ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অনুসন্ধানে দুদক

পাসপোর্ট কর্মকর্তার ৫০ কোটি টাকার সম্পদের পাহাড়!

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৮, ১ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাসপোর্ট কর্মকর্তার ৫০ কোটি টাকার সম্পদের পাহাড়!

এম এ রহমান মাসুম : প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইদুল ইসলাম। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে এরইমধ‌্যে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতিবিরোধী রাষ্ট্রীয় সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সাইদুল ইসলাম বর্তমানে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস যাত্রাবাড়ীতে কর্মরত আছেন।

সাইদুল ইসলামের অবৈধ সম্পদের মধ‌্যে রয়েছে- নিজ এলাকা সাঁথিয়ায় ১০ বিঘার পুকুর, কাশিয়ানি বাজারে ভবনসহ ১০ শতাংশ জমি, ২০ বিঘার ওপর ফার্ম, নরসিংদীতে ২৯ ও ৬৫ শতাংশ জায়গার ওপর কারখানা, রাজধানীর উত্তরায় প্লট ও ফ্ল্যাট, বছিলা বেড়িবাঁধের পাশে চন্দ্রিমা হাউজিংয়ে ৫ কাঠার প্লট, শ্যাওড়াপাড়ায় ১৭ কাঠা জায়গা, মোহাম্মাদপুরের ইকবাল রোডে ২ হাজার ২০০ বর্গফুটের ফ্ল‌্যাট ও ধানমন্ডিতে দুটি ফ্ল্যাট ইত‌্যাদি।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আসা ওই অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। দুদকের উপ-পরিচালক সামছুল আলমকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ও সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে দুদকের সচিব ড. শামসুল আরেফিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এ বিষয়ে অবগত নন বলে জানিয়েছেন।

অন‌্যদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে ই-মেইল ও ফোনে বারবার সাইদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।

অভিযোগের বিষয়ে ‍দুদক সূত্রে জানা যায়, সাইদুল ইসলাম বিভিন্ন অফিসে কর্মকত থাকাকালে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি ময়মনসিংহ অফিসে কর্মরত থাকাকালে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্লাংক পাসপোর্ট ও ভুয়া এনওসির মাধ‌্যমে অর্ডিনারি ফি’তে জরুরি পাসপোর্ট ইস্যু করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যা দিয়ে অল্পদিনের মধ‌্যে নিজ এলাকা সাঁথিয়ায় ১০ বিঘার ওপর পুকুর ক্রয়, কাশিয়ানি বাজারে ভবনসহ ১০ শতাংশ জায়গা ক্রয়, ২০ বিঘার ওপর ফার্ম, নরসিংদীতে ২৯ ও ৬৫ শতাংশ জায়গার ওপর কারখানা, উত্তরায় প্লট ও ফ্ল্যাট, বছিলা বেড়িবাঁধের পাশে চন্দ্রিমা হাউজিংয়ে ৫ কাঠার প্লট, শ্যাওড়াপাড়ায় ১৭ কাঠা জায়গা, মোহাম্মাদপুরের ইকবাল রোডে ২ হাজার ২০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডিতে দুটি ফ্ল্যাটের মালিক হন। যা তিনি নামে-বেনামে করেছেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, কারখানা স্থাপনের জন‌্য সাইদুল ইসলাম মেঘনা নদীর তীরে সাত বিঘা জমি কিনেছেন। তার নিজের ও সন্তানের চিকিৎসা চলে সিঙ্গাপুরের ব‌্যয়বহুল হাসপাতালে। যা তার ও পরিবারের পাসপোর্ট দেখলে বেরিয়ে আসবে। বিভিন্ন অফিসে চাকরির সুবাদে তিনি প্রায় ৩০ কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন। এর মধ‌্যে স্ত্রীর নামে রয়েছে ৬০ লাখ টাকা ও প্লট।

অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লা অফিসে কর্মকর্তা থাকাকালে ডিজিএফআই ও এনএসআইর রিপোর্টে তার বিরুদ্ধে দালালের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হায়েছিল। যা তিনি ধামাচাপা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, অভিযোগ আমলে নেওয়ার পরপরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ‌্যে তিনি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহে সরকারি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছেন। নথিপত্র হাতে পেলে তাকে তলব করা হতে পারে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জুলাই ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়