ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মানিক সাহা হত্যার নেপথ্য নায়কদের মুখোশ উন্মোচন দাবি

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মানিক সাহা হত্যার নেপথ্য নায়কদের মুখোশ উন্মোচন দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : মানিক সাহা হত্যার পুনঃতদন্ত দাবি করে বিশিষ্টজনরা বলেছেন, মুক্ত গণমাধ্যম চর্চা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রকৃত খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। হত্যার নেপথ্য নায়কদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা মানিক সাহার চতুর্দশ মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে সোমবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘মানিক সাহা হত্যার বিচারপ্রত্যাশী সংক্ষুব্ধ সমাজ’ এই সভার আয়োজন করে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের সভাপতিত্বে ও পিটিবিনিউজ ডটকমের প্রধান সম্পাদক আশীষ কুমার দের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় আলোচনা করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভুঁইয়া, মানবাধিকারকর্মী জালালউদ্দিন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, চ্যানেল ২৪-এর সম্পাদক (কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স) রাহুল রাহা, নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া, ন্যাপ নেতা ইসমাইল হোসেন, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব অমিয় ঘটক পুলক ও কালের কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নিখিল ভদ্র।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মানিক সাহা ছিলেন একজন নীতিনিষ্ঠ সাংবাদিক ও খাঁটি দেশপ্রেমিক। সাম্প্রদায়িকতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বুর্জোয়া শাসক শ্রেণির শোষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে সাংবাদিকতা করে গেছেন তিনি। মৃত্যুর হুমকি পেয়েও চলার পথ থেকে বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। তার এ বীরোচিত আত্মদান সাহসী সাংবাদিকতার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে এবং ন্যায়বিচার ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের মনে সাহস যোগাবে।

রাজেকুজ্জমান রতন বলেন, মানিক সাহার শারীরিক মৃত্যু হলেও কাপুরুষরা তার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। কর্মগুণে অনন্তকাল আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন তিনি। তার বর্বরোচিত হত্যার পরিকল্পনাকারী ও অর্থের যোগানদাতাসহ নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করার দাবি জানান তিনি।

আব্দুল জলিল ভুঁইয়া বলেন, মানিক সাহা মৌলবাদসহ সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে লেখনীর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, তাদেরকে রুখে দাঁড়ানোর সাহস জুগিয়েছেন। এ কারণে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাই স্বাধীন মতপ্রকাশ এবং মুক্ত সাংবাদিকতা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে মানিক সাহা হত্যার ন্যায়বিচার অপরিহার্য। সেজন্য চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত ও বিচার হওয়া প্রয়োজন।

২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের অদূরে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নৃশংসভাবে নিহত হন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অকুতোভয় সাংবাদিক, মানবাধিকার ও পরিবেশকর্মী, সামরিক-স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বারবার কারা নির্যাতিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা মানিক সাহা। মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত দৈনিক সংবাদ ও নিউএজ পত্রিকার খুলনাস্থ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ও বিবিসি বাংলার খণ্ডকালীন সংবাদদাতা এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, খুলনা চ্যাপ্টারের সভাপতি ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত মানিক সাহা ছাত্রজীবন থেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় লালিত কর্মজীবনেও নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলের লড়াই-সংগ্রামে। বুর্জোয়া শাসক-শোষক শ্রেণি ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার ছিল তার কণ্ঠ ও ক্ষুরধার লেখনী।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জানুয়ারি ২০১৮/সাওন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়