ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে নমনীয় পদক্ষেপ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৩, ১০ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে নমনীয় পদক্ষেপ

কেএমএ হাসনাত : উন্নয়ন প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে আরো নমনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এখন থেকে উন্নয়ন প্রকল্পের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য আর অর্থ বিভাগের অনুমতির প্রয়োজন পড়বে না। সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকরা এই অর্থ ছাড় করাতে পারবেন।

কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ছাড় করা হয় চার কিস্তিতে। যার জন্য অর্থ বিভাগ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ের ক্ষেত্রে অধিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য এই বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়।

কাজে গতি আনার জন্য চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল প্রকল্প পরিচালকদের (পিডি)। আর তৃতীয় কিস্তির অর্থ ছাড় করতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হতো। কিন্তু এরপর পিডিরা অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি কাটছে না এবং টাকা ছাড়ের ক্ষেত্রে তাদের নানা ধরনের হয়রানির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি অর্থ বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রকল্পের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের ক্ষমতা পিডিদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে।

নতুন এই নির্দেশনার ফলে এখন থেকে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের কোষাগার থেকে বরাদ্দকৃত অর্থের পুরো অংশ প্রকল্প পরিচালকরাই ছাড় করতে পারবেন। এই জন্য অর্থবিভাগ কিংবা প্রকল্পের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে না। তবে প্রকল্পের শুল্ক, ভ্যাট ও ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয়ে যে অর্থের প্রয়োজন হবে তা প্রকল্প পরিচালকরা ছাড় করতে পারবেন না। আর প্রকল্প সাহায্যের বর্তমান যে নিয়ম রয়েছে তা বহাল থাকবে। অর্থাৎ, ঋণ ও অনুদানদাতা উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শর্ত এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে অর্থ ছাড় হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের সংশোধিত কর্তৃত্ব অনুযায়ী মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/পরিদপ্তর/অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন অনুমোদিত প্রকল্পের জিওবি অংশের বরাদ্দের অর্থ ছাড়ের ক্ষেত্রে অর্থবিভাগ ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় অথবা বিভাগের কোনো সম্মতির প্রয়োজন হবে না। ওই অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছাড় হয়েছে বলে গণ্য হবে।

সূত্র জানায়, সাধারণত সরকার বাজেটে উন্নয়ন ব্যয়ের যে পরিকল্পনা করে, তা প্রকল্পভিত্তিক হয়ে থাকে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে একজন করে প্রকল্প পরিচালক থাকেন। যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে একই ব্যক্তি একাধিক প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। প্রকল্পগুলোর কোন খাতে কত খরচ হবে তা অনুমোদনের সময়ই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

দরপত্র আহ্বান করে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে প্রকল্পগুলোর প্রয়োজনীয় মালপত্র কেনাকাটা, অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ করা হয়। সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয় বরাদ্দ করা অর্থ ছাড়ের অনুমোদন দিয়ে থাকে। এর সঙ্গে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ও সম্পৃক্ত। একটি অর্থবছরকে চারটি ভাগ করে চার কিস্তিতে অর্থ ছাড় করা হয়। এসব কেনাকাটা, বিল-ভাউচারে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে অর্থবিভাগের অনুমোদনক্রমে অর্থ ছাড় করার নিয়ম রয়েছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করেন প্রকল্প পরিচালক। এখন থেকে মন্ত্রণালয়ের কোনোরকম অনুমোদন ছাড়াই অর্থ ছাড় ও ব্যবহার করতে পারবেন প্রকল্প পরিচালকরা।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই প্রজ্ঞাপনের ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়তো বাড়বে কিন্তু অর্থের অপচয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেছে। কারণ, প্রকল্পের চতুর্থ কিস্তির ছাড়ের আগে আমরা প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে একটা মূল্যায়ন করতাম। সেসময় অনেক অনিয়ম ধরা পড়তো। নতুন প্রজ্ঞাপনের ফলে এখন থেকে প্রকল্পের মূল্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ এপ্রিল ২০১৯/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়