ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

‘১৯৪৭ ও ১৯৭১ এর চেতনায় আগামী নির্বাচনে যুদ্ধ’

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘১৯৪৭ ও ১৯৭১ এর চেতনায় আগামী নির্বাচনে যুদ্ধ’

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আগামী  জাতীয় নির্বাচনে যুদ্ধ হবে ১৯৪৭ ও ১৯৭১ এর চেতনায়।’

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ পাকস্তানি কায়দায় দেশ পরিচালনা করছে খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। রাজনীতিতে আমাদের মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমরা দেশ নিয়ে তো গর্ব করব।’

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকের পার্থক্য তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরমাণু বোমা ছাড়া আর্থ-সামাজিক সব সূচকে আমরা পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছি। পরমাণু বোমা, ওটা আমাদের দরকার নাই।আমাদের পরমাণু বোমা আমাদের জনগণ।আমাদের পরমাণু বোমা একাত্তরের চেতনায় জাগ্রত বিবেক আমাদের তরুণ সমাজ। এরাই আমাদের পরমাণু বোমা।’

খালেজা জিয়াকে সবিনয়ে অনুরোধ জানিয় তিনি বলেন, ‘শত চেষ্টা করেও বাংলাদেশকে আর পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়া যাবে না। যত চেষ্টাই করুন।’

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘কী যে শুনি মন্থরার মুখে। বানরে সংগীত গায় শিলা জলে ভাসে। আওয়ামী লীগ নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে পাকিস্তান বাংলাদেশের পিছনে লেগে আছে। আমরা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করেছি। তখন বিশ্বের বাঘা বাঘা নেতারা শেখ হাসিনাকে ফোন করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা কারো সঙ্গে কোনো আপোশ করে নাই। এটা তিনি ছাড়া বাংলাদেশে আর কারো পক্ষে সম্ভব ছিল না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা আছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করার সময় বিএনপি ও তার দলের নেতারা নীরব থাকায় তার জবাব আগামী জাতীয় নির্বাচনে দিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পোলারাইজেশন এভাবেই হবে। যুদ্ধ হবে ১৯৪৭ এর চেতনার সঙ্গে ১৯৭১ এর চেতনায়। আপনারা দেশটারে ভাগ করে দিয়েছেন। ওই দিকেই থাকুন, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খেলবেন না। আপনারাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে তরুণ প্রজন্মকে সরিয়ে নিতে চেয়েছেন। আমরা আবার ট্র্যাকে ফেরত এনেছি।আমরা ট্র্যাকে চলছি। আমাদের ভুল হতে পারে। কিন্তু আমরা চেতনা থেকে সরে যাইনি।

অনেকেই আজকে বলে আওয়ামী লীগ কম্প্রোমাইজ করছে। আমি কলকাতায় গিয়ছিলাম। সেখানে অনেক সুশীল সমাজ, কবি, সাহিত্যিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখানেও এমন শুনেছি। অনেকেই এমন কনফিউশন ছড়াচ্ছে, যাতে আমাদের বন্ধুরা আমাদের ভুল বুঝে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এত বড় একটা যুদ্ধাপরাধীর বিচার করলাম। বড় বড় দেশের বাঘা বাঘা নেতারা শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়েছিল। তিনি কারো কথা শোনেননি। কারো সঙ্গে আপোশ করেননি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে পলিটিক্যাল অ্যালায়েন্স হয়, ইলেকটোরাল অ্যালায়েন্স হয়। ইলেকটোরাল অ্যালায়েন্স তো আইডলজিক্যাল অ্যালায়েন্স নয়।’

১৯৭৫ এর পর দেশ ২১ বছর পিছিয়ে গিয়েছিল, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে রাতারাতি কি ট্র্যাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসব? এই দুঃসাহসিক কাজটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, অত্যন্ত কঠিন। তারপরও শেখ হাসিনার মতো নেত্রী আছেন বলেই আজকে এই চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে। আমরা সময়ের পরিবর্তনে যা করা প্রয়োজন তা কখনো কখনো কৌশল পরিবর্তন করে করি। কৌশল আমাদের পরিবর্তন করতে হয়। কৌশল বদলানো মানে আদর্শের প্রশ্নে কোনো কম্প্রোমাইজ নয়। আমরা একাত্তরের শিকড় থেকে কোনো দিনও বিচ্যুত হবো না। কোনো কম্প্রোমাইজ করব না। ভুল বুঝবেন না। আদর্শিক পরিবর্তন মেলাবেন না। এটা আমার সকলের কাছে অনুরোধ।’

ভারতকে বাংলাদেশে আরো বেশি বেশি করে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আপনারা বেশি করে বিনিয়োগ করেন। আমরা কারো দিকে তাকাব না।’ আর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে মেরুদণ্ড সোজা করে বাংলাদেশে চলার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি প্রফেসর এ কে আজাদের সভাপতিত্বে এতে আরো অংশ নেন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, জহুহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সনজয় কে ভরদ্বাজ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুবীর কোশারি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ডিসেম্বর ২০১৭/নৃপেন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়