আমের নাম ‘নাগ ফজলি'
অরিন্দম মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

আমের নাম ‘নাগ ফজলি'। মিঠা স্বাদের আমটি খুবই জনপ্রিয়। গাছ পাকা নাগ ফজলির ঘ্রাণ জন্ম দেয় অসাধারণ এক অনুভূতির।
এ আমের আরেকটি বিশেষত্ব একটু শক্ত হওয়ার কারণে পচে কম। গাছ থেকে নামানো নাগ ফজলি দীর্ঘদিন ধরে ঘরে রেখে খাওয়া যায়। প্রতিটি আম কেটে কেটে পিস পিস করে খাওয়ার মজাটাই আলাদা।
নাগ ফজলি নামটি অনেকের কাছে অপরিচিত। ইদানিং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে এর চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলেছে। এ আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব। একটু নজর দিলে সরকার এ আম থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, নাগ ফজলি স্বাদেগুণে সকল আমের রাজা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়ে নাগ ফজলি আমের বিপণন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলায় প্রায় ৬৭০ হেক্টর জমিতে ছোট-বড়ো আমের বাগান গড়ে উঠেছে। এ বছর উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে আট হাজার ৪০ মেট্রিক টন।
ধামইরহাট উপজেলায় গ্রামের মেঠোপথ আর অলিগলিতে তাকালেই চোখে পড়বে শত শত বিঘা জমিতে গড়ে উঠেছে নানান জাতের আমের বাগান। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে অনেক আম ঝরে পড়লেও এখনো গাছের ডালে ডালে সবুজ পাতার আড়ালে উঁকি মারে অসংখ্য নাগ ফজলি।
গত মঙ্গলবার (৯ জুন) কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজার উপস্থিতিতে উপজেলার (দেওয়ান পাড়া) রামরামপুর এলাকায় আম চাষি মিলন দেওয়ান ও রতন দেওয়ানের আম বাগান থেকে নামানো নাগ ফজলি আমের বিপণন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আসাদুজ্জামান, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রেজাউল করিম, উপজেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি আবু মুছা স্বপন, আম ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ, আজমত আলী, খামার বাড়ির সত্বাধিকারী রতন ।
আম ক্রেতা আব্দুল আজিজ জানান, তিনি প্রতি বছর ২০০ থেকে ২৫০ মন আম রাজধানী ঢাকায় বিক্রয় করেন। তিনি নাগ ফজলি, রুপালি, লেংড়া, বারি ফোর ও খিরসাপাতি আম কিনে ঢাকার পাটুয়াটুলি এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিজে পরিবহন করে তা পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করেন। আম বিক্রি করে তিনি প্রতি সিজিনে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, নাগ ফজলি অত্যন্ত সুমিষ্ট ও আগাম জাত। আকারে ফজলির আমের মতো হলেও নিচের দিকে দেখতে একটু নাগ আকৃতির। স্বাদ, গন্ধ ও মিষ্টি স্বাদ মিলিয়ে অন্যরকম একটি আম। আকারে লম্বাটে, পরিপক্ক অবস্থায় ৩০০-৪০০ গ্রাম হয়। এ আম ফজলি আমের চেয়ে ২৫-৩০ দিন আগে পাকে। দেখতেও পাতলা। মিষ্টির দিক থেকে এ আমের সাথে হাড়িভাংগার তুলনা করা যায়। নাগ ফজলি শুধুমাত্র নওগাঁ ও জয়পুরহাট জেলায় পাওয়া যায়।
ধামইরহাট (নওগাঁ)/অরিন্দম/টিপু
রাইজিংবিডি.কম