ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আগামী বছর চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব কমবে

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৭, ১ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আগামী বছর চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব কমবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, চিকুনগুনিয়া নিয়ে মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশা নিধনে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। আগামী বছর চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব কমবে।

মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চিকুনগুনিয়া ২০১৭: ঢাকা এক্সপেরিয়েন্স’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসা তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান যাতে একটি চোখেও দেখতে পান সেজন্য চিকিৎসকরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সিদ্দিকুর দেশে ফিরলেই তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চাকরি দেওয়া হবে।

বিএনপির সমালেচনা করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপি সহায়ক সরকার নামক চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এ থেকে বিএনপিকে রক্ষা করবে কে? বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে রয়েছেন। তার কাছে অনুরোধ করব, বিদেশের মাটিতে মাসে যেন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার দিন ১৫ আগস্ট তার জন্মদিন পালনের নামে কেক না কাটেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে চিকুনগুনিয়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর প্রকোপ কমেছে। চিকুনগুনিয়াকে কোনোভাবেই মহামারী বলা যাবে না।

তিনি বলেন, মেয়র হয়েছি মানুষের সেবা করার জন্য। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়ে জনগণের ভোটে মেয়র হয়েছি। মানুষকে সেবা দেওয়ার মাধ্যমে সে ঋণ একটু হলেও শোধ করার চেষ্টা করছি। মানুষের সেবায়, মানুষের পাশে আছি এবং থাকব। চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রামের পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে টেলিফোনে, বাসায় গিয়ে চিকিৎসাবিষয়ক পরামর্শ সেবা প্রদান, বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান, ফিজিওথেরাপি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি সেবা অব্যাহত রাখা হয়েছে। মশা নিধন কার্যক্রমও জোরদারভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বিএসএমএমইউর উপাচার্য কামরুল হাসান খান বলেন, জ্বর মানেই চিকুনগুনিয়া নয়। তবে জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।

সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউর রিউমাটোলজি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক ও ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিলোজি, ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর) অ্যান্ড ন্যাশনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টার (এনআইসি)-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. শাহীনা তাবাসসুম।

অধ্যাপক ডা. শাহীনা তাবাসসুম জানান, বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের ল্যাবে জ্বরে আক্রান্ত ২০১২ সালে ৬৮ রোগীর মধ্যে ৩৯ জন, ২০১৩ সালে ২৬ জনের মধ্যে চারজন, ২০১৪ সালে ১৯ জনের মধ্যে দুজন, ২০১৫ সালে ১২ জনের মধ্যে একজন, ২০১৬ সালে ৫৭ জনের মধ্যে চারজন এবং ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২৩১৯ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১০৬৯ জন রোগীর চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস পাওয়া গেছে বা ওই সব রোগীর চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।      

অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসা রোগীদের জ্বরে আক্রান্ত ১১ জনের মধ্যে একজন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত। এ বছর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও মুগদা জেনারেল হাসপাতালসহ আরো কয়েকটি হাসপাতালে আসা জ্বরে আক্রান্ত ৮৩১২ জন  রোগীর মধ্য ৮৫৯ জন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।  



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ আগস্ট ২০১৭/সাওন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়