ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়’

খাদিজা খাতুন স্বপ্না || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২১ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়’

আসাদুল ইসলাম

খাদিজা খাতুন স্বপ্না : ‘পরিবারের অস্বচ্ছলতায় ৭ম শ্রেণীতেই লেখাপড়া ছেড়ে আমাকে দিনমুজুরের কাজে যোগ দিতে হয়েছে। পড়ালেখা করার খুব ইচ্ছে ছিল, কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে তা হয়ে ওঠেনি। এখন আমার আর্থিক অভাবের কারণে ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলেটাও স্কুল ছেড়ে যোগ দিয়েছে দর্জির কাজে। অভাব আমার মতো মানুষদের পিছু ছাড়ে না।’- কথাগুলো কষ্টের সঙ্গে বলছিলেন শনপাপড়ি বিক্রেতা আসাদুল ইসলাম (৩৭)।

তার বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় হলেও বর্তমানে তিনি ঢাকায় সাভারের নিউ মার্কেট এলাকায় থাকেন। সাভারের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ সহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘুরে ঘুরে শনপাপড়ি বিক্রি করে থাকেন। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তার সঙ্গে কথা হয়।

কথায় কথায় আসাদুল জানালেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ৬ মাস ধরে শনপাপড়ি বিক্রি করছেন। এর আগে রঙ মিস্ত্রির কাজ করতেন। এখন প্রতি পিস শনপাপড়ি ১৫ টাকায় বিক্রি করেন। প্রতিদিন প্রায় ২০০ পিস শনপাপড়ি বিক্রি করে ৫০০ টাকা লাভ হয় বলে তিনি জানান।
 


অসুস্থতার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাজায় ব্যথা এবং টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি না। একবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। কিন্তু ওষুধ কিনে খাওয়ার মতো সামর্থ্য আমার নেই। অসুস্থতার কারণে পরিবার চালাতে কষ্ট হয়। সাভারে এক মহাজনের কাছ থেকে প্রতিদিন শনপাপড়ি কিনে এনে বিক্রি করি। কোনো কোনো দিন শনপাপড়ি বিক্রি হয় না। সেদিন খুব কষ্ট করে কাটাতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘অভাবের কারণে ছেলেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করিয়ে এখন দর্জির দোকানে কাজে ঢুকিয়ে দিয়েছি। ছেলে ও আমার টাকায় এখন সংসার চলে। মেয়ে ৩য় শ্রেণীতে পড়ছে। মেয়েকে পড়াশোনা করিয়ে বড় অফিসার বানাতে চাই।’

আসাদুল ইসলামের কাছে তার ভবিষ্যত স্বপ্নের কথা জানতে চাইলে তিনি কেঁদে ফেলেন। পরে চোখ মুছতে মুছতে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। তাই আর স্বপ্ন দেখি না।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়