ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মাদক চোরাচালান ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে সমন্বিত ব্যবস্থা

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২০, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাদক চোরাচালান ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে সমন্বিত ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় মাদক চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

ভারতের সঙ্গে আলোচনার ফলে ক্রমাগত সীমান্ত হত্যা কমে আসছে এবং এই সংখ্যা আরো কমবে বলে জানান তিনি।

রোববার দুপুরে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবির সদর দপ্তরে সংসদ সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের ‘সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশের ৪ হাজার ৭০০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার ৩৩ জন সংসদ সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। দেশে কোনো মাদক তৈরি হয় না। সব মাদকই মিয়ানমার এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্ত পথ দিয়ে যেন কোনো মাদক প্রবেশ না করে সেজন্য সীমান্ত এলাকা আরো সুরক্ষিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সীমান্তবর্তী এলাকার সংসদ সদস্যদের কাছে বিভিন্ন পরামর্শ চাওয়া হয়েছে, উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টেকনাফের বিভিন্ন পথ দিয়ে মাদক প্রবেশ করছে। এ ব্যপারে আরো সজাগ থাকতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় যেসব পথ দিয়ে বৈধভাবে আমদানি-রপ্তানি হয় সেসব পথ যেন ক্লিয়ার থাকে সেই আলোচনা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ইতোমধ্যে প্রায় ৯ লাখ রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। কোস্টগার্ডকে আরো শক্তিশালী করতে দুটি জাহাজ সংযুক্ত করার পাশাপাশি আরো দুটি জাহাজ ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে।

তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিজিবিকে আরো শক্তিশালী করতে ১৫ হাজার নতুন সদস্য বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সীমান্ত রাস্তাগুলোর কাজ পর্যায়ক্রমে করা হচ্ছে। সংসদ সদস্যদের পরামর্শ অনুযায়ী বিজিবির আরো চেকপোস্ট বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সীমান্ত পথ দিয়ে যেকোনো অপরাধী আসা-যাওয়া, অস্ত্র চোরাচালানসহ মানুষের ক্ষতি হয় এমন কোনো উপকরণ আমদানির বিষয়টি বন্ধে পুলিশের চেকপোস্ট বাড়ানোর সাজেশন পেয়েছি এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

চোরাচালান বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতার বিষয়ে সংসদ সদস্যদের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চরম কথাটি ঠিক নয়। বিজিবি-কোস্টগার্ড-পুলিশ-র‌্যাবের মধ্যে আরো সমন্বয়ের কথা বলেছেন। সমন্বয় আমাদের আছে। যেখানে নেই, সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মাদক আইনে কিছু ফাঁক-ফোকর আছে, যা সংশোধন করে যুগোপযোগী করে সংসদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেন কোনো মাদক ব্যবসায়ী বা চোরাচালানকারী আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারেন।

মাদক চোরাচালানে অনেক ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যরা জড়িত, এ বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানেই অভিযোগ আছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। জড়িত ব্যক্তি প্রশাসনেরই হোক কিংবা জনপ্রতিনিধিই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাৎক্ষণিকভাবে বিচারের আওতায় আনা হবে।

সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক হচ্ছে এবং এর ফল আমরা পাচ্ছি, উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে ক্রমাগত সীমান্ত হত্যা কমে আসছে। ২০০৮ এ ৬৮ জন, ২০০৯ এ ৬৭ জন, ২০১০ এ ৬০ জন, ২০১১ এ ৩৯ জন করে ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা কমে চলতি বছরে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় দুই দেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায়ে আছে। সীমান্ত হত্যা যেন বন্ধ হয়, সেই জায়গাতে গিয়েছি। মনে করি, এটা আরো কমে যাবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ডিসেম্বর ২০১৭/নূর/হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ