ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আলোকিত সীমান্ত গড়ার পরিকল্পনা

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০২, ৬ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আলোকিত সীমান্ত গড়ার পরিকল্পনা

আহমদ নূর : নজরদারি ব্যবস্থাকে সহজতর করতে এবং অপরাধ কমিয়ে আনতে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাকে আলোকিত করতে চায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ লক্ষ্যে বিজিবি একটি প্রকল্প তৈরি করেছে। 

এই প্রকল্পে আলোকিত সীমান্তের রূপ কেমন হবে তা তুলে ধরা হয়েছে। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, গোটা সীমান্তকে কৃত্রিম আলোয় আলোকিত করার জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সরকারের কাছে এর জন্য অর্থ বরাদ্দের আবেদন করা হবে। অর্থ বরাদ্দ পেলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে হাত দেবে বিজিবি।

বিজিবি সূত্র আরো জানায়, পাইলট প্রকল্প হিসেবে ইতিমধ্যেই নিজস্ব অর্থায়নে সীমান্তের কিছু কিছু এলাকায় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করেছে বিজিবি। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও সীমান্তে আড়াই কিলোমিটারে ২১টি লাইট পোস্ট, হালুয়াঘাট সীমান্তে এক কিলোমিটারে ১০টি লাইট পোস্ট ও রামগড় সীমান্তে এক কিলোমিটার এলাকায় ১০টি লাইট পোস্ট বসানো হয়েছে।

বিজিবি সূত্র জানায়, স্বল্প পরিসরে সীমান্ত এলাকায় লাইট পোস্ট বসানোর পর সুফল পাওয়া শুরু হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় আলোর ব্যবস্থার কারণে ওই এলাকাগুলোতে রাতের বেলায় নজরদারি করা অনেক সহজ হয়েছে। 

জানা গেছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে বিজিবি। প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুতে যেন কোন ঘাটতি তৈরি না হয় সে জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এটি বাস্তবায়নে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করার চিন্তা করছে বিজিবি। ফলে ওই এলাকাগুলোয় বেকারত্ব কিছুটা হলেও নিরসন হবে বলে মনে করছে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীরা।

তাছাড়া আলোকিত সীমান্ত করার আরো কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে বিজিবির। তা হলো রাতে সীমান্ত এলাকায় অপরাধ বা চোরাচালান কমিয়ে আনা এবং উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক সীমান্তের রূপ দেওয়া।

বাংলাদেশের চারদিকে স্থল সীমান্ত রয়েছে ৪ হাজার ৪২৭  কিলোমিটার। এর মধ্যে ভারতের সঙ্গে রয়েছে ৪ হাজার ১১৪ কিলোমিটার। বাকি সীমান্ত মিয়ানমারের সঙ্গে। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত কিছু সীমান্ত এলাকাকে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য পণ্য চোরাচালানের জন্য স্পর্শকাতর জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সেসব জায়গায় অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনতে কাজও শুরু করেছে বিজিবি।

বিজিবি আশা করছে, আলোকিত সীমান্ত প্রকল্প গোটা সীমান্তে বাস্তবায়ন হলে সীমান্তের চেহারা বদলে যাবে। বাংলাদেশের সীমান্ত উন্নত দেশের সীমান্তের মতো হবে। এই বিষয়কে দেশের পর্যটন খাতেও অন্তর্ভূক্ত করা যাবে।

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সীমান্তকে আলোকিত করা। এতে আমাদের সদস্যদের নজরদারি করতে সুবিধা হবে। অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যে প্রজেক্ট নিয়েছি সেটি সোলার লাইটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এ কাজ সম্পন্ন হলে সীমান্তের চেহারা বদলে যাবে। আগামী অর্থবছরে এই প্রকল্পের জন্য সরকারের কাছে আমরা অর্থনৈতিক বরাদ্দ চাইব।’

সীমান্তে অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আবুল হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন সীমান্তে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কিছু করার জন্য। আমিও সে বিষয়ে ভেবেছি। আমরা সেখানে পোল্ট্রিফার্ম বা সবজি খামার করতে পারি। বিজিবির তত্ত্বাবধানে এতে স্থানীয়দেরও সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ জুলাই ২০১৭/নূর/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়