ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি : ঠিকাদার চপল কারাগারে

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ১৬ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি : ঠিকাদার চপল কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক : হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের মামলায় ঠিকাদার খাইরুল হুদা চপলকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে সুনামগঞ্জের স্টেশন রোডের মেসার্স নূর ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী খাইরুল হুদা চপলকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

খাইরুল হুদা চপল সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি চপল রাতে একটি ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে যান।

বুধবার সকালে মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমেদ আসামিকে নিয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ২ জুলাই হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে সিলেট-সুনামগঞ্জ অঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

ওই দিনই মামলার আসামি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরখাস্তকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দীন ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইব্রাহিম ট্রেডার্স অ্যান্ড শামিম আহসানের স্বত্বাধিকারী মো. বাচ্চু মিয়াকে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলারে এজাহারে অভিযোগ করা হয়, প্রতিবছর বন্যা আসার সময় ও আশঙ্কা সম্পর্কে অবহিত থাকার পরও তারা পরস্পর যোগসাজশে মৌলিক চুক্তি ভঙ্গ করেছে। ওই চুক্তিতে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের অসমাপ্ত ৮৪টি প্যাকেজের বাঁধ নির্মাণ শেষ করতে ঠিকাদারদের অনুমতি দেওয়া হয়। পরে আর দরপত্র আহ্বান না করে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে আগের ঠিকাদারদেরই ১৬০টি প্যাকেজে নতুন কাজ দেওয়া হয়। নতুন প্যাকেজের মধ্যে নয়টির কাজ শুরু না করে এবং ১৫১টি প্যাকেজের কাজ আংশিক সম্পন্ন করার মাধ্যমে অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ভবিষ্যতে প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করার সুযোগ সৃষ্টি করেন আসামিরা।

মামলার আসামিদের মধ্যে ১৫ জন সিলেট বিভাগ ও সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা। বাকি ৪৬ জন ঠিকাদার।

পাউবো কর্মকর্তাদের মধ্যে আফছার উদ্দীন ছাড়া বাকিরা হলেন- সিলেট অঞ্চলের বরখাস্তকৃত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নূরুল ইসলাম সরকার, সিলেট উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বরখাস্তকৃত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হাই, সুনামগঞ্জ জেলা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস, সুনামগঞ্জের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী খলিলুর রহমান।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জের সেকশন কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লা, ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ খান, খন্দকার আলী রেজা, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. শাহ আলম, মো. বরকতউল্লাহ ভূঁইয়া, মো. মাহমুদুল করিম, মো. মোছাদ্দেক, সজীব পাল ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।

আসামিদের মধ্যে ৪৬ ঠিকাদার হলেন- মো. আফজালুর রহমান, খন্দকার শাহীন আহমেদ, মো. জিল্লুর রহমান, সজীব রঞ্জন দাস, পার্থ সারথী পুরকায়স্থ, হান্নান আহমেদ, খাইরুল হুদা চপল, কামাল হোসেন, কাজী নাজিমুদ্দিন, খন্দকার আলী হায়দার, মো. আকবর আলী, মো. রবিউল আলম, মো. আবুল হোসেন, শিবব্রত বসু, মোজাম্মেল হক মুন, মো. বাচ্চু মিয়া, শেখ মো. মিজানুর রহমান, আবুল মহসীন মাহবুব।

এ ছাড়া ঠিকাদার বিপ্রেশ তালুকদার বাপ্পি, মো. জামিল ইকবাল, চিন্ময় কান্তি দাস, নিয়াজ আহমেদ খান, মিলন কান্তি দে, খান মো. ওয়াহিদ রনি, মো. সোয়েব আহমেদ, মো. ইউনুস, মো. আব্দুল কাউয়ুম, মো. আতিকুর রহমান, মো. গোলাম সরোয়ার, মো. খাইরুজ্জামান, মো. মফিজুল হক, মোখলেছুর রহমান, নুরুল হক, মো. রেনু মিয়া, মো. শাহরিন হক মালিক, শামসুর রহমান, আব্দুল মান্নান, মোকসুদ আহমেদ, মো. সাইদুল হক, মো. মাহতাব চৌধুরী, কাজী হাসিনা আফরোজ, শেখ আশরাফ উদ্দিন, লুৎফুল করিম, মো. কেফায়েতুল্লা, হুমায়ুন কবির ও ঠিকাদারের সহযোগী মো. ইকবাল মাহমুদও এই মামলার আসামি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ আগস্ট ২০১৭/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়