ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাল্টা চাষে বিপ্লব ঘটাতে চান আব্দুল করিম

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ১০ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাল্টা চাষে বিপ্লব ঘটাতে চান আব্দুল করিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : মাল্টা চাষে বিপ্লব ঘটাতে চান যশোরের যুবক আব্দুল করিম।‘বারি মাল্টা-১’ জাতের মাল্টা চাষ করে সাফল্যমণ্ডিত হওয়ায় তিনি এখন বিপ্লব ঘটানোর স্বপ্ন দেখছেন।

আব্দুল করিম শিক্ষিত যুবক।যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নী গ্রামে নিজ জমিতেই তার  এই মাল্টা  চাষের প্রকল্প।লেবু–জাতীয় এই ফলটিকে কমলার বিকল্পই মনে করেন তিনি।যা তার ভাগ্যকেই বদলে দিয়েছে।তাকে এখন সফল মাল্টা চাষি হিসেবে স্থানীয়রা জানেন।তার সাফল্য দেখে অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

আব্দুল করিমের জীবনে এর আগেও রয়েছে আরো কিছু প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার গল্প। ভাগ্য বদলের আশায় বিদেশে গিয়েছিলেন আব্দুল করিম। সেখানে ভাল চাকরির সুযোগ না পেয়ে ফিরে আসেন। বাড়িতে ফিরে  একটি মুরগির খামার গড়ে তোলেন। কিন্তু ২০০৮ সালে বার্ড ফ্লু’তে খামারের সকল মুরগি মারা যায়। এতে তার প্রায় ১৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তিনি হত-বিহব্বল হয়ে পড়েন ।

এ সময় করিম তার পূর্ব পরিচিত তৎকালীন খুলনা কৃষি ইনস্টিটিউটের গবেষক মৃত্যুঞ্জয় রায়ের উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও পরামর্শ নিয়ে বারি মাল্টা-১ জাতের মাল্টা চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। খুলনা থেকে ১৫০ টাকা দরে ১৪৫টি বারি-১ জাতের মাল্টার চারা এনে ৪২ শতক জমিতে রোপন করেন। শুরু হয় নিবিড় পরির্চযা । সাধারণত চারা রোপণের দুই বছর পর ফল ধরার কথা থাকলেও দেড় বছরের মাথায় ফল ধরতে শুরু করে করিমের খেতে। তার আবাদকৃত ‘বারি মাল্টা-১’ জাতের মাল্টা ফলের ধরণ, আকৃতি, স্বাদও বাজারে আমদানিকৃত মাল্টার চেয়ে ভাল। ফলে দ্রুতই সাফল্যের মুখ দেখেন আব্দুল করিম।

এরপর মাল্টা চাষি হিসেবে  আব্দুল করিম পরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘আমার খুব ভাল লাগছে। কেউ আসেন খেত দেখতে, আবার কেউ আসেন চাষ করার লক্ষ্যে পরামর্শ ও সহযোগিতা নিতে।’

তিনি জানান, নিজস্ব প্রযুক্তি দিয়ে এবার এ জাতের ১০ হাজার মাল্টার চারা কলমের মাধ্যমে উৎপাদন করা হয়েছে। যা অন্তত: ৬০ বিঘা জমিতে চাষ করা যাবে। তিনি মাল্টা চাষে বিপ্লব ঘটাতে চান। তবে এজন্য তার দরকার  সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ।তাহলেই তিনি এ চ্যালেঞ্জ নিতে পারবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, ‘চাষাবাদের মাধ্যমে যে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব তার বড় উদাহরণ হলো মাল্টা চাষি আব্দুল করিম। তার এ চাষে আমাদের সহযোগীতা অব্যাহত থাকবে।’

বারি মাল্টা-১ জাতের গবেষক ও খুলনা কৃষি ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘এটি দেশের একটি সম্ভাবনাময় ফসল। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ চাষে বিপ্লব ঘটবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি জেলায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে এ চাষ শুরু হয়েছে।’



রাইজিংবিডি/যশোর/১০ অক্টোবর ২০১৭/বি এম ফারুক/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়