ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘মাহবুব তালুকদারের প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৮, ১৭ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মাহবুব তালুকদারের প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যে পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন অপর নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসি অধীনে নিয়ে আসার প্রস্তাব সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

কবিতা খানম বলেন, নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। এছাড়া, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার বিষয়টি ইসির এজেন্ডায় আসার মতো প্রস্তাব নয়। সুতরাং তার প্রস্তাবগুলো অযৌক্তিক।

নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ দিতে আচরণবিধি সুনিশ্চিতভাবে পতিপালন করা হবে।

আচরণবিধি সংশোধন প্রসঙ্গে কবিতা খানম বলেন, আচরণবিধিতে তেমন বড় কোনো ধরনের সংশোধন নেই। বেশি না, সাধারণ কিছু সংশোধন আসছে।

সংসদ বহাল থেকে নির্বাচন হবে, সে ক্ষেত্রে এমপিরা মাঠপর্যায়ে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তখন আপনারা কী পদেক্ষপে নেবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ দেওয়ার জন্য আচরণবিধি সুনিশ্চিতভাবে পতিপালন করব।

কবিতা খানম বলেন, আচরণবিধি কেউ না মানলে অবশ্যই জবাবদিহিতার মধ্যে আনা হবে। যদি আচরণবিধি সঠিকভাবে আমরা প্রয়োগ করি, প্রার্থীরা ফলো করে, তাহলে সমস্যা হবে না। আর কেউ যদি তা ভঙ্গ করে, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থার সুযোগ থাকবে কমিশনের।

তিনি আরো বলেন, আইন সবার জন্য সমান। তাই আচরণবিধির বাইরে কেউ কিছু করলে নির্বাচন কমিশন অবশ্যই পদেক্ষেপ নেবে।

তিনি বলেন, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংজ্ঞায় বলা আছে- প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্পিকারসহ অন্যরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরকারের সুবিধা নিয়ে প্রচারণায় যেতে পারবেন না। সংসদ সদস্যরা যে গাড়ি ও তেল পান, সে সুযোগও ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে প্রধানমন্ত্রী পারবেন।

কবিতা খানম বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য হিসেবে বিশেষ আইনে নিরাপত্তা সুবিধা পান। সেজন্য বিশেষ আইনের নিরাপত্তা সুবিধা নিয়ে তিনি প্রচারণায় প্রটোকলের সুবিধা পাবেন। তবে অন্য কোনো সরকারি সুযোগ সুবিধা তিনি পাবেন না। বিশেষ আইনে যতটুকু পারমিট থাকবে, নিরাপত্তার জন্য যে সুযোগ আছে, ততটুকু তিনি নিতে পারবেন।

কবিতা খানম বলেন, আমরা নির্বাচনী আচরণবিধিমালায় নির্বাচনকালীন সংসদ সদস্যদের নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা কোনো পরিবর্তন আনছি না। কেননা, তাদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা বর্তমান আইনেই আছে। সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা কী করতে পারবেন তা আচরণবিধিমালায় বলা আছে।

তিনি বলেন, আইন সবার জন্য সমান। সবাইকে আইনটা মানতে হবে। আমরা যদি আইনটা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারি, তবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং ব্যালেন্সের বিষয়টাও চলে আসবে। কেননা, আইন ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ কমিশনের আছে। আচরণবিধির বাইরে কারো কর্মকাণ্ড প্রতিফলিত হলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আচরণবিধিমালায় যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণের কথা বলা আছে, তাই এখানে তেমন কোনো পরিবর্তন আসছে না। কেবল জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার, ডিজিটাল ডিসপ্লের ব্যবহার বন্ধসহ ছোটখাটো কিছু বিষয় আনার কথা ভাবা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়ার দাবি মাঠ কর্মকর্তারা তুলেছেন। এটা নিয়ে আলোচনার সময় আসেনি। কমিশন বৈঠকে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

‘সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার নিয়েও এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা আইনটা সংশোধনের জন্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। আইন হলে আমার সক্ষমতা আছে কি না, তা নিয়ে ভাবতে হবে। আস্থা তৈরির বিষয়ও আছে। তবে নির্বাচনে আমরা প্রযুক্তিকে গ্রহণ করব। কেননা, এতে অর্থ এবং লোকবল সাশ্রয় হবে,’ বলেন কবিতা খানম।






রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ অক্টোবর ২০১৮/হাসিবুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়