ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ভালো ঋণগ্রহীতাদের প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০১, ৯ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভালো ঋণগ্রহীতাদের প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ

কেএমএ হাসনাত : ঋণগ্রহীতা ভালো হলে তাদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। দেশে ঋণখেলাপির চর্চাকে নিরুৎসাহিত করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রণোদনার অংশ হিসেবে রয়েছে- ব্যাংকের ভালো ঋণগ্রহীতাদের বিশেষ সুদে ঋণ দেওয়া, তাদের নাম ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা, কর রেয়াত সুবিধাসহ ট্যাক্স কার্ড প্রদান।

ভালো ঋণগ্রহীতাদের কীভাবে সুবিধা দেওয়া যায় তা জানার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে মতামত চেয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনাদের ব্যাংকের ভালো ঋণগ্রহীতাদের উৎসাহ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, ব্যাংকের লাখ লাখ ক্ষুদ্র আমানতকারীর আমানত এসব ব্যাংকের মূল চালিকাশক্তি। তাই তাদের প্রণোদনার দেওয়া প্রয়োজন। ভালো ঋণগ্রহীতাদের কীভাবে প্রণোদনা দেওয়া যায় তার একটি সুপারিশ যেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিটি সব রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, বেশিরভাগ ব্যাংক এ বিষয়ে তাদের সুপারিশ ও মতামত আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। কয়েকটি ব্যাংক কয়েকদিনের মধ্যে তাদের মতামত পাঠাবে। এই মতামতের ভিত্তিতে ভালো ঋণগ্রহীতাদের প্রণোদনার ধরন ঠিক করা হবে।

সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে প্রণোদনার বিষয়টি ঠিক করে তা অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে পেশ করা হবে। সবাই শুধু ঋণখেলাপিদের নাম শুনে আসছে। কিন্তু ব্যাংকের অনেক ভালো ঋণগ্রহীতা রয়েছেন, তাদের নাম ক’জন জানেন। এদের সংখ্যাই কিন্তু ব্যাংকিং খাতে বেশি। তাই এসব ভালো ঋণগ্রহীতার নামও আমাদের জানা প্রয়োজন। তাদেরও প্রণোদনা দিতে হবে। তার জন্যই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ভালো ঋণগ্রহীতাদের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনার কথা পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, অনুমতি সাপেক্ষে নামের তালিকা ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা। এদের অপেক্ষাকৃত কম সুদে ঋণ দেওয়া। এসব গ্রহীতার ব্যবসার ক্ষেত্রে কর রেয়াত দেওয়ার জন্য এনবিআরকে অনুরোধ জানানো এবং ভালো গ্রহীতা হিসেবে কার্ড দেওয়া। একই সঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভালো ঋণগ্রহীতাদের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা হতে পারে।

রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ এখন ৪৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ব্যাংকগুলোর নিজস্ব সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর ডিসেম্বর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে মোট খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ২২২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর আগে সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ৩৪৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ কমেছে ১২৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

কিন্তু ব্যাংকগুলো এই খেলাপি ঋণের বিপরীতে বিপুল অঙ্কের ঋণ দিয়েছে যার বেশিরভাগই ভালো অবস্থায় রয়েছে। এই ঋণ আবার নিয়মিত পরিশোধও করা হচ্ছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মার্চ ২০১৯/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়