ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

হয় লুটপাট, না হয় মৃত্যু

শাহেদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২০, ২১ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হয় লুটপাট, না হয় মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভেনেজুয়েলার পূর্বাঞ্চলীয় শহর পুয়ের্তো ওরদাজে ৯ জানুয়ারি রাতে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে আস্ত একটা মুদির দোকান লুট হয়ে গেল। মাত্র পাঁচ মাস আগে দোকানটি খুলেছিলেন লুইস ফেলিপ আনাতায়েল। খবর পেয়ে তিনি এসে দেখলেন, প্রক্রিয়াজাত মাংস থেকে শুরু করে কেচাপ পর্যন্ত সবই নিয়ে গেছে লুটপাটকারীরা। ওই সময় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে টেলিফোনে আনাতায়েল বলেছিলেন, ‘এটা দেখে আপনি কাঁদতে বাধ্য হবেন। আমার মনে হয়, আমরা চরম বিশৃঙ্খলার দিকে যাচ্ছি।’

আনাতায়েলের এই ভবিষ্যদ্বানী কয়েকটি শহরে ফলেও গেছে। এই শহরগুলিতে প্রকাশ্যে লুটপাট ও সহিংসতা চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অভাব এবং দামের উর্ধ্বগতির কারণে ক্ষুব্ধ লোকজন গুদাম লুট করছে, খাদ্যবোঝাই ট্রাক ছিনতাই করছে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের খামারগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।

ভেনেজুয়েলান অবজারভেটরি ফর স্যোশাল কনফ্লিক্ট নামে কারাকাসের একটি অধিকার গ্রুপ জানিয়েছে, জানুয়ারির প্রথম ১১ দিনে দেশের ২৩টি রাজ্যের মধ্যে ১৯টিতে ১০৭টি লুটপাট ও কয়েকজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে এই সংখ্যাতে দেশজুড়ে হতাশার যে চিত্র তা পুরোপুরি বোঝা যাবে না। লুটপাটের কয়েকটি ঘটনা সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার দৈনিকগুলোর শিরোণাম হয়েছে-যা শিউরে ওঠার মতো।

মারগারিটা আইল্যান্ডে প্রায় অর্ধশত লোক একটি মাছ ধরার নৌকাকে সাগরে নামতে বাধ্য করেছে এবং ওই নৌকা দিয়ে তারা সার্ডিন মাছ ধরেছে। মারাকে শহরে কয়েকজন চোর একটি পশু হাসপাতাল থেকে দুটি গর্ভবতী ঘোড়া চুরি করেছে এবং মাংসের জন্য এগুলো জবাই করেছে। সম্প্রতি এক ভিডিওতে দেখা গেছে, পশ্চিমের রাজ্য মেরিদাতে একদল লোক একটি গরুকে পাথর মেরে তাড়িয়ে নিয়ে এসেছে এবং এটিকে হত্যা করেছে। এইসময় সেখানে দাঁড়ানো লোকজন স্লোগান দিচ্ছিল-‘জনতা ক্ষুধার্ত।’ পশ্চিমের শহর মারাকাইবোর বাসিন্দারা সম্প্রতি রাস্তায় ময়দা ও ক্যান্ডিভর্তি দুটি ট্রাক থামিয়ে সবকিছু লুটপাট করেছে।

এই লুটেরাদের একজন মারিওলি করনিলি স্থানীয় দৈনিক ডায়ারিও লা ভারদাদকে বলেছেন, ‘আমাদেরকে হয় লুটপাট করতে হবে নতুবা না খেয়ে মরতে হবে।’

এর আগেও ভেনেজুয়েলাতে লুটপাটের ঘ্টনা ঘটেছে। তবে সাম্প্রতিক এসব ঘটনা দেখে প্রতীয়মান হচ্ছে, এই দুরাবস্থা দীর্ঘমেয়াদি হবে এবং দেশটির অর্থব্যবস্থা পুরোপুরি ধসে পড়বে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এর জন্য বিরোধী দল ও বিদেশিদের দোষী করছেন। তবে তার সমালোচকদের দাবি, কলকারখানা ও কৃষি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি দখলে নেওয়ার ফলে এগুলোর উৎপাদন ব্যবস্থায় পুরোপুরি ধস নেমেছে। দরিদ্রদের কাছে স্বস্তায় পণ্য পৌঁছাতে যেয়ে উৎপাদিত দ্রব্যের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এর ফলে অনেক উৎপাদনকারী পন্য উৎপাদন থেকে সরে গেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ জানুয়ারি ২০১৮/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়