ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় রোবট সেনাবাহিনী!

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৫, ৯ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় রোবট সেনাবাহিনী!

প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : এআই অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) গবেষকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, মানবজাতি ধ্বংসে সক্ষম এমন ধরনের রোবট সেনাবাহিনী গোপনে তৈরি করছে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়।

শীর্ষ এআই গবেষকদের দাবি, কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (কাইস্ট) এআই প্রযুক্তি বিষয়ে অস্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থা হানহা সিস্টেমের সঙ্গে কাজ করছে।

কাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে বয়কট করে ৩০টি দেশের পঞ্চাশ জনের বেশি এআই গবেষক একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং এআই প্রযুক্তি অপব্যবহারের পরিকল্পনার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

গবেষকরা এটিকে প্যানডোরার বাক্স হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তাদের মতে, যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি এবং স্বয়ংক্রিয় ধ্বংসাত্মক রোবট ব্যবহার হওয়া উচিত নয়।

ধ্বংসাত্মক উদ্দেশ্যে এআই রোবট তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে গবেষকরা উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি, এ ধরনের অস্ত্র তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে পারে বলেও দাবী করেছেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার কাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি এআই অস্ত্র গবেষণাগার চালু করার পর, বিশ্বের খ্যাতনামা ৫৭ জন এআই গবেষক একজোট হয়ে এই কর্মকান্ডের নিন্দা জানিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষস্থানীয় অস্ত্র কোম্পানি হানহা সিস্টেমের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গবেষণাগারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

গবেষকদের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এই প্যানাডোরার বাক্স বন্ধ করাটা কঠিন হবে যদি তা খোলা হয়।’

সিডনির নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টোবি ওয়ালস লিখিত চিঠিটি কাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি অধ্যাপক সুং-চুল শিন বরাবর পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘এটা খুব দুঃখজনক যে কাইস্টের মতো মর্যাদাপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয় অস্ত্রের প্রতিযোগিতার গতি বাড়ানোয় শামিল হয়েছে। তাই আমরা প্রকাশ্যে ঘোষণা করছি যে, আমরা কাইস্টের সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতামূলক কার্যক্রম বয়টক করবো যতক্ষণ না পর্যন্ত কাইস্ট সভাপতি আশ্বাস দিচ্ছেন যে, এই সেন্টারে স্বনিয়ন্ত্রিত অস্ত্র গবেষণা বন্ধ করা হবে।’

বয়কটের কারণ এবং প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের ব্যাপক নিন্দা করা হয়েছে এআই অস্ত্রের সম্ভাবনার উদ্বেগ থেকে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘এআই প্রযুক্তিতে উন্নত করা হলে, যুদ্ধের তৃতীয় বিপ্লব হয়ে উঠতে পারে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। এসব অস্ত্র দ্রুত যুদ্ধ করতে অনুমতি দেবে এবং আগের চেয়ে আরো বড় মাত্রায়। এমনকি সন্ত্রাসের অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।’

কাইস্টের সভাপতি অধ্যাপক সুং-চুল শিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘কাইস্টের কার্যক্রমে এআই প্রযুক্তির ধ্বংসাত্মক রোবট তৈরির কোনো প্রক্রিয়া নেই। বেশ স্পষ্টভাবেই বলতে চাই, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রাণঘাতী স্বায়ত্তশাসিত অস্ত্র ব্যবস্থা বা হত্যাকারী রোবট বিকাশের কোনো ইচ্ছা নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘একটি অ্যাকাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা মানবাধিকার ও নৈতিক মানকে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় মূল্যায়ন করি। কাইস্টে সবসময়ই ভালো পরিষেবার গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, স্বশাসিত অস্ত্রসহ মানবতা বিরোধী কোনো ধরনের গবেষণা কার্যক্রম কাইস্ট কখনো পরিচালনা করবে না।’

অধ্যাপক টোবি ওয়ালশ সিএনএনকে জানিয়েছেন, শিনের বেশিরভাগ মন্তব্যে তিনি সন্তুষ্ট। তবে বয়কট বজায় থাকবে কিনা তা এখনো তিনি জানাননি। টোবি বলেন, আমার এখনো কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে তবে তারা সঠিকভাবেই সাড়া দিয়েছে।’

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ এপ্রিল ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়