ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দুদকে শিগগিরই যুক্ত হচ্ছে হাজতখানা ও আর্মড ইউনিট 

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৬, ১৭ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দুদকে শিগগিরই যুক্ত হচ্ছে হাজতখানা ও আর্মড ইউনিট 

এম এ রহমান : গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার ও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আসামি রাখতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজতখানা এবং সশস্ত্র আর্মড ইউনিট যুক্ত হচ্ছে শিগগিরই।

ইতিমধ্যে কমিশনের নিজস্ব হাজতখানা পরিচালনা এবং আর্মড ইউনিটের নীতিমালার কাজ শতকরা ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে।

দুদকের প্রশাসন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী রাইজিংবিডিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, কমিশনের নিজস্ব হাজতখানা পরিচালনা এবং আর্মড ইউনিট গঠনের নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত কাজের শতকরা ৯০ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে।

বৃহিস্পতিবার দুদকের এক বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন কার্যক্রমের অগ্রগতি মূল্যায়ন সভায়ও এ বিষয়টি আলোচনা হয় বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য রাইজিংবিডিকে জানিয়েছেন। কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত মনিটরিং টিমের আহ্বায়ক ও দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন।

যদিও জরুরি প্রয়োজন মিটাতে কমিশনে ২০ সদস্যের পুলিশের একটি বিশেষ ইউনিট আনার প্রক্রিয়া রয়েছে। এর পাশাপাশি আধুনিক সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে শক্তিশালী সশস্ত্র ইউনিট যুক্ত করার কাজ এগিয়ে চলছে।

এ বিষয়ে দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দুদকে স্থায়ীভাবে সশস্ত্র ইউনিট যোগ করতে এরই মধ্যে প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

সশস্ত্র ইউনিট গঠন ও নিজস্ব হাজতখানা তৈরির অনুমোদন পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অপরাধীর অবস্থান শনাক্তকরণে মোবাইল ট্র্যাকিং মেশিন সংগ্রহে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের পক্ষ থেকে ২০১৬ সালের শেষের দিকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। স্বাধীন কমিশনের অনুসন্ধান ও তদন্ত কাজকে অধিক গতিশীল এবং পুলিশের ওপর অধিক মাত্রায় নির্ভরশীলনতা হ্রাস করতেই দুদক থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, দুদকের আসামি ধরতে দিনে কিংবা রাতে সব সময়েই অভিযান চালাতে হয়। এজন্য কমিশনের কর্মকর্তারা সব সময় পুলিশের সাহায্য নিয়ে থাকেন। অনেক সময় এ কাজে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়ে নানা জটিলতার কারণে গ্রেপ্তার অভিযান ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে গ্রেপ্তার করা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুদকে আনা হয়। কিন্তু দুদকের নিজস্ব হাজতখানা না থাকায় ওই আসামিদের কর্মকর্তাদের কক্ষে বসেই জিজ্ঞাসাবাদ করতে হয়। যা নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকি। এসব বিবেচনায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

২০১২ সালে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান দুদকের গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বাজেটসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। যদিও পরবর্তীতে বদিউজ্জামান কমিশন ওই উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

আজ কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন কার্যক্রমের অগ্রগতি মূল্যায়ন সভায় কমিশনের ৬টি অনুবিভাগের মহাপরিচালকগণ বিগত ছয় মাসে তাদের বাস্তবায়িত কার্যক্রম মনিটরিং টিমের সভাপতিকে অবহিত করেন।

সভায় দুদক মহাপরিচালক (তদন্ত) ফরিদ আহমদ ভূইয়া মনিটরিং কমিটিকে জানান, বিগত ছয় মাসে এই অনুবিভাগ ৬০৩টি অভিযোগের  অনুসন্ধান এবং ৪৭৪টি মামলার তদন্ত সম্পন্ন করেছে।

অন্যদিকে দুদক মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান মনিটরিং কমিটিকে জানান, বিগত ছয় মাসে এই অনুবিভাগ ১৬৬টি অভিযোগের  অনুসন্ধান এবং ৫৩টি মামলার তদন্ত সম্পন্ন করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, প্রতিটি অনুসন্ধান ও তদন্ত টাইম লাইন অনুসারে সম্পন্ন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই যৌক্তিক কারণ ব্যতিরেকে অনুসন্ধান বা তদন্ত পেন্ডিং রাখা যাবে না। আইন অনুবিভাগে যে তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করেছে তা ডাটাবেজে পরিণত করতে প্রয়োজনে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত এক বছর মেয়াদি কর্মকৌশল বাস্তবায়নে কর্মকর্তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ আগস্ট ২০১৭/এম এ রহমান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়