ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘দেশীয় পণ্যের প্রতি ভালোবাসার প্রতিদান পেয়েছি’

জাকির হুসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ৭ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘দেশীয় পণ্যের প্রতি ভালোবাসার প্রতিদান পেয়েছি’

লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচারের কেনা ওয়ালটন পণ্যসহ আনোয়ারা খান ও তার স্বামী

জাকির হুসাইন : ‘এ দেশে জন্ম আমাদের। আমরা বাংলাদেশের আলো-বাতাসে বড় হয়েছি। দেশকে ভালোবাসা তাই আমাদের সবার কর্তব্য। এ ভালোবাসার টানে দেশের টাকা দেশে রাখতে দেশেই উৎপাদিত ওয়ালটন ফ্রিজ কিনেছি। কী সৌভাগ্য আমার! দেশীয় পণ্যকে ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে এক লাখ টাকার পুরস্কারও পেলাম।’

কথাগুলো আইনজীবী আনোয়ারা খানের। গত ২৬ ডিসেম্বর যশোর আর এন রোডের ওয়ালটন প্লাজা থেকে সাড়ে ১৭ সিএফটির একটি নন ফস্ট ফ্রিজ কিনে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পান তিনি। এ নিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। তখনই এসব কথাগুলো বলেন তিনি।

ওয়ালটনের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে রাইজিংবিডিকে আইনজীবী আনোয়ারা খান বলেন, ‘মন থেকে কোনো বিষয় বা কোনো কিছুকে ভালোবাসলে তার প্রতিদান কোনো না কোনোভাবে মানুষ পায়। আমি দেশ ও দেশের পণ্যকে মনে প্রাণে ভালোবাসি। যার প্রতিদান দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন আমাকে দিয়েছে। সত্যিই আমি ভাগ্যবানদের মধ্যে একজন। তা না হলে এক লাখ টাকার পুরস্কার পেতাম না।’

আনোয়ারা খানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি যশোর জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন। স্বামীর সঙ্গে সদর থানার ঘোপ জেল রোডে থাকেন। তবে তাদের স্থায়ী বাড়ি টাঙ্গাইলের থানা পাড়ায়। স্বামী মো. শাহজাহান খান ১৯৭৮ সাল থেকে যশোরে ব্যবসা করেছেন। সেখানে জায়গা কিনে নিজেরাই বাড়ি করেছেন। বয়স বাড়ার কারণে স্বামী ব্যবসা গুঁটিয়ে নিলেও তিনি আইন পেশায় যুক্ত আছেন। তাদের দুই ছেলে। চাকরির কারণে দুইজনই পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। 

আনোয়ারা খান বলেন, ‘বাড়িতে কেবল আমরা স্বামী-স্ত্রী দুইজন থাকি। বাসায় কাজের লোকও নাই। আমি সব সময় ওকালতির কাজে ব্যস্ত থাকি। বাসায় সব জিনিসই আছে। ফ্রিজও ছিল। তবে আগের ফ্রিজটি একটু সমস্যা দেখা দেয়। ফ্রিজটি ছিল একটি বিদেশি কোম্পানির। আসলে আমাদের বাসার সব ইলেকট্রনিক্স পণ্যই আগে বিদেশি কোম্পানির ছিল। তবে যেদিন থেকে শুনেছি এ ধরনের পণ্য দেশেই তৈরি হচ্ছে। তাও আবার আমাদের নিজেদের জেলার মানুষের দ্বারা। সেদিন থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এখন থেকে দেশীয় কোম্পানির পণ্য ব্যবহার করব। ভালো হোক বা মন্দ হোক নিজেদের দেশে তৈরি পণ্য ব্যবহার করব। এতে দেশের টাকা দেশেই থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি কল্পনাই করতে পারিনি শুরুতেই কোম্পানিটি এত ভালো পণ্য তৈরি করতে পারবে। এ পর্যন্ত ওয়ালটনের অনেক পণ্য ব্যবহার করছি। ভালো সার্ভিস পাচ্ছি। চার বছর আগে একটি এলইডি টিভি কিনেছিলাম। প্রথম দিনের মতো এখনো ঝকঝকে ছবি আসে। ওয়ালটন পণ্যের সার্ভিসে আমি সন্তুষ্ট। যে কারণে নতুন ফ্রিজ কেনার সময় ওয়ালটন কোম্পানি থেকে কেনার পরিকল্পনা করি।’

আনোয়ারা বলেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর যশোর আর এন রোডের ওয়ালটন প্লাজায় যাই। অনেক যাচাই-বাছাই করে সাড়ে ১৭ সিএফটি সাইজের নন ফস্ট ফ্রিজটি পছন্দ করি। দাম পড়ে ৩৪ হাজার ৮৬৮ টাকা। শোরুমের কর্মকর্তাদের পরামর্শে মোবাইল নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করি। এর কিছুক্ষণ পরেই আমার মোবাইলে একটি এসএমএস আসে। সেই মেসেজেই লেখা ছিল আমরা এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছি। বিষয়টি কী জানতে চাইলে ওয়ালটন কর্মকর্তারা অফারের কথা ও পুরস্কারের কথা জানান। পরে বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত হই। তখন আমাদের আনন্দ দেখে কে!’

 


আনোয়ারা খান ও তার স্বামীর হাতে ওয়ালটনের লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য পণ্য তুলে দেওয়া হচ্ছে

 

তিনি বলেন, ‘এক লাখ টাকা হোক বা এক টাকা হোক, পুরস্কার সব সময় পুরস্কারই। আগে কখনো আমরা এমন পুরস্কার পাইনি। আমাদের এ প্রাপ্তিতে আমাদের ছেলে ও ছেলের বউয়েরা, আত্মীয় স্বজন এমনকি পাড়া প্রতিবেশিরাও দারুণ খুশি। তবে বেশি খুশি আমি ও আমার স্বামী।’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন এমন অফার দিচ্ছে তা আগে থেকে জানতাম না। আমরা শুধু দেশকে ভালোবেসে দেশীয় পণ্য ব্যবহার করতে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনতে এসেছিলাম। আর দেশ ও দেশীয় পণ্যের ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে এক লাখ টাকার পুরস্কার পেলাম। এর থেকে ভালো খবর আর হতে পারে না। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উপহার পাওয়ার বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।’

ক্যাশ ভাউচারের টাকা দিয়ে কী কী পণ্য কিনলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুরস্কারের এ টাকা দিয়ে একটি ডিপ ফ্রিজ, একটি ওয়াশিং মেশিন, একটি এলইডি টিভি ও একটি মোবাইল ফোনসহ মোট ৭টি আইটেমের পণ্য নিয়েছি। এতে এক লাখ টাকার চেয়ে আরো ৫১০ টাকা বেশি হয়। যা সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধ করি।’

তিনি জানান, এসব পণ্যের মধ্যে এক ছেলের বাসায় একটি ফ্রিজ এবং অন্য ছেলের বাসায় একটি টেলিভিশন উপহার হিসেবে দেবেন। বাকিগুলো নিজেরা ব্যবহার করবেন।

ওয়ালটন পণ্যের দাম, মান ও গুণাগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই ওয়ালটন পণ্য ব্যবহার করি। এখন বাসার প্রায় সব পণ্যই ওয়ালটনের। সেগুলোর সার্ভিস খুবই ভালো। আমি মনে করি খুব অল্প সময়ে ওয়ালটন অনেক দূর এগিয়েছে। ওয়ালটনের মতো সব খাতে দেশীয় কোম্পানি উৎপাদনে এলে দেশ থেকে বিদেশি কোম্পানি বিতাড়িত হবে। আমি সেই দিনটি দেখে যেতে চাই। পরিশেষে, আমি ওয়ালটনের সফলতা কামনা করছি।’

উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জানুয়ারি ২০১৮/অগাস্টিন সুজন/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়