ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

জাবি ক্যাম্পাসের কুলফির শীত-গ্রীষ্ম নাই

ছাইফুল ইসলাম মাছুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ২০ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাবি ক্যাম্পাসের কুলফির শীত-গ্রীষ্ম নাই

ছবি : আমিনুর রহমান হৃদয়

ছাইফুল ইসলাম মাছুম: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিদিন অনেকেই বেড়াতে আসেন। কেউ আসেন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে, কেউবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে। আবার কেউ আসেন মজার সব খাবারের খোঁজে! আসলেই তাই। জাবিতে বটতলার ভর্তা-ভাতসহ অনেকের প্রিয় খাবারের তালিকায় যুক্ত হয়েছে মজার স্বাদের কুলফি মালাই।

কুলফি খাচ্ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক নিশাত পারভেজ নিশি। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, কুলফি মালাইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমার ছোটবেলার স্মৃতি। এটি ছোটবেলার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে জাবির কুলফি স্পেশাল, সর খুব ঘন হয়। তাই খাওয়ার মজাই আলাদা। আমি যতদূর জানি, জাবিতে ঘুরতে এসে কুলফি মালাই খান না, এমন মানুষ খুব কম।



ক্যাম্পাসে কুলফি মালাইয়ের জনপ্রিয়তা বছরজুড়েই। গরমের সময় বিক্রি বেশি হলেও, শীতের সময়ও কম বিক্রি হয় না। অর্থাৎ এই ক্যাম্পাসের কুলফির শীত-গ্রীষ্ম নাই। সব সময় সমান চলে। ক্যাম্পাস ঘুরে ১৪ জন কুলফি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তাদেরই একজন শুকুর আলী (৪০)। বাড়ি নাটোর জেলায় হলেও, থাকেন সাভারের আশুলিয়া। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে নিজেই মালাই তৈরি করেন, ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে ভ্যানে করে বিক্রি করেন। প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকার মালাই বিক্রি হয়। এ থেকে তার মাসিক আয় গড়ে ২০ হাজার টাকা। ফলে চার সদস্যের পরিবার নিয়ে তিনি বেশ ভালো আছেন। শুকুর আলী জানান, খুব ভোরে আগুনে দুধ ফুটিয়ে ঘন করেন, পরে একটি জারের মধ্যে বরফ মিশিয়ে শক্ত করেন। এরপর ভরে নেন ছোট ছোট কৌটায়। কৌটা ছোট-বড় অনুসারে দাম কম-বেশি হয়। ছোট কৌটার কুলফির দাম ১০ টাকা, মাঝারি ২০ টাকা এবং বড়গুলোর দাম ৩০ টাকা।

জাবির আরেক কুলফি বিক্রেতা মোহাম্মদ রুবেল মিয়া। ছোটবেলা থেকে অন্যের অধীনে মালাই তৈরি করতেন তিনি। চার বছর ধরে নিজেই তৈরি করে বিক্রি করেন। মাত্র দশ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ভ্যান, পাতিল, কৌটা কিনে শুরু করেছিলেন। এখন তার মালাই বিক্রি থেকে মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা। ঢাকা সিটি কলেজে পড়ুয়া সামিয়া তাসনিন ঘুরতে এসেছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কুলফি নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, জাবিতে ঘুরতে এসে কুলফি মালাইয়ের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। এর আগে খাইনি কখনো। এখন জাবিতে আসার পেছনে কিছু কারণের মধ্যে কুলফি মালাই খাওয়াও একটি।



ঢাকার ধানমন্ডি থেকে জাবিতে ঘুরতে এসেছেন গৃহিণী ডলি আক্তার। তিনি বলেন, ছোটবেলায় মালাই খুব পাওয়া যেত। ঠেলা গাড়িতে করে মালাই বিক্রি হতো। এখানে মালাই খেয়ে ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে। তবে ছোটবেলার কুলফি মালাইয়ের স্বাদ ছিল অন্য রকম, একটু বেশি স্বাদের। জাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সনজিৎ সরকার উজ্জ্বল রাইজিংবিডিকে বলেন, জাবিতে পড়তে এসে দারুণ স্বাদের কুলফি মালাইয়ের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। অনেক বছর ধরে জাবিতে কুলফি মালাই বেশ জনপ্রিয়। কুলফি মালাই এখন জাবির ঐতিহ্যবাহী খাবারের অংশ হয়ে গেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়