ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সাংবাদিক নির্মল সেনের ৮৮তম জন্মদিন

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:১৫, ৩ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাংবাদিক নির্মল সেনের ৮৮তম জন্মদিন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : বিশিষ্ট সাংবাদিক ও রাজনীতিক নির্মল সেনের ৮৮তম জন্মদিন আজ। ১৯৩০ সালের ৩ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামে তার জন্ম। তিনি বাম রাজনীতিরও পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক।

এ উপলক্ষে আজ নির্মল সেন জন্মদিন উদযাপন পরিষদ কেক কাটা ও আলোচনা সভাসহ গ্রামের বাড়িতে প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, কোটালীপাড়ায় গ্রামের বাড়ি দীঘিরপাড়ে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

নির্মল সেনের বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ও মাতার নাম লাবণ্য প্রভা সেনগুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম। ১৯৪৬ সালে নির্মল সেনের পিতা-মাতা অন্য ভাই বোনদের সঙ্গে নিয়ে কলকাতা চলে যান। জন্মভূমির প্রতি অকুণ্ঠ ভালবাসার কারণে তিনি এদেশে থেকে যান।

নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলায় তার পিসির বাড়িতে। ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে ম্যাট্রিক পাস করেন। পিসির বাড়িতে যাওয়ার আগে নির্মল সেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জিটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে এক বছর লেখা পড়া করেন। তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও এমএ পাস করেন।

নির্মল সেনের রাজনীতিক জীবন শুরু হয় ভারত ছাড়ো আন্দোলনের মাধ্যমে স্কুল জীবন থেকে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। তিনি দীর্ঘদিন শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সভাপতি ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে।

দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় সাংবাদিকতার মধ্যে দিয়ে নির্মল সেন তার সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেন ১৯৫৯ সালে। তারপর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিষয়ে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন।

লেখক হিসেবেও সুনাম রয়েছে নির্মল সেনের  । তার লেখা ‘পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ’, মানুষ সমাজ রাস্ট্র’, বার্লিন থেকে মস্কো’, মা জন্মভূমি’, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’, আমার জীবনে ৭১-এর যুদ্ধ’ ও  ‘আমার জবানবন্ধী’ উল্লেখযোগ্য।

নির্মল সেন ২০০৩ সালে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সিঙ্গাপুরে ৫৯ দিন চিকিৎসার পর অর্থাভাবে তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়।

২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৮ দিন চিকিৎসার পর ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি  নির্মল সেন মারা যান। মৃত্যুর আগে নির্মল সেন তার দেহ পিজি হাসপাতালে দান করে যান। নিজ গ্রামের বাড়িতে একটি মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা দান করে যান।

নির্মল সেনের ভাতিজা রতন সেন কঙ্কন জানান, সাংবাদিক নির্মল সেন স্মৃতি সংসদ কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ হল রুমে কেক কাটা, আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ নির্মল সেনের জন্মদিন পালন করবে।



রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/আগস্ট ২০১৭/বাদল/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়