ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না’

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪০, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, আপনারা (নির্বাচন কর্মকর্তা) নির্ভয়ে, সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। আপনারা ব্যর্থ হলে নির্বাচন ব্যর্থ হবে। অন্যদিকে আপনাদের সাফল্যে উদ্ভাসিত হবে সমগ্র জাতি।

তিনি বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায়ই হোক না কেন, নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেবে না কমিশন।’

সোমবার সকালে নির্বাচন কমিশন ভবনে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করে মাহবুব তালুকদার এ কথা বলেন। আজ ১৩টি জেলার ৪০৮ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আপনারা প্রশিক্ষণ দেবেন এবং নেবেন সাংবিধান পাঠ ও প্রয়োজনীয় অংশ সম্বন্ধে জ্ঞান, নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে ধারণা এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব অনুধাবন। এছাড়া ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভূমিকা, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কেও আপনারা অবহিত হবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচনের কোনো ধারাবাহিকতা নেই। কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, কখনো সেনা–সমর্থিত সরকারের অধীন কিংবা কখনো দলীয় সরকারের অধীনে। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যে প্রক্রিয়াই হোক না কেন, তাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে দেওয়া যাবে না। দেশে নির্বাচনের কোনো ধারাবাহিক রীতি গড়ে না উঠলেও একটি পূর্ণাঙ্গ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে এই ধারাবাহিকতা ও ঐতিহ্য সৃষ্টি করতে যাচ্ছে কমিশন। এজন্য জনমনে আস্থার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি বলেন, আপনারা দায়িত্ববোধ ও নির্বাচন সম্পর্কে জনমনে আস্থার ক্ষেত্র তৈরি করবেন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থী আপনাদের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। আপনাদের কাছে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অতিসামান্য। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যাতে ইচ্ছামত পছন্দের প্রার্থীকে ভোটটি দিতে পারেন, এই সামান্য চাওয়াই এখন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বাস্তবতায় বিশাল কর্মযজ্ঞে রুপান্তরিত হয়েছে।

মাহবুব তালুকদার বলেন, গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রায় ১০ থকে ১২ লাখ কর্মকর্তা যুক্ত হবেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনিয়ম রোধ ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায়, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের ক্ষমতা জেনে নিতে তিনি নির্দেশ দেন।

তিনি আরো বলেন, কতটুকু ক্ষমতা প্রয়োগ করা যাবে, তা জেনে নেবেন। পুলিশ বা সামরিক কর্মকর্তাদের চেয়ে আপনাদের ক্ষমতা কোনো অংশে কম নয়।

তিনি আরো বলেন, একটা কথা আমি সব সময় বলে থাকি। আমরা নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের শপথ গ্রহণ করেছি। আপনারা আমাদের শপথ গ্রহণের মূল অংশীদার। কারণ আপনাদের মাধ্যমেই আমরা নির্বাচন সম্পন্ন করি। এক্ষেত্রে আমাদের শপথ আপনাদের মধ্যে সঞ্চারিত হয় এবং আপনাদের দায়িত্ব পালনের ওপর বর্তায়। আপনারাও মনে মনে শপথ গ্রহণ করুন দেশ ও জাতির স্বার্থে নির্বাচনের এই দায়িত্ব পালনে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের এক সোনালী অধ্যায় রচনা করবে। সেই সোনালী অধ্যায়ের রুপকার আপনারা। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আপনারা এক মহান দায়িত্ব লাভ করেছেন। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আপনাদের অবদান জাতির ইতিহাসে গৌরবগাঁথা হয়ে থাকবে। আমাদের উত্তরাধীকারগণ সেই গৌরবগাঁথায় উদ্দীপ্ত হবে, অনুপ্রাণিত হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে আমরা শুধু দেশবাসী নয়, বিশ্ববাসীর নজরদারির সামনে। আমাদের প্রতি কার্যকলাপ, প্রতিটি পদক্ষেপ সকলেই প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। সেদিক থেকে এই নির্বাচন আমাদের আত্মমর্যাদা সমুন্নত রাখার নির্বাচন। একটি মর্যাদাবান জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে চাই। আমরা কিছুতেই আমাদের সম্ভ্রম খুয়াতে পারি না।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মদানের মাধ্যমে এই দেশেল স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। স্বাধীনতার আকাঙ্খা ছিল একটি গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রের মূলকথা আইনের শাসন এবং সবার প্রতি সমভাবে আইনের প্রয়োগ। স্বাধীনতার মাধ্যমে সেদিন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও সুখী বাংলাদেশের স্বপ্ন রচিত হয়েছিল। শুদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই স্বপ্নটিকে বাস্তবতায় রুপদান করে আসুন আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসিবুল/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়