ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

২৯ স্থানে নদীভাঙনের ঝুঁকি

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫১, ২১ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২৯ স্থানে নদীভাঙনের ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পদ্মা, যমুনা ও গঙ্গা অববাহিকা এলাকার ২৯টি স্থানে নদীভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় ২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) ও ব্র্যাকের এক পরামর্শ সভায় এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়।

নদীভাঙনের ঝুঁকি, পূর্বাভাস, সতর্কীকরণ, প্রচার ও করণীয় বিষয়ক এই পরামর্শ সভায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কয়েক মাস আগেই সতর্ক করে প্রচার চালানো এবং তাদের পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে সব মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর গবেষণা করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালায়ের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস এই ২৯টি স্থানকে ২০১৭ সালের নদীভাঙন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে ব্র্যাক ১৩টি স্থানে ১২ দশমিক ৫ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রচার ও সতর্কীকরণে কাজ করছে।

ভাঙনের তীব্রতা ও সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি ঝুঁকির ওপর ভিত্তি করে ব্র্যাক কুড়িগ্রামের রৌমারী, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, রাজবাড়ির পাংশা ও কালুখালী এবং শরীয়তপুরের জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার মানুষকে সতর্ক করার কাজ করছে বলে সভায় জানানো হয়। একটি পরিববার একাধিকবারও ভাঙনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ছয়বার বাড়ি ভেঙেছে এমন পরিবারও আছে বলে সভায় জানানো হয়।

সভায় রৌমারী উপজেলার রাজিবপুর গ্রামের আবদুল মতিন সরকার তার ২৭ বিঘাজমিসহ পৈতৃক ভিটা হারানোর কথা জানিয়ে বলেন, লাল ও হলুদ পতাকা দিয়ে এলাকা চিহ্নিত করা হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ ভিটা-বাড়ি রক্ষা করতে না পারলেও জীবন নিয়ে বাঁচতে পারেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বড় নদীগুলোর চ্যানেল পরিবর্তন এবং বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়ার কারণে দেশে নদীভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। ফলে প্রতিবছর নদী তীরবর্তী অসংখ্য মানুষ বসতভিটাসহ আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। এ অবস্থায় নদীভাঙনের আগাম তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া খুবই জরুরি। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলো রক্ষায় নদীর তীর সংরক্ষণ, নতুন বাঁধ নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে বক্তারা অভিমত প্রকাশ করেন।

সভায় ‘২০১৭ সালের জন্য নদীভাঙনের পূর্বাভাস’ শীর্ষক উপস্থাপনা তুলে ধরেন সিইজিআইএসের রিভার, ডেল্টা অ্যান্ড কোস্টাল মরফোলজি ডিভিশনের জুনিয়র স্পেশালিস্ট সুদীপ্ত কুমার হোড়। সভায় ‘নদীভাঙনের পূর্বাভাস জ্ঞাপন : পূর্ববর্তী বছরসমূহের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ব্র্যাকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির (ডিএমসিসি) সিনিয়র সেক্টর স্পেশালিস্ট মো. জাফর ইকবাল।

সভা সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের ডিএমসিসি কর্মসূচির পরিচালক গওহার নঈম ওয়ারা ও সিইজিআইএসের উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. মমিনুল হক সরকার। গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, নদীভাঙনের পূর্বাভাস প্রদানে প্রযুক্তিগত অর্জিত দক্ষতা সার্থক করতে নদীভাঙন এলাকায় সময়মতো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারি এবং নদীশাসনে এ তথ্যসমূহ ব্যবহার করতে পারি।

ড. মমিনুল হক সরকার নদী ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, নদীভাঙনে মানুষ তার জমি বা ভিটেবাড়ি হারিয়ে চরম দুঃখ-কষ্টে দিন কাটায়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ আগস্ট ২০১৭/হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়