ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

উন্মাতাল প্যারিস, উন্মাতাল জাগরেব

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ১৭ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
উন্মাতাল প্যারিস, উন্মাতাল জাগরেব

ক্রীড়া ডেস্ক: দুই দেশের দুই রাজধানীতে উৎসবের হাজারো রঙ। একদল চ্যাম্পিয়ন, আরেক দল রানার্সআপ।

কিন্তু দেখে বোঝার উপায় ছিল না কোন দল চ্যাম্পিয়ন, কোন দল রানার্সআপ! হ্যাঁ একটা বিষয় পার্থক্য করেছিল। ‘ক্রাইস্ট দ্য রিদিমার’ যাদের হাতে তারাই চ্যাম্পিয়ন। সেটা প্যারিসে গিয়েছে। কিন্তু জাগরেব পেয়েছে অনেক কিছু। ফ্রান্স বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি জিতলেও ক্রোয়েশিয়া জিতেছে হৃদয়।



চ্যাম্পিয়ন তাহলে দুই দলই! বাঁধনহারা উৎসব সেই কথাই বলছিল। তাইতো বীরদের বরণ করে নিতে উন্মাতাল প্যারিস, উন্মাতাল জাগরেব। মস্কোর ফাইনালের পর দুই দলই সোমবার বাড়ি ফিরেছে। বিমানবন্দর থেকেই তাদের বরণ করে নেয় হাজারো সমর্থকরা। দুই প্রধান শহরে ছিল উৎসবের আমেজ।

প্যারিসে উৎসব শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ জেতার পরপরই। ২০ বছর পর এমন উৎসবের সুযোগ পেল ফরাসিরা। গ্রিজমান, পগবাদের বহনকারী বিমান এয়ার ফ্রান্স স্থানীয় সময় বিকেলে প্যারিসে অবতরণ করে। সেখান থেকেই শুরু হয় বীরদের সংবর্ধনা। দমকল বাহিনী জলকামানের রংধনু বানিয়ে গার্ড অব অনার দেয় চ্যাম্পিয়নদের।



এরপর খোলা বাসে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নগরীর প্রতীক আইফেল টাওয়ারের নিচে। প্যারিসের রাস্তায় ছিল সমর্থকদের ঢল। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না রাস্তায়। বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করেছিল সরকার। সেখানেও ছিল ঢল। কেউ নেচে গেয়ে, কেউবা জোরে গাড়ি চালিয়ে আবার কেউ উৎসব করেছে পানশালায়। তবে এ উৎসবের মধ্যেও রয়েছে মন খারাপের খবর। উৎসবের আমেজে ঝরে গেছে দুটি তাজা প্রাণ। পুলিশকে নামাতে হয়েছে জলকামান আর টিয়ার শেল। নিয়মভঙ্গের দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় তিনশ সমর্থক।



অন্যদিকে জাগরেবে এমন কিছু অবশ্য হয়নি। লুকা মডরিচ, ইভান পেরিসিচরা বিমান বন্দর থেকে নামার পরপরই পেয়েছেন গার্ড অব অনার। এরপর বিমান বন্দর থেকে খোলা বাসে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় জাগরের জেলাচিচ স্কয়ারে। সেখানে অস্থায়ী মঞ্চে লাখ লাখ মানুষের সামনে দেওয়া হয় সংববর্ধনা।

পথে পথে ক্রোয়াটদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। খেলোয়াড়রাও হাত নেড়ে অভিনন্দনের জবাব দিয়েছেন। উৎসব দেখে বোঝার উপায় ছিল না ঠিক আগের রাতেই তারা হারিয়েছে বিশ্বকাপের ট্রফি। হয়তো হারিয়েছে কিন্তু তাতেও কোনো আক্ষেপ নেই।



লুকা মরডিচ যেমনটা বলেছিলেন,‘আমরা বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের কাছাকাছি ছিলাম। কিন্তু হতে হতেও হলো না। দীর্ঘসময় এই ম্যাচটি আমার মস্তিস্কে থাকবে। তবুও ক্রোয়েশিয়া আমাদের নিয়ে গর্বিত হতে পারে। আমরা বীরের মতো করেই লড়াই করেছি। আমরা জিততে সামর্থ্যের সবকুটু দিয়েছি। কিন্তু ভাগ্য আজ আমাদের পক্ষে ছিল না। আমরা বিশ্বকাপের প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই সেরা দল ছিলাম। আমরা সেভাবেই খেলেছি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে আজ আমাদের পক্ষে কিছুই আসেনি।  দুটি ‘বাজে’ গোল আমাদের বড় ক্ষতি করেছে। আমরা টুর্নামেন্টের সাফল্য নিয়ে গর্বিত। আমরা ভালো খেলেছি। সত্যি বলতে ক্রোয়েশিয়ার জন্য এটা দারুণ একটি টুর্নামেন্ট গেল। এজন্যই বলছি ক্রোয়েশিয়া গর্বিত হতে পারে।’



রূপকথার মতো ফাইনালে ওঠার তৃপ্তি ক্রোয়েশিয়ার সবার। এটাই বিশ্বকাপে তাদের সবথেকে বড় সাফল্য। এ সাফল্যর জন্য সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করতে হয়েছে। তাইতো অনুশোচনার কিছু দেখছেন না ক্রোয়াটরা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুলাই ২০১৮/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়