ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কলা বেচা-কেনার হাট ‘পিরিজপুর’

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ১৭ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কলা বেচা-কেনার হাট ‘পিরিজপুর’

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর বাজার । এই বাজারেই বসে জেলার সবচেয়ে বড় কলা বেচা-কেনার হাট। হাজার হাজার কলার ছড়িতে এ বিশাল হাট সয়লাব হয়ে যায় ।

শুক্র ও সোমবার,  সপ্তাহের দুইদিন এই হাট বসে।ভোরের আলো ফুটতেই এখানে জড়ো হন আশপাশের গ্রামসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা  ছোট-বড় কলা ব্যবসায়ীরা। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে মুখরিত হয় এ হাট। কাঁচা কলার গাঢ় সবুজ আভায় আচ্ছাদিত হয়ে যায় পুরো হাট। পাইকাররা ছুটে আসেন, কলা কিনে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন স্থানের হাট-বাজারে।

সবরী, কবরী, সাগর, গেরা, চিনি চাম্পা, অমৃতসাগর, বিচি কলা, কাঁঠালী, আনাজী কলাসহ প্রায় সব জাতের কলাই পাওয়া যায় এ হাটে।

ছড়া নয়, কলার একটি কাদি বা কাইন দেখে অনুমান নির্ভর দাম হয় এখানে। সাধারণত ৫০ থেকে ১০০ করে কলা থাকে একেকটি কাইনে। পাইকারি দামে কলার সাইজ অনুসারে ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত কলার কাঁদি বা কাইন বিক্রি হয়। এছাড়া যারা ট্রাকে বা পিকআপ করে কলা নিয়ে যান তাদের কাছে কলার কাদি বা কাইন প্রতি আরও ১৫/২০ টাকা কম নেওয়া হয়।



কুমিল্লার পাইকারি কলা ব্যবসায়ী রহমত বেপারী বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমি এ হাটে কলা কিনতে আসি। এ হাটের সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে এখানে কোনরকম অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়না। এমনকি কোন দালালের কাছে ধরা দিতে হয়না। যেভাবে খুশি কলার কাঁদি পছন্দ করে আমরা কিনে নিয়ে যেতে পারি। আমি এখান থেকে কলা কিনে ফেনী, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি।’

কটিয়াদীর কলা বিক্রেতা জালাল মিয়া বলেন, ‘এ হাটে আমি প্রায় ৫ বছর ধরে কলা বিক্রি করি। আজ পর্যন্ত দামে কখনো কম পাইনি। তাছাড়া কটিয়াদি থেকে এ হাটটি খুব কাছে এবং যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল থাকায় খুব সহজেই এখানে কলা নিয়ে আসতে পারি। আশেপাশে আরো কলার হাটবাজার আছে, কিন্তু এ হাটেই কলা কেনা-বেচা হয় বেশি। এছাড়া এ হাটে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা কলা কিনতে আসে।’

পিরিজপুর বাজারের ইজারাদার মো. মামুন মিয়া জানান, প্রতি হাট বারে বিশ থেকে পঁচিশ লক্ষ টাকার কলা বিক্রি হয়। এ বাজারে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকায় রাত-বিরাতে ক্রেতা-বিক্রেতারা নির্দ্বিধায় ব্যবসা করতে পারছেন। এছাড়া এ বাজারে কোনপ্রকার দালাল বা প্রতারকের দৌরাত্ম নেই।

ব্যবসায়ীদের দাবি, কলার ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বছর জুড়েই চাঙ্গা থাকে এ হাট । প্রতি হাটে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়ে থাকে। কিন্তু এ পর্যন্ত এ বাজারে কোন ব্যাংকের শাখা খোলা হয়নি। তাই, দ্রুত একটি ব্যাংকের শাখা স্থাপনের আশা করছেন তারা।



এছাড়া বাজারটি কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়কের পাশে। এখানে সড়কটি সরু হওয়ায় হাটের দিন ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই, সড়কটিকে প্রশস্ত করার দাবিও জানান তারা।



রাইজিংবিডি/কিশোরগঞ্জ/১৭ অক্টোবর ২০১৭/রুমন চক্রবর্তী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়