ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘হাতে জীবন নিয়ে আদালতে আসি’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২০, ২২ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘হাতে জীবন নিয়ে আদালতে আসি’

নিজস্ব প্রতিবেদক : বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার এক তরুণীর মা জানিয়েছেন, এমনিতেই মামলাটিতে এক এক করে আসামিরা জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। হাতে জীবন নিয়ে আদালতে আসি। আর যে আসামি কারাগারে রয়েছেন, তিনি জামিন পেলে তাদের জীবন আরও সংশয়ে পড়বে।

মঙ্গলবার মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ না হওয়ায় ক্ষোভ ও সংশয় প্রকাশ করে ওই তরুণীর মা বলেন, ‘সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য তার মেয়েকে বারবার ট্রাইব্যুনালে এনে হয়রানি করা হচ্ছে। এছাড়া একে একে আসামিরা জামিন পাওয়ায় মেয়েকে নিয়ে ভয়ে জীবন কাটাচ্ছেন।’

এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানির শুরুর আগেই ধর্ষণের শিকার এক তরুণী ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য উপস্থিত হন। এদিন এ সাক্ষীকে আসামি নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিমের পক্ষে জেরা করার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু তখন ওই আসামির আইনজীবী এবিএম খায়রুল ইসলাম লিটন ট্রাইব্যুনালে অনুপস্থিত ছিলেন। তখন ওই আইনজীবীকে প্রসিকিউটর ফোন দিয়ে জানতে পারেন তিনি মামলা ছেড়ে দিয়েছেন। তখন আসামি নাঈম আশরাফ মৌখিকভাবে সময় আবেদন করলে ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. খাদেম উল কায়েস আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের নতুন তারিখ ঠিক করেন।

ওই সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ও বিশেষ পিপি মো. লিয়াকত আলী এবং ভিকটিমের পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ বিচারককে বলেন, গত ধার্য তারিখে দাখিল করা আসামি সাফাতের জামিন বাতিলের একটি আবেদন ছিল। অন্যদিকে ওই আসামির আইনজীবী মো. হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা জামিন স্থায়ীর আবেদন করেন। ওই সময় বিচারক বলেন, তিনি দেখে আদেশ দেবেন।

শুনানিকালে জামিনে থাকা আসামি আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে কারাগারে থাকা আসামি নাঈম আশরাফকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে আসা ভিকটিম ও তার মা বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, সাক্ষ্য দিতে এ নিয়ে ৫ দিন তার মেয়েকে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসলেন। দুইদিন সাক্ষ্য হয়নি। এভাবে বার বার তারা ট্রাইব্যুনালে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

তিনি বলেন, মামলাটিতে এমনিতেই এক এক করে আসামিরা জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। হাতে জীবন নিয়ে আদালতে আসি। আর যে আসামি কারাগারে রয়েছেন তিনি জামিন পেলে তাদের জীবন আরও সংশয়ে পড়বেন। মেয়ে নতুন একটি জবে ঢুকেছেন। তিনি নিজেও ঢাকার বাইরে চাকরি করেন। এভাবে মাসে ৩/৪ বার তাদের পক্ষে কিভাবে ট্রাইব্যুনালে আসা অসম্ভব বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৯ নভেম্বর সাফাত আহমেদের জামিন মঞ্জুর করেন একই বিচারক। এর আগে বিভিন্ন সময় অপর আসামিরা জামিন পেয়েছেন। ২০১৭ সালের ১৩ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জ গঠন করেন। মামলাটিতে ওই বছর ৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জানুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়