ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের দায়িত্ব বেড়ে গেল : মুহিত

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আওয়ামী লীগের দায়িত্ব বেড়ে গেল : মুহিত

কেএমএ হাসনাত : দেশের সর্বস্তরের জনগণ জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখে ব্যালটের মাধ্যমে যে অভাবনীয় রায় দিয়েছে তাতে আমরা গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। এ রায়ে আওয়ামী লীগের উপর দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল। এত বেশি ভোটে আওয়ামী লীগ নিরস্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে তা ভাবতেই পারিনি। পরম করুণাময়ের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এ বিজয় এদেশে মানুষের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি শ্রদ্ধা এবং বর্তমান সরকারে উন্নয়ন কর্মকা-ের প্রতি আস্থার বহি:প্রকাশ।

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে সোমবার সিলেট থেকে ঢাকা ফিরে রাইজিংবিডি’র কাছে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন বর্ষিয়ান জননেতা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এবার নির্বাচনে তিনি নিজে অংশ না নিয়ে তার ছোট ভাই এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. একে আব্দুল মোমেনকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেন।

দেশজুড়ে একটি কথা প্রচলন আছে এবং জাতীয় সংসদের বিগত নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় সিলেট-১ আসনে যে প্রার্থী জয় লাভ করেন তার দল সরকার গঠন করে। একই সঙ্গে সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বও ওই আসন থেকে বিজয়ীকেই দেওয়া হয়। এ জন্য সিলেট-১ আসনের প্রতি রাজনৈতিক সচেতন মহলে আলাদা মর্যাদা রয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পেছনে মূলত কয়েকটি বিষয় কাজ করেছে। এরমধ্যে অবশ্যই বঙ্গবন্ধু কন্যা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি মানুষের অকুন্ঠ আস্থা, ভালোবাসা এবং বিশ্বাস। তার শাসনামলে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে জনগণ নৌকা প্রতীককে বেছে নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এছাড়াও একটি কারণ রয়েছে। সেটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে নতুন ভোটারদের অবস্থান নেওয়া। নতুন ভোটাররা ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা বিরোধীদের দাঁত ভাঙা জবাব দিয়ে দিয়েছে। তারা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে এবারের ভোটযুদ্ধে।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মর্যাদার আসন খ্যাত সিলেট-১ (সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা) আসনে প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়ে বাজিমাত করলেন আওয়ামী লীগের ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার রাতে ভোট গণনা শেষে দেখা যায় তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ড. একে আব্দুল মোমেন পেয়েছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৬ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের খন্দকার আবদুল মুক্তাদির পেয়েছেন ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৫১ ভোট। সেই হিসেবে ভোটের ব্যবধান ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮৪৫টি।

সিলেট-১ আসনে বিভিন্ন দলের আরো ৮ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। এ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৫৩০ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৮৬ হাজার ২৬৭ ও নারী ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ২৬৩ জন।

সিলেট-১ আসন থেকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ড. একে আব্দুল মোমেন ১৯৪৭ সালের ২৩ আগস্ট সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সনে অর্থনীতি বিভাগ থেকে ¯œাতক এবং একই বিভাগ থেকে ১৯৭১ সনে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি এলএলবি ডিগ্রি এবং হার্ভাড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি আমেরিকার নর্থইস্টার্ণ ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ব্যবসা প্রশাসন বিভাগে ম্যারিম্যাক কলেজ, সালেম কলেজম নর্দার্নইস্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির কেনেডি স্কুল অব গভার্নমেন্টে এবং ফ্রামিংহাম স্টেট কলেজে অর্থনীতি এবং বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে শিক্ষকতা করেন।

ড. একে আব্দুল মোমেন সৌদি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এসআইডিএফ)-এ কাজ করেছেন। ২০০৯ সালে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি ইউনিসেফের নির্বাহী পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি জাতিসংঘের ৬৭তম জেনারেল অ্যাসেম্বলির ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।সি

সিলেটবাসী ড. একে আব্দুল মোমেনকে নিয়েও এখনই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। তাদের মতে অতীতের মত এবারও এ আসনটির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়