ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘উৎস চিহ্নিত করতে পারলে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব’

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২১ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘উৎস চিহ্নিত করতে পারলে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব’

দুর্নীতির বিরুদ্ধে আজ সকল মানুষ একাট্টা। যখন দেশের প্রতিটি পেশার মানুষ একটি বিষয়ের বিরুদ্ধে তখন তা থাকার কথা নয়। এখন দরকার সম্মিলিত প্রয়াস। আমরা চাই দুর্নীতি উৎসগুলো চিহ্নিত করতে। উৎস যদি বের করা যায়, তাহলে দুর্নীতিও বন্ধ করা সম্ভব।

এমনটিই মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। ২০১৬ সালের ১০ মার্চ দুদকের শীর্ষ পদে যোগদান করেন তিনি। প্রায় দেড় বছরের দায়িত্বে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত মোট ৫৬০ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছেন। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করতে পুলিশের ২০ সদস্যের স্বতন্ত্র আর্মস ইউনিট, দুদকের নিজস্ব হাজতখানা, দুদক হটলাইন ১০৬, রেকর্ড রুম নির্মাণ ও সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিট গঠনসহ বেশ কিছু নতুন সংযোজন হয়েছে তার আমলে।

বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ১৯৮১ ব্যাচের এই কর্মকর্তার সততা, দৃঢ়তা ও নিষ্ঠার খ্যাতি ছিল পুরো চাকরিজীবনে। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিবসহ দেশে-বিদেশে ২৪টি দপ্তরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে রাইজিংবিডিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে গুরুত্বপূর্ণ নানা বিষয় তুলে ধরেছেন দুদক চেয়ারম্যান। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন রাইজিংবিডির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এম এ রহমান (মাসুম)।

রাইজিংবিডি : দুদকের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুদকের আয়োজন কী ও কী মেসেজ থাকছে?
দুদক চেয়ারম্যান : প্রতিবছরই আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করে থাকি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এবারো মানুষের কষ্ট হয় সেরকম কোনো কর্মসূচি দেইনি। গতবারের মতো মানববন্ধন কিংবা র‌্যালির আয়োজন করা হয়নি। কারন র‌্যালি করলে রাস্তায় মানুষের অসুবিধা হয়। মানুষের বিন্দুমাত্র দুর্ভোগ হয় সেরকম অনুষ্ঠানে আমরা বাচ্চাদের রাখি না। তবে আমাদের নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধ করতে চাই, যা দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দমনে সহায়তা করবে। আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও একটা কথা জনগণকে বুঝাতে চাই- ‘দুর্নীতি করা ভালো না, দুর্নীতি করলে শাস্তি হবে।’

রাইজিংবিডি : একটি দেশের দুর্নীতি বন্ধে সবার আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও জনসম্পৃক্ততা। এক্ষেত্রে দুদক কতটুকু সহযোগিতা পাচ্ছে ?
দুদক চেয়ারম‌্যান : একটা কথা বলতে চাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আজ সকল মানুষ একাট্টা। আমাদের এখানে রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজসহ অনেক ব‌্যক্তিত্ব এসেছেন। সবার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে সবাই একবাক‌্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। শুধু আমরা নই, দেশের প্রতিটি মানুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আমার মন্তব‌্য হচ্ছে যখন দেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষ একটি বিষয়ের বিরুদ্ধে তখন তা থাকার কথা নয়। এখন দরকার সবার সম্মিলিত প্রয়াস। আপনি আপনার জায়গা থেকে কাজ করবেন, আমি আমার জায়গা থেকে কাজ করব। যদি সবাই বিশ্বাস করি আমরা দুর্নীতি করব না, তাহলে যার যার অবস্থান থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে। আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও এ আহ্বান থাকবে।

রাইজিংবিডি : দুদকের নতুন সংযোজন হটলাইন ১০৬। এ নিয়ে মানুষের অনেক প্রত‌্যাশা অনেক। এক্ষেত্রে  দুদক মানুষের প্রত‌্যাশা কতটুক পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে?
দুদক চেয়ারম‌্যান : আজ আমার কাছে দরপত্রসংক্রান্ত একটি অভিযোগ এসেছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, তার দর কম থাকা সত্ত্বেও তাকে দেওয়া হয় নাই। আমিও চাই এ ধরনের অভিযোগ আসুক। ১০৬ দুদক হটলাইন সে ধরনেরই প্লাটফর্ম। যাতে দুর্নীতি হওয়ার আগেই অভিযোগ করতে পারে। ১০৬ -এ অভিযোগ পাওয়ার পর আমাদের কর্মকর্তা সেখানে যাচ্ছেন। তাতে ঘটনা ঘটার আগেই প্রতিরোধ হচ্ছে। আর এটাই আমি চাচ্ছি। ঘটনা ঘটে গেলে কী হয়, আমরা শাস্তি দেই। কিন্তু আমরা চাই ঘটনা না ঘটুক।

রাইজিংবিডি : দুদক বর্তমানে দুর্নীতি দমনের চেয়ে প্রতিরোধের দিকে বেশি নজর দিচ্ছে। এর কারণ কী এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কতটুকু বাস্তবসম্মত?
দুদক চেয়ারম‌্যান : আমরা মূলত দমন নয়, সারাবছর আমরা একটা কাজই করতে চাই, সেটা হলো দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। আপনারা জানেন দুর্নীতি প্রতিরোধ আমাদের পাঁচ বছরের কৌশলপত্র রয়েছে। সেই কৌশলপত্রের মধ্যে আপনারাও রয়েছেন। সেই কৌশলটা সবার জন্যই। নাগরিক সমাজ, বিভিন্ন সংস্থা, রাজনীতিবিদ কিংবা মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আমরা সবাইকে নিয়ে এগোতে চাই। এই কৌশলপত্রের অংশ হিসেবে দুদকের ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করেছি। এর মধ্যে একটি মাত্র প্রাতিষ্ঠানিক টিমের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়া গেছে। আমরা চাই দুর্নীতি উৎসগুলো চিহ্নিত করতে। উৎস যদি বের করা যায়, তাহলে দুর্নীতিও বন্ধ করা সম্ভব।

এরই মধ্যে ভূমিসংক্রান্ত দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক টিমের প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আমাদের রিপোর্ট গ্রহণ করেছেন। আমাদের সুপারিশ যদি বাস্তবায়ন হয় তাতে দুর্নীতি কমার কথা। আশা করছি আগামী ছয় মাসের মধ্যে আরো ২৪টি প্রাতিষ্ঠানিক টিমের রিপোর্ট হাতে পাব। ওই প্রতিবেদনের সুপারিশ যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাতে আশা করছি দুর্নীতি অনেক কমে যাবে।

রাইজিংবিডি : বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেসিক ব‌্যাংক দুর্নীতি বেশ আলোচিত। এ বিষয়ে ৫৬টি মামলা হয়েছে জেনেছি। ব‌্যাংকটির প্রাক্তন চেয়ারম‌্যানসহ পরিচালনা পর্ষদের বিষয়ে আদালতের বেশি কিছু নির্দেশনা রয়েছে। দুদকের সর্বশেষ অবস্থান কী ?
দুদক চেয়ারম‌্যান : বেসিক ব‌্যাংকের বিষয়ে আমি কর্মকর্তাদের বলে দিয়েছি তদন্তের প্রয়োজনে শুধু পরিচালনা পর্ষদ নয়, যে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। আমরা লিখিতভাবে তাদেরকে জানিয়েছি। চেয়ারম‌্যানসহ পরিচালনা পর্ষদের যাকে দরকার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে। এক্ষেত্রে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তাদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি।
 


রাইজিংবিডি : সদ‌্য প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বেশ আলোচিত বিষয়। এ বিষয়ে দুদকে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে কি না ? এ বিষয়ে কিছু বলুন।
দুদক চেয়ারম‌্যান : আপনি স্পেসিফিক যদি কারো ব্যাপারে বলেন, এর উত্তর দেব না। আমার কথা হচ্ছে, স্পেসিফিক কারো ব্যাপারে জিজ্ঞাসা না করাটাই ভালো। দুর্নীতি যারই হোক না কেন আমরা তা অনুসন্ধান করব। সুনির্দিষ্ট করো কথা বললে আমি এ বিষয়ে মন্তব‌্য করব না। দুদক কারো কথায় সিদ্ধান্ত নেয় না। দুদক তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আমরা দুর্নীতির অনুসন্ধান করব। এটা আমাদের বড় দাগের উত্তর।

রাইজিংবিডি : পানামা পেপার্স ফাঁসের পর এবার প্যারাডাইস পেপার্স ফাঁসের ঘটনা ঘটলো। প‌্যারাডাইস পেপার্সে বেশ কিছু বাংলাদেশির নাম এসেছে, এ বিষয়ে দুদক পদক্ষেপ নিবে কি না?
দুদক চেয়ারম‌্যান : পানামা পেপার্সের কাজ আমরা এখনো শেষ করতে পারিনি। মানুষের মনে একটি ধারণা থাকতে পারে- এতদিন ধরে দুদক কী করছে। সমস্যা হচ্ছে মানিলন্ডারিং যখন হয় তখন হুট করে কারো কাছে তথ্য পেলে তা পাওয়া যায় না। একটা আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে যেতে হয়। এটাকে বলে এমএলএআর (মিচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসটেন্ট রিকোয়েস্ট) পাঠানো। আমরা এটি একাধিকবার পাঠিয়েছি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত উত্তর পেলেনি। এটা এমনও হয়েছে সাত বা আট বছর হয়েছে উত্তর পেতে। আমরা্ অ্যাটর্নি জেনারেল বা বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বারবার তাগিদ দেই। আবার অনেকে উত্তর দিচ্ছে যে, উনি ওই দেশের নাগরিক। এসব নিয়ে আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করছি।

প্যারাডাইস পেপারসের বিষয়টি মাত্র হাতে পেলাম। আমি যাচাই-বাছাই করার জন্য পাঠিয়েছি। আলোচনা করে পরবর্তীকালে সিদ্ধান্ত নেব। দুদক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত না নিলেও সরকারের অন্যান্য সংস্থা যাতে বিষয়টি তদন্ত করে তা নিশ্চিত করা হবে।

রাইজিংবিডি : বর্তমান সময়ে আলোচিত আর একটি বিষয় হচ্ছে কোচিং বাণিজ‌্য। আমরা জানি দুদক কোচিং বাণিজ‌্য বন্ধ করার জন‌্য উদ‌্যোগ গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে  আপনার বক্তব‌্য কী? 
দুদক চেয়ারম‌্যান : শিক্ষা ব্যবস্থায় কোচিং ব্যবস্থা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কোচিং নামের এই ক্যাপসুল শিক্ষায় চলতে দেওয়া যায় না। আমরা এটা চাই না। যদিও কোচিং বন্ধের কাজ আমাদের না। কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ করা আমাদের দায়িত্ব। শিক্ষকরা ক্লাস না করিয়ে কোচিংয়ে সময় দেন, সেটা দুর্নীতি। আমার সন্তানকে সিলেবাস অনুসারে শিক্ষা দেন না, সেটা দুর্নীতি। এমনও তথ্য রয়েছে যে বাচ্চা কোচিং করেন না, তাকে নম্বর কম দেওয়া হয়। এগুলো কি দুর্নীতি নয়? আমি জানি না সরকারের সিদ্ধান্ত কী। কোচিং অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

কিছু সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর তৈরি করে ভালো ফলাফল করানোর মতো এ শিক্ষাব্যবস্থা আমি চাই না। অভিভাবক হিসেবে আমি চাই আমাদের আগামী প্রজন্ম যথাযথ শিক্ষার মাধ্যমে বেড়ে উঠুক। এই দেশের দায়িত্ব নেওয়ার মতো যোগ্যতা অর্জন করুক।

রাইজিংবিডি : সরকারি অফিসে সেবা প্রাপ্তিতে জনগণ সাধারণত হয়রানির শিকার হয়ে থাকে। সেবার মান কতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
দুদক চেয়ারম‌্যান : সরকারি সেবার মান  নিয়ে আমারও অভিযোগ রয়েছে। যেমন সচিবলায়ের কথা ধরেন। সচিবলায় নির্দেশনামা রয়েছে। সচিবলায়ের কতজন কর্মকর্তা ওই নির্দেশনামা মেনে ঠিক সময়ে ফাইলের কাজ সম্পন্ন করছেন তা কি আপনারা জানেন। আপনারা খতিয়ে দেখুন। আমরা সেদিকেই নজর দিতে চাই। সচিবালয় থেকে মাঠপর্যায় পর্যন্ত সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সিটিজেন চার্টারে যে সময় বেঁধে দেওয়া আছে, সে অনুসারে ফাইল ছেড়ে দেবেন আমরা সেটাই চাই। সার্ভিস ডেলিভারি আপনার দায়িত্ব, আর সার্ভিস পাওয়া জনগণের অধিকার।

রাইজিংবিডি : সরকারি সেবার মানবৃদ্ধিতে বেশ কিছু দিন ধরে দুদক গণশুনানি আয়োজন করে আসছেন। দুর্নীতি প্রতিরোধে গণশুনানি কতটা কার্যকর?
দুদক চেয়ারম‌্যান : গণশুনানি আয়োজনের কারণে এখন সরকারি কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এটা ইতিবাচক বিষয়। আমরা এখন গণশুনানির ফলোআপ করছি। আগে গণশুনানির ফলোআপ ছিল না। এখন আমরা ফলোআপ করছি। আমরা ছেড়ে দিব না। যে অভিযোগের নিষ্পত্তির কথা তার অবশ‌্যই নিষ্পত্তি করতে হবে।

রাইজিংবিডি : পুলিশের সেবা নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করবেন কি না?
দুদক চেয়ারম‌্যান : পুলিশকে নিয়ে গণশুনানি হতে পারে। তবে শুধু পুলিশকে নিয়ে তো গণশুনানি হয় না। পুলিশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে করা যেতে পারে।

রাইজিংবিডি : আমরা অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি দুদক থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিভাগীয় ব‌্যবস্থাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করে। কিন্তু  আমরা জানি অনেক ক্ষেত্রে ওই সুপারিশ বাস্তবায়ন বা অনুসরণ করা হয় না। এ বিষয়ে আপনার বক্তব‌্য কী?
দুদক চেয়ারম‌্যান : আমরা মনে করি সুপারিশ মানা হয়। যেমন ধরেন আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছিলাম ফেল করা কোনো ছাত্র-ছাত্রীকে পদোন্নতি দেওয়া যাবে না। এটা মানা হয়েছে। টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের পরবর্তী ক্লাসে উঠানো হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের সুপারিশের প্রতিটি লাইন সকল স্কুলকে জানিয়ে দিয়েছে। তাই মানা হয় না, এটা ঠিক না। আমরা মনে করি মানা হয়।

রাইজিংবিডি : বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে দুর্নীতি কমেছে না বেড়েছে। আপনি কী মনে করেন?
দুদক চেয়ারম‌্যান : আমি বড় দাগেই বলতে পারি দুর্নীতি কমেছে। টিআইবি রিপোর্টেও এর সত্যতা মিলেছে। এমনকি বর্তমান সময়ে সরকার বা মন্ত্রণালয়ের মানসিকতা অনেক পরিবর্তন হয়েছে। শুধু তাই নয় মানুষের মধ‌্যেও অনেক পরিববর্তন হয়েছে।

রাইজিংবিডি : আপনি প্রায়ই বলে থাকে দুদকে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। এ অভাব কতটুকু কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন?
দুদক চেয়ারম‌্যান : দুদকে এখনো দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। এটা কাটিয়ে ওঠা সহজ ব‌্যাপার নয়। সারা দেশেইতো দক্ষ জনবলের অভাব। দক্ষ জনবলের অভাব সব জায়গায় রয়েছে। এত ডিগ্রিধারী, কিন্তু দক্ষ জনবলের যথেষ্ট অভাব। এর মূল কারণ হচ্ছে আমাদের শিক্ষার নতুন নতুন সংস্করণ। যদিও আমি শিক্ষাবিদ নই। সে কারণে শিক্ষাব‌্যবস্থার দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের পদক্ষেপ।

রাইজিংবিডি : রাইজিংবিডির পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আপনাকে অভিনন্দন।
দুদক চেয়ারম্যান : আপনাকেও ধন্যবাদ। অনলাইন হিসেবে রাইজিংবিডি ভালো করছে। রাইজিংবিডির জন্য শুভ কামনা।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ নভেম্বর ২০১৭/এম এ রহমান/সাইফুল/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়