ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে ৫১ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৩৯ জন

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩০, ৩ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টাঙ্গাইলে ৫১ প্রার্থীর মধ্যে জামানত হারিয়েছেন ৩৯ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : একাদশ সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের আটটি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বেশিরভাগ প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র  জানায়, আটটি আসনে মোট ৫১ প্রার্থীর মধ্যে ৩৯ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি আসনের ভোট কাস্টিংয়ের এক অষ্টমাংশের কম ভোট কোনো প্রার্থী পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

জেলার আট আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী বিএনপির সরকার শহিদ, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, লুৎফর রহমান খান আজাদ, জাতীয় পার্টির পীরজাদা শফিউল্লাহ আল মুনির, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও মুরাদ সিদ্দিকীর জামানত হারিয়েছেন।  তবে ৫১ জন প্রার্থীর মধ্যে লতিফ সিদ্দিকীসহ পাঁচজন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দি¦তা করেছেন। তাদের মধ্যে চারজনই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৬৪ হাজার ৯৯১ জন।। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৮২ দশমিক ২৩ শতাংশ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৭ হাজার ৭২৫ ভোট। কিন্তু  বিএনপির প্রার্থী শহীদুল ইসলাম ওরফে সরকার শহিদ (ধানের শীষ) ১৬ হাজার ৪৪০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবু মিল্লাত হোসেন (আম) ৭৩২, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আশরাফ আলী (হাত পাখা) দুই হাজার ৫২৭, জাকের পার্টির সালামত হোসাইন খান (গোলাপ ফুল) এক হাজার ৮০৯ ভোট পেয়েছেন। এর ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করেছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৪৮ হাজার ৬৭০ ভোট। তাদের মধ্যে পাঁচ প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৯০ দশমিক ৪১ শতাংশ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৯ হাজার ১৬৬ ভোট। কিন্তু  বিএনপি প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু (ধানের শীষ) নয় হাজার ৮৮৯, বিকল্প ধারার  মুনিরুল ইসলাম (কুলা)-১৪২, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এসএম শামছুর রহমান (হাত পাখা)- এক হাজার ৪৪৫, জাকের পার্টির এনায়েত হক মঞ্জু (গোলাপ ফুল)-৯৭৭, কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী জাহিদ হোসেন খান (কাস্তে) ৯২৭ ভোট পেয়েছেন। ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করেছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১৮ হাজার ৫৪৬ জন। এখানে ছয় প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৮১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩২ হাজার ৩০১ ভোট। কিন্তু বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদ (ধানের শীষ)-৯,১২২, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী এসএম চাঁন মিয়া (আম)-১,৩৯০, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী আবু হানিফ (ফুলের মালা)-২৪৪, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী রেজাউল করিম (হাত পাখা)-৩,১২৪, জাকের পার্টির প্রার্থী খলিলুর রহমান (গোলাপ ফুল)-১,৯০২, বিএনএফ এর প্রার্থী আতাউর রহমান খান (টেলিভিশন)-১৯০ ভোট পেয়েছেন। ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দি¦তা করেছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১১ হাজার ৮৮ ভোট । এখানে পাঁচজন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৮৫ দশমিক ০৭ শতাংশ । এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩২ হাজার ৬৭২ ভোট। কিন্তু জামানত হারানো প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী (ট্রাক)- ৩১১, জাতীয় পার্টি-জেপি’র সাদের সিদ্দিকী (বাই সাইকেল)-১৫৪, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর  মির্জা আবু সাঈদ (হাত পাখা)-১,৬৮৩, জাকের পার্টির  মোন্তাজ আলী (গোলাপ ফুল)-৫০১, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ মুশতাক হোসেন (লাঙ্গল) ৩৩০ ভোট পেয়েছেন। ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৮০ হাজার ৩৩৮ । এখানে ছয়জন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৮৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৪ হাজার ৯৭১ ভোট। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী (মাথাল)- ২৮,৬৬০, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সফিউল্লাহ আল মুনির (লাঙ্গল)- ১৮,৩৪১, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী আবু তাহের (আম)-৯৭, বিএনএফ প্রার্থী শামীম আল মামুন (টেলিভিশন)-৯১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী খন্দকার ছানোয়ার হোসেন (হাত পাখা)-৩,৮০৫, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের প্রার্থী সৈয়দ খালেকুজ্জামান মোস্তফা (বটগাছ)-৪১৫ ভোট পেয়েছেন। ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৯০ হাজার ৪৪৬ জন। এখানে ছয় প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৮৬ দশমিক ০৯ শতাংশ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৪১ হাজার ৫৭১ ভোট। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম (ট্রাক)-২,৮০৭, আবুল কাশেম (সিংহ)- ০০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মামুনুর রহমান (আম)-২৪৯, বিএনএফ প্রার্থী সুলতান মাহমুদ (টেলিভিশন)-৩৩৬, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী আখিনুর মিয়া (হাত পাখা)- ৪,৩২৪, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (ফুলের মালা)-১৭২ ভোট পেয়েছেন।

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ২২ হাজার ৬৭৩ জন। এখান চার প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৮৭ দশমিক ০৭ শতাংশ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩১ হাজার ৭৭৮ ভোট। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জহির (লাঙ্গল)-৩১৭, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী শাহিনুর ইসলাম (হাত পাখা)-১,০৯৭, খেলাফত মজলিশের প্রার্থী সৈয়দ মজিবর রহমান (দেয়াল ঘড়ি)-১১৩, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থী রুপা রায় চৌধুরী (বাঘ)-১৫৮ ভোট পেয়েছেন।

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করেছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৪৬ হাজার ৬৪৬ জন। এখানে তিন প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোট পড়েছে ৮৮  শতাংশ। এ আসনে জামানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ছিল ৩৫ হাজার ২০৮ ভোট। কিন্তু জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) কাজী আশরাফ সিদ্দিকী ১,৩০৫ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী আব্দুল লতিফ মিয়া (হাত পাখা)-১,২৬০, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী শফি সরকার (আম)-২৭৭ ভোট পেয়েছেন। ফলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

 

 

 

রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/৩ জানুয়ারি ২০১৯/শাহরিয়ার সিফাত/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়