ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মার্সেল ফ্রিজ সাজালো মিলন-রাজিয়ার সংসার

অগাস্টিন সুজন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ২১ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মার্সেল ফ্রিজ সাজালো মিলন-রাজিয়ার সংসার

মার্সেলের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারে কেনা পণ্যসহ মিলন-রাজিয়া দম্পতি

জাকির হুসাইন : ঢাকা ইপিজেডে কাজ করেন মিলন হোসেন ও রাজিয়া সুলতানা দম্পতি। বছর তিনেক আগে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তারা। ঘরে কোনো প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য নেই। দুজনেই চাকরি করেন বলে অন্তত একটি ফ্রিজ না হলে চলছিল না।

গত শুক্রবার একটি মার্সেল ফ্রিজ কেনেন এই দম্পতি। সেই ফ্রিজই প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্যে সাজিয়ে দিল মিলন-রাজিয়ার সংসার।

মার্সেল ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের আওতায় লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন মিলন-রাজিয়া। এই দম্পতির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিলনের বাড়ি নওগাঁ জেলার সদর থানায়। আর রাজিয়া সুলতানার বাবার বাড়ি রংপুরের পীরগাছায়। ৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। দুজনেরই কর্মস্থল ঢাকার ইপিজেডে। এ কারণে আশুলিয়ার শ্রীপুরে ভাড়া বাসায় থাকছেন তারা। নতুন সংসার সাজাতে একটু সময় লেগেছে। এক এক করে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনছেন। এর ধারাবাহিকতায় ফ্রিজের দরকার হয় তাদের। স্বামী-স্ত্রী দুইজনেরই পছন্দ ছিল ওয়ালটন ফ্রিজ। বাসার কাছেই মার্সেলের শোরুম। তা ছাড়া এই দুই দেশীয় ব্র্যান্ডের পণ্যের গুণগত মান সর্বাধিক হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে মার্সেল ফ্রিজই কেনেন।

মিলন বলেন, ‘২ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে আমি তৃতীয়। বাবা-মা সবাই গ্রামের বাড়িতে থাকেন। চাকরির কারণে আশুলিয়ায় থাকছি। এখনো সন্তান হয়নি। তাই দুই জনের ছোট-খাটো সংসার। তবে সংসার ছোট বড় ফ্যাক্টর নয়। ফ্রিজ এখন সব পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয়। তা ছাড়া দুজনেই চাকরি করায় আমাদের জন্য ফ্রিজ আরো জরুরি ছিল।

মিলন জানান, গত ১৭ নভেম্বর তারা ফ্রিজ কেনার সিদ্ধান্ত নেন। কী ফ্রিজ কিনবেন এমন প্রশ্ন আসার সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী জানান ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফ্রিজ সবচেয়ে ভালো। গ্রামে সবার বাড়িতে ওয়ালটন ফ্রিজ। অফিসের সহকর্মীরাও ওয়ালটনের ফ্রিজ কেনার পরামর্শ দেয়। সব মিলিয়ে মিলন-রাজিয়া ঠিক করেন ওয়ালটন ফ্রিজ কিনবেন। তবে ঘরের কাছে মার্সেলের শোরুম। তাই আগে সেখানেই যান তারা।

তিনি বলেন, ‘সেখানে গিয়ে মার্সেল কর্মকর্তাদের ব্যবহারে আমরা মুগ্ধ হই। জানতে পারি ওয়ালটনের মতো মার্সেলের পণ্যও গুণগতমানে সেরা। এরপরই সিদ্ধান্ত পাল্টাই। ওই শোরুম ঘুরে অনেক যাচাই-বাছাই করে ২২ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে সাড়ে ১৫ সিএফটির একটি মার্সেল ফ্রিজ কিনি। যা আমাদের ভাগ্যের দুয়ার খুলে দেয়। আমরা পেয়ে যাই ১ লাখ টাকার ভাউচার।’

রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘মার্সেল পণ্য কিনলে এ ধরনের পুরস্কার পাওয়া যাবে বলে আগে কখনো শুনিনি। ফ্রিজ কেনার সময় কর্মকর্তরাই আমাদের জানান মার্সেল পণ্য কিনলে লাখ আমাদের জানা ছিল না। আমরা তাদের কথাকে তখন গুজব বলে ভেবেছিলাম। কারণ জীবনে কেউ কোনোদিন এমন কিছু পেয়েছে বলে শুনিনি। ফলে তাদের কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে আমাদের পছন্দের ফ্রিজটি যেনো ভালো হয়, এতটুকু চেয়েছিলাম। ফ্রিজ কেনার পর আমাদের মোবাইল নম্বরসহ কেনা পণ্যের বিবরণ দিয়ে কোথায় যেনো মেসেজ পাঠান কর্মকর্তারা। এরপর ফিরতি মেসেজ আসে আমাদের মোবাইলে। মেসেজ খুলে দেখি ১ লাখ টাকার ভাউচার। তখন মনে করেছিলাম আমাদের সঙ্গে হয়তো কেউ তামাশা করছে।’
 

মিলন-রাজিয়ার হাতে মার্সেলের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য পণ্য তুলে দেওয়া হচ্ছে


মিলন বলেন, মেসেজ দেখেও আমাদের বিশ্বাস হয় না। তখন মার্সেল কর্মকর্তারা আমাদের জানান ওই শোরুম থেকে এর আগের সপ্তাহে আমাদের মতো আরেকজনও লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছিলেন। তাদের পণ্য বুঝে দেওয়ার ছবি দেখালে আমাদের বিশ্বাস হয়। তারা আমাদের পছন্দের পণ্য নেওয়ার জন্য পরের দিন আসতে বলেন।’

রাজিয়া বলেন, ‘বিশ্বাস করেন পুরস্কার পাওয়ার খবর শোনার পর থেকে মনের মধ্যে কেমন যেন অস্থিরতা আসে। সেদিন রাতে ঘুমও আসেনি। সারা রাত শুধু ভেবেছি। এটা কি সত্য কোনো ঘটনা। নাকি তারা মজা করছেন। পরে ভাবলাম সকালে শোরুমে যেতে বলেছে, গিয়েই দেখি কী হয়। শোরুমে যাওয়ার পর দেখি মার্সেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদের আগেই চলে এসেছেন। তারা আমাদের অভিবাদন জানান। তারা যখন লাখ টাকার সমমূল্যের পণ্য আমাদের হাতে তুলে দেন, তখন আমাদের সব সংশয়ের অবসান ঘটে।’

মিলন বলেন, ‘লাখ টাকার পণ্য হাতে পেয়ে আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। তখন আমরা এতো খুশি হয়েছিলাম, যা জীবনে আর কখনো হইনি। তখনকার অনুভূতির কথা আমরা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। পণ্য বুঝে পাওয়ার পর আমাদের সব আত্মীয়-স্বজনদের ফোন করে জানাই। তারাও সবাই খুশি। এমনকি আমার বড় দুলাভাই পুরস্কার পাওয়ার আশায় গ্রাম থেকে ঢাকার শোরুমে এসে মার্সেল পণ্য কিনতে চায়। তবে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা বলেন, এখানে আসার দরকার নেই। বাংলাদেশের সব প্রান্তে মার্সেল ও ওয়ালটন শো-রুমগুলোতে এমন পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।’

রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে আমার নতুন সংসারের প্রায়োজনীয় সব ধরনের পণ্য নিয়েছি। এর মধ্যে টিভি, রাইস কুকার, মোবাইল ফোন, প্রেসার কুকারসহ অনেক কিছু। তবে জীবনে প্রথম এতবড় পুরস্কার পাওয়া। তাই এটাকে স্মরণীয় করে রাখতে আমার বাবার বাড়িতে এবং শ্বশুর বাড়িতে একটি করে ফ্রিজ উপহার দেওয়ার জন্য আরো ২টি ফ্রিজ নিয়েছি।’

মার্সেল সম্পর্কে মিলন হোসেন বলেন, ‘আমাদের গ্রামে যাদের বাড়িতে ইলেকট্রনিক্স পণ্য আছে। তার বেশিরভাগই দুই দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেল ও ওয়ালটনের। মার্সেলের পণ্য ব্যবহার না করলেও আমার হাতে মোবাইলটা ওয়ালটনের। তা ছাড়া, গত দুই বছর ধরে একটি ওয়ালটনের মনিটর ব্যবহার করছি। দারুণ সার্ভিস দিচ্ছে। আমরা আশা করছি মার্সেল থেকেও ভালো সার্ভিস পাব। আমি ও আমার স্ত্রী মার্সেলের সাফল্য কামনা করছি।’

মার্সেল সূত্রে জানা গেছে, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। মার্সেল প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ নভেম্বর ২০১৭/অগাস্টিন সুজন/এসএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়