পর্যটকদের আকর্ষণ সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান
সরকার নোহাশ || রাইজিংবিডি.কম
সরকার নোহাশ : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেট যেন এক রূপকথার শহর। শুধু এই শহর নয়, এই বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলা অপরূপ সৌন্দর্যময়। এখানে রয়েছে চোখ জুড়ানো সব দর্শনীয় জায়গা। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এর অন্যতম।
এই উদ্যানে গেলে মনে হয় যেন গাছের মেলা বসেছে। চারপাশে শুধু গাছ আর গাছ! এছাড়াও ভিতরে রয়েছে ১৯৭টিরও বেশি প্রাণী। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সকালের দিকে উদ্যানে গেলে অনেক ধরনের বন্য প্রাণীর দেখা পাওয়া যায়। সম্প্রতি উদ্যান পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ভিতরে দর্শনার্থীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সেখানে উঠে উদ্যানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
সাতছড়ির ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, এর প্রাচীন নাম ‘রঘুনন্দন হিল রিজার্ভ ফরেস্ট’। ২০০৫ সালে এর নতুন নামকরণ হয় সাতছড়ি। প্রায় ২৪৩ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত সাতছড়ি মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে সবুজ বন আর পাখির কলতানে।
প্রতিদিনই দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে ছুটে আসে মানুষ একটু বিশ্রামের খোঁজে। সাতছড়ি তাদের আপন করে নেয় তার সৌন্দর্য দিয়ে। উদ্যানের কাছাকাছি নয়টি চা বাগান রয়েছে। বাগানের ভিতর দিয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো পর্যটকদের মুগ্ধ করে সব সময়। এই উদ্যানে রয়েছে বানর, কুলু বানর, মায়া হরিণ, খিদির শূকর, বন্য শূকর, বেজি, গন্ধ গোকুল, বনবিড়াল, মেছো বাঘ, কটকটি ব্যাঙ, গেছো ব্যাঙ, গিরগিটি, বন মোরগ, পেঁচা, সুই চোরার মতো প্রাণী।
উদ্যানের অভ্যন্তরেই টিপরা পাড়া। পাড়ায় ২৪টি পরিবার বাস করে। তাদের বৈচিত্রময় জীবনধারা ও ঘরবাড়ি, সংস্কৃতি পর্যটকদের মন ভরিয়ে দেয়। উদ্যানের ভিতরে হাঁটতে হাঁটতে শোনা যায় নানা রঙের পাখির কলরব। খেলার জায়গা, পিকনিকের আলাদা স্থান থাকার কারণে পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন। পর্যটকদের রাতে থাকার জন্য রয়েছে রেস্ট হাউস।
সাতছড়িতে ঘুরতে আসা স্থানীয় শিক্ষার্থী শুভ বলেন, ‘আমাদের নিজের এলাকায় এতো সুন্দর জায়গা সত্যিই আনন্দের। আমরা এখানে এসে ঘুরছি, পাখি দেখছি, নানা প্রজাতির গাছ দেখছি। অনেক গাছ আছে যেগুলো এখানে না এলে চিনতামই না।’
সরকারি কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ‘আমি মা-বাবা, ভাই-বোনদের নিয়ে এসেছি একটু অবসর সময় কাটাতে। খুব সুন্দর জায়গা! আমরা অনেক কিছুই নতুন করে জানত পারলাম এখানে এসে।’
সাতছড়ি উদ্যানে ট্যুরিস্ট গাইড রয়েছে। পর্যটকরা চাইলে তাদের সহযোগিতায় বনের গহীনে যেতে পারবেন। উদ্যান অনেক বড় হওয়ায় হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই গাইড সঙ্গে নেওয়াই ভালো। আরো সহযোগিতার জন্য রয়েছে তথ্যসেবা কেন্দ্র। সেখান থেকে বনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানা যাবে।
ঢাকা থেকে সিলেটগামী ট্রেন বা বাসে যাওয়া যাবে। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে নেমে অটোরিকশায় নতুন ব্রিজ। সেখান থেকে সিএনজিতে সাতছড়ি উদ্যানে যাওয়া যাবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন