ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবির ভিশন ২০৪১

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৪, ১২ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবির ভিশন ২০৪১

আহমদ নূর : সীমান্ত সুরক্ষায় সবকিছু ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এজন্য বর্তমান সরকারের উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার ভিশনের সঙ্গে মিল রেখে বিজিবিও ঘোষণা করেছে ভিশন- ২০৪১। এই সময়ের মধ্যে সীমান্ত সুরক্ষায় আমূল পারিবর্তন আসবে বলে আশা বিজিবির।

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন মনে করেন ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশর সীমান্ত হবে উন্নত সীমান্তের উদাহরণ।

বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, সক্ষমতা বাড়াতে বর্ডার ফোর্সকে ত্রিমাত্রিক করা হচ্ছে। মূলত ত্রিমাত্রিক ফোর্স বলতে ল্যান্ড ফোর্স, রিভারাইন ফোর্স ও এয়ার ফোর্সকে বোঝায়। বর্ডার গার্ডের বর্তমানে ল্যান্ড ফোর্স রয়েছে। রিভারাইন ফোর্সের জন্য একটি ব্যাটালিয়ন তৈরি করার কথা ভাবছে বিজিবি। তা ছাড়া প্রাথমিকভাবে এয়ার ফোর্স গঠন না করলেও আকাশপথেও সীমান্ত পাহারার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একটি পোর্ট তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাশাপাশি নিজস্ব হেলিকপ্টার কেনার জন্য ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিজিবির একটি দল রাশিয়া সফর করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিজিবির নিজস্ব পাইলট না থাকায় প্রাথমিকভাবে বিমান বাহিনী থেকে পাইলট নিয়ে আসা হবে। বাংলাদেশের বিমান বাহিনীর সদস্যরা রাশিয়ায় তৈরি বিমান ও হেলিকপ্টার চালনায় পারদর্শী। তাই হেলিকপ্টার কেনার জন্য রাশিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

সূত্র আরও জানায়, সীমান্ত রক্ষাকারী উন্নত বাহিনী তৈরিতে বিজিবি সদস্যদের প্রশিক্ষণেও পরিবর্তন আনার চিন্তা রয়েছে বিজিবির। এছাড়া বর্ডার এলাকাকে ডিজিটালাইজ করা হবে। পুরো সীমান্তকে ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হবে। ফলে সীমান্তের সর্বশেষ অবস্থা তাৎক্ষণিকভাবে দেখা যাবে।

বিজিবিকে আধুনিকায়ন করতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সক্ষমতার সঙ্গে তুলনা করে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া উন্নত দেশগুলোর বর্ডার এনফোর্সে যে ধরণের সক্ষমতা থাকে সেগুলো এনালাইসিস করছে বিজিবি। বিজিবি দেখতে চাচ্ছে তাদের বর্তমান অবস্থান কোথায় রয়েছে। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে বিজিবির কোন বিষয়গুলোতে উন্নতি দরকার বা ২০৪১ সালে লক্ষ্য পূরণে আরো কী করতে হবে।

বিজিবির চেয়ে প্রতিবেশী দেশের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) সক্ষমতা বেশি বলে মনে করেন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। তিনি জানান, ভারতের প্রতি ৩ থেকে সাড়ে ৩ কিলোমিটার পর পর একটি করে পোস্ট রয়েছে। সেখান থেকে তারা খুব সহজে বর্ডার মনিটর করতে পারে। তাদের ব্যাটালিয়নের সামর্থ্যও বেশি। তাছাড়া তাদের অফিসার যেমন বেশি তেমনই ফোর্সও বড়। এজন্য তাদের সক্ষমতা বেশি।

তবে বাংলাদেশের সীমান্ত বাহিনী নিয়েও আশাবাদী মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সক্ষমতা অনেক বেশি বাড়বে তবে এটি হবে ধীরে ধীরে।’

আবুল হোসেন বলেন, ‘ধীরে ধীরে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হচ্ছে। আমাদের ফোর্সের বরাদ্দ বাড়ছে। তাই আমরাও উন্নতি করব। আমাদের আগে ফোর্সের সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার। এখন ৫০ হাজারের উপরে রয়েছে। বর্তমানে আরো ১৫ হাজার ফোর্স বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

সূত্র আরো জানিয়েছে, বিজিবি বর্ডার কর্ডন মাইগ্রেশনের চিন্তা করছে। সীমান্ত কে কখন পার হচ্ছে সেটা জানা ও তাকে চিহ্নিত করার জন্য এ চিন্তা করছে বিজিবি। এজন্য থ্রি-আই (ইনফরমেশন, আইডিন্টিফিকেশন ও ইন্টারভেনশন) ফর্মূলায় কাজ করা হবে। সীমান্তের সব জায়গায় টাওয়ার বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

পাশাপাশি বর্ডার জুড়ে ক্যামেরা সংযোজন, স্যাটেলাইট, নাইট ভিশন গগলস, নাইট ভিশন ইনফ্রারেড প্রযুক্তি বসানোর কাজ শুরু করেছে বিজিবি। তাছাড়া সীমান্তে সড়ক যোগাযোগের অবস্থা ভাল না থানায় টহলে সমস্যা হয়। এ জন্য সরকারের কাছে কাঁচা সড়ক চাওয়া হয়েছে। এতে বিজিবি সহজে সীমান্তে টহল দিতে পারবে।

আবুল হোসেন বলেন, ‘এতগুলো কাজ একসঙ্গে করার পুরো সক্ষমতা হয়তো আমাদের নাই। তাই একবারে পুরোটা করতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা যে ট্রেনিং নিয়ে আছি সেই ট্রেনিং নিয়ে ২০৪১ সালে চলবে না। সব ডিজিটালাইজড হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ফোর্সকে ত্রিমাত্রিক করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’





রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ আগস্ট ২০১৭/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়