ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অফিসে গান শুনলে কর্মদক্ষতা বাড়ে!

নিয়ন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ১২ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অফিসে গান শুনলে কর্মদক্ষতা বাড়ে!

প্রতীকী ছবি

নিয়ন রহমান : অনেকেই এমনটা ভেবে থাকেন যে, গান শুনলে মন ভালো থাকে। আবার কেউ কেউ এটাও মনে করেন যে, গান তাদের আরো বেশি কার্যক্ষম করে তুলে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, এটা কি আসলেই সত্যি?

হ্যাঁ, ব্যাপারটা আসলেই সত্যি। অনেক গবেষণায় এটা উঠে এসেছে যে, অফিসে কাজের ফাঁকে গান শুনলে মনে বেশ উৎফুল্লতা চলে আসে এবং নতুন নতুন তথ্য খুব সহজে ধারণ করা সম্ভব হয়ে যায়।

‘গান শোনা’ এবং ‘কাজ করা’ দুটো আদলে আলাদা কাজ এবং আপাতদৃষ্টিতে দেখতে পরস্পর বিরোধী বলেই মনে হয়। তাহলে এদের মধ্যে সাদৃশ্যতা কোথায়?

মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর টেরেসা বলেন, ‘সাধারণত নিজের পছন্দমতো গান শোনার এবং মনের উৎফুল্লতা- দুটো একে অপরের সঙ্গে খুবই সম্পৃক্ত। আর প্রফুল্ল মনের সঙ্গে কার্যক্ষমতার জোরালো সম্পর্ক রয়েছে। আর এভাবেই সুস্থ ও সুন্দর মন অনেক পজিটিভ এবং বেশি বেশি কাজে মনোনিবেশ করতে পারে।’

এই প্রফেসর আরো বলেন, ‘এছাড়াও আপনি দেখবেন। আপনি যখন অনেক ভালো একটা মুডে থাকেন তখন যেকোনো সমস্যা আপনি খুব দ্রুত করে ফেলতে পারছেন। কারণ আপনি তখন মনকে কেন্দ্রীভূত করতে পারছেন।’

সুতরাং গান শোনা আপনাকে শুধুমাত্র কার্যক্ষমই করে তুলে না বরং আপনার উদ্ভাবন ক্ষমতাকে আরো জোরালো করে তুলে আপনাকে করে দেয় অনেক সৃজনশীল। তবে এটা ঠিক যে, বেসুরো গান এবং দ্রুত তালের গান মনকে আরো বিক্ষিপ্ত করে তুলতে পারে। অফিসে যদি আপনাকে এমন কোনো গান শুনতে হয়, যে গান আপনি একটুও পছন্দ করেন না তখন কিন্তু এর ফলাফল ভিন্ন রকমের হয়ে উঠতে পারে।



মায়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মিউজিক প্রফেসর টেরেসা তার রিসার্চে এটা খুঁজে পান যে, কাজের ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি শুধুমাত্র তখনই কার্যকরী যখন সেই কাজে সে একদমই নতুন। অর্থাৎ, কেউ যদি ইতোমধ্যেই কোনো কাজে খুবই পারদর্শী হয়ে উঠে তবে তার মানসিক অবস্থা খুব বেশি খারাপ না হলে সে একই রকম উৎপাদন করবে। এর মধ্যে কোনো তারতম্য ঘটবে না। টেরেসা বলেন, ‘কেউ যদি কাজে একদম নতুন যোগ দেয় এবং যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষ হয়ে উঠতে পারেনি তার ক্ষেত্রে অফিসে বসে গান শোনাটা বেশি কার্যকরী হবে।’

বর্তমানে বেশ কিছু কোম্পানি এটা নিয়ে বেশ কাজ করে যাচ্ছে যাতে এমন কোনো মিউজিক তৈরি হয়, যাতে করে স্নায়ুর বিশেষ বিশেষ অংশ প্রভাবিত হবে এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করবে।

ইতোমধ্যে ‘ফোকাস এট উইল’ নামে একটি অ্যাপ্লিকেশন আছে যেটা স্নায়ুর ওপর প্রভাব ফেলে এমন গান উৎপাদন করছে। এই গানগুলো বিশেষ ভাবে তৈরি করা, যাতে করে কাজের মধ্যে এসব গান শুনলে মন প্রফুল্ল থাকে এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।

করোনেল বিশ্ববিদ্যালয়য়ের একটি গবেষণায় দেখা যে, স্নায়ুর ওপরে প্রভাব ফেলে এমন গান অথবা সুর, অনুভূতিকে কেন্দ্রীভূত করতে সাহায্য করে। এ ধরনের গান ও সুর মানুষকে আরো কার্যদক্ষ এবং সৃজনশীল করে তুলে। সুতরাং এই ধরনের গান ও সুর অফিসের কাজের ফাঁকে আপনার জন্য বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।

এখন অফিসে কাজের মধ্যে গান শুনতে যদি আপনার আগে থেকেই ভালো লাগে তাহলে আপনার এই অভ্যাস আরো মজবুত ভিত্তি পেয়ে গেল। গান সাধারণত শুনতে ভালো লাগে এমনই নয়, গান আপনার মন ভালো রাখে। আপনি আরো অনেক সহজ ও সুন্দর ভাবে আপনার কাজ করতে পারবেন অফিসে।

এখন যদি আপনার বস এসে আপনাকে কান থেকে হেডফোন খুলে কাজে মনযোগী হতে বলে তাহলে উনাকে বলুন, ‘আপনি অমনোযোগী নন বরং আরো মনোযোগী হওয়ার জন্যই গান শুনছেন।’

তথ্যসূত্র : ফিউচারিজম



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ এপ্রিল ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়