কার না ভাল লাগে? কিন্তু সময় হয় না। পহেলা বৈশাখসহ বিশেষ দিনগুলোতে ক্যাম্পাসে আসা হয়। ভালই লাগে। তবে সবার প্রতি আহ্বান থাকবে কেউ যেন সবুজ এ ক্যাম্পাসটিকে কলুষিত না করে।

আমেরিকান প্রবাসী অ্যানা বাঙালিয়ানা শাড়ি পড়ে, গালে নকশা এঁকে এসেছেন চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রায়। তিনি বলেন, সকালে পান্তা ইলিশ খেয়েছি। মঙ্গল শোভাযাত্রায় গিয়েছি। ছবি তুলছি। বেশ উপভোগ করছি।

প্রতিবারের মতো এবারো পহেলা বৈশাখের দিনটি পথশিশুদের সাথে কাটাচ্ছেন সদ্য মাস্টার্স শেষ করা জাবিন। তিনি বলেন, প্রতিবারই চেষ্টা করি সাধ্য অনুযায়ী তাদের জন্য কিছু ভালো খাবার আর ভালো কিছু পোশাক কিনে দিতে। বছরের অন্তত একটা শুভ দিন তাদের সঙ্গে কাটাতে পেরে নিজের কাছে খুব ভাল লাগে। তিনি সবার প্রতি অনুরোধ রাখেন ক্যাম্পাসকে যেন সবাই নিজ দায়িত্বে পরিস্কার রাখে। সবাই আন্তরিক হলে এটি সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ এপ্রিল ২০১৮/ইয়ামিন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়